সময় এখন ডেস্ক:
বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ভালবেসে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়াই ছিলো রেমন তালুকদার কালুর অপরাধ। এই কারনে তার কাছে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা।
সেই চাঁদা দিতে না পারায় আওয়ামী লীগ কর্মী রেমনকে তুলে নিয়ে তার ডান হাত কে’টে নেয় তারা। তাদের বিরু’দ্ধে মামলা করে ১৫ বছরেও কোন বিচার পায়নি মুজিব প্রেমিক রেমন। চিরদিনের জন্য হাত হা’রিয়ে রেমন পরিবার পরিজন নিয়ে এখন মানবে’তর জীবন যাপন করছেন।
বরিশাল জেলার গৌরনদী উপজেলার চন্দ্রহার গ্রামের বাসিন্দা রেমন তালুকদার কালু (৪৫) বলেন, নৌকায় ভোট দেয়ার অপরাধে ২০০১ সালের নির্বাচনের পর তার কাছে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতের ক্যাডাররা। সেই টাকা দিতে না পারায় হুম’কির কারনে দীর্ঘদিন নিজ এলাকা ছেড়ে তিনি পালিয়ে বেড়ান।
অবশেষে মায়ের অ’সুস্থতার খবর পেয়ে ২০০৪ সালে গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসেন। ওই বছরের ৪ এপ্রিল দুপুরে তিনি মায়ের জন্য ও’ষুধ কিনতে চন্দ্রহার বাজারে যান। খবর পেয়ে দাবিকৃত পথিমধ্যে রেমনকে অ’স্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে বিএনপি জামায়াতের ক্যাডাররা পার্শ্ববর্তী নওপাড়া গ্রামের হাতেম মিলিটারীর শুন্য ভিটায় নিয়ে যায়।
১৫ বছর আগের সেই ঘটনার বর্ণায় কান্না’জড়িত কণ্ঠে রেমন বলেন, মায়ের জন্য ও’ষুধ কিনতে যাওয়ার পথে আমাকে ওরা তুলে নিয়ে যায়। প্রথমে আমার কাছে জানতে চায় ১ লাখ টাকা কখন দিবো। আমি তাদের হাত পায়ে ধরে কান্না-কাটি করে বলেছিলাম, ভাই আমার কী অপরাধ, আমিতো শুধু নৌকায় ভোট দিয়েছি, আর তো কোন অপরাধ করিনি। ১ লাখ টাকা আমি কোথা থেকে দিবো।
রেমন আরও বলেন, অনেক অনুনয় করেও সেইদিনের বিএনপি ও জামায়াতের ক্যাডারদের মন গলাতে পারিনি। তারা মাটির সাথে আমাকে ঠেসে ধরে যে হাত দিয়ে নৌকায় ভোট দিয়েছি, সেই ডান হাত চা’পাতি দিয়ে কু’পিয়ে উল্লাস করে কব্জিটা নিয়ে যায়।
পরবর্তীতে স্থানীয়রা মু’মূর্ষ অবস্থায় আমাকে উদ্ধার করে প্রথমে গৌরনদী ও পরে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করেন। তৎকালীন সময়ে সেই ক্যাডারদের মদদ’দাতা বিএনপির নেতারা হাসপাতাল থেকেও আমার নাম কে’টে দেয়। এমনকি থানায় মামলা পর্যন্ত করতে দেয়া হয়নি। পরবর্তীতে আমি বিচার দাবি করে বরিশাল আদালতে মামলা করি। সে মামলা এখনও চলমান রয়েছে।
চিরদিনের জন্য প’ঙ্গুত্ববরণ করা আওয়ামী লীগ কর্মী রেমন তালুকদার কালু বলেন, যে দলের সমর্থক হওয়ায় বিএনপি ও জামায়াতের ক্যাডাররা আমরা ডান হাত কে’টে নিয়েছে, সেই দল আওয়ামী লীগ টানা ৩ বার ক্ষমতায় থাকলেও আজ পর্যন্ত দল থেকে কোন সাহায্য সহযোগীতা পাইনি। পরিবার পরিজন নিয়ে আমি মানবে’তর জীবন যাপন করছি। এমনকি বিচারও পাইনি।
রেমন এই ঘটনার সুবিচার ও পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকার অবলম্বন চান। এজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদয় দৃষ্টি কামনা করেছেন।
1.2K