সময় এখন ডেস্ক:
যেখানে-সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলে পরিবেশ দূষণ’কারীদের নি’র্লজ্জ বলেছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
সোমবার মহাখালীর টিঅ্যান্ডটি মাঠে সারা দেশ থেকে কুড়িয়ে আনা ৩০ লাখ প’রিত্যক্ত বোতল নিয়ে আয়োজিত এক ব্যতিক্রমী প্রদর্শনীর সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি আ’ক্ষেপ করে বলেন, বিদেশে সবাই ময়লা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলেন। কিন্তু দেশে যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলে দেশকে অ-পরিচ্ছন্ন করেন।
আমরা যারা দামী দামী গাড়িতে চড়ি তারাই আবার গাড়ির গ্লাস খুলে রাস্তায় বোতল, টিস্যু, প্যাকেট, পলিথিন ফেলি শহরকে ডাস্টবিন মনে করে, আর এর মা’শুল দিতে হয় গোটা নগরবাসীকে।
যে দেশের ৩০ লক্ষ শহীদ রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে, যে মাটিতে মুক্তিযু’দ্ধের শহীদেরা ঘুমিয়ে আছেন, যে মাটিতে জাতির পিতা এবং তার পরিবারের সদস্যরা ঘুমিয়ে আছেন, সেই মাটিতে ময়লা ফেলা নি’র্লজ্জ বলেই সম্ভব। আমরা তাদেরকে ধি’ক্কার জানাই।
প্লাস্টিক ব’র্জ্যের ভ’য়াবহতা তুলে ধরে মেয়র বলেন, একটি প্লাস্টিক বোতল মাটিতে মিশে যেতে প্রায় ৪৫০ বছর লাগে। এখন পৃথিবীতে প্রায় ৯.৬ বিলিয়ন টন প্লাস্টিক ব’র্জ্য আছে, যার মাত্র ১০ শতাংশ পুনর্ব্যবহারযোগ্য।
ঢাকা শহরে দৈনিক সাড়ে ৩ হাজার টন ব’র্জ্য উৎপন্ন হয়, যা ২০২১ সালে ৫ হাজার টনে উন্নীত হবে বলে জানান আতিকুল ইসলাম। তাই এখনই সবাইকে এ বিষয়ে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বিডিক্লিন-এর প্রধান সমন্বয়ক ফরিদ উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল হাই, কাউন্সিলর মো. নাছির, দেওয়ান মান্নান।
আবারও মনোনয়ন পাবেন- আত্মবিশ্বাসী ঢাকার দুই মেয়রই
ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের আসন্ন নির্বাচনে আবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন বলে আশাবাদী দুই মেয়র।
আগামী ৩০ জানুয়ারি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণের দিন রেখে গতকাল রবিবার তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।
সোমবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ‘বীর মুক্তিযো’দ্ধা, যু’দ্ধাহত মুক্তিযো’দ্ধা ও শহীদ মুক্তিযো’দ্ধা পরিবারবর্গের সংবর্ধনা ও পুনর্মিলনী’ অনুষ্ঠানে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, তিনি সময় ন’ষ্ট করেননি। এজন্য আবারও মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে তিনি আত্মবিশ্বাসী।
বি’ভক্তির পর ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল দুই সিটিতে একযোগে নির্বাচন হয়। নির্দলীয় সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে উত্তরে আনিসুল হক এবং দক্ষিণে সাঈদ খোকন মেয়র নির্বাচিত হন।
আনিসুল হকের মৃ’ত্যুর পর বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের ব’র্জনের মধ্যে উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম মেয়র নির্বাচিত হন। উপ-নির্বাচনের আগে আইন সংশোধন হওয়ায় সেই নির্বাচনটি হয় দলীয় প্রতীকে।
মেয়র আতিক বলেন, দায়িত্ব পাওয়ার পর যতটুকু সময় পেয়েছি আমি চেষ্টা করেছি সবাইকে নিয়ে কাজ করতে এবং সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি। আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি বড় দল, একটি ঐতিহ্যবাহী দল, দেশকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে এ দল। তারা আমার কাজের মূল্যায়ন করবে। তাই আমার প্রত্যাশা আমি আওয়ামী লীগ থেকে আবারও নমিনেশন পাব।
পুনরায় নির্বাচিত হলে রাজধানীর যানজট সমস্যাকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে কাজ করবেন বলে জানান পোশাক ব্যবসায়ী আতিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, জয়ী হলে ৯ মাস সময়কালের উন্নয়নের ধারা অ’ব্যাহত রাখব। যানজট নিরসনে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেব। যতটুকু কাজ করা যায় আমরা তা করব। নগর উন্নয়নের সঙ্গে ৫৪টি সংস্থা রয়েছে, আমরা সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে কাজ করব, এটাই আমার প্রত্যাশা।
আতিকুল ইসলামের পাশাপাশি নিজের মনোনয়নের ব্যাপারে পুরোপুরি আশাবাদী দক্ষিণের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।
মেয়র হিসেবে নিজেকে সফল দাবি করে তিনি বলেন, তিনি ইতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা করতে পেরেছেন।
তিনি বলেন, আমাদের ৫২ বাজার ৫৩ গলির এই ঢাকা শহরের এমন কোনো অলিগলি নাই যেখানে ইতিবাচক পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগাতে পারিনি। সব জায়গায় আমি উন্নয়নের ছোঁয়া লাগাতে পেরেছি। শান্তিনগরের ৪০ বছরের জলাবদ্ধতা, নাজিমুদ্দিন রোডে প্রায় ৫০ বছরের সমস্যা ছিল সেটিও আমরা সমাধান করেছি। নতুন কিছু জায়গায় জলজট হচ্ছে। উন্নয়ন একটা চলমান প্রক্রিয়া। নগরবাসী যদি আমাকে ভালোবাসায় সিক্ত করে, আমাদের কাজগুলো অ’ব্যাহত রাখার সুযোগ দেন, তাহলে সামনের দিনে সকল সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
অনুষ্ঠানে কয়েকশ মুক্তিযো’দ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, এবারের সিটি নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া হবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ২ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র বাছাই ও ৯ জানুয়ারি মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ সময়।