সময় এখন ডেস্ক:
মিয়ানমারের ওপর রাশিয়ার যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, রাশিয়া ও রাশিয়ান ফেডারেশন যদি রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারকে চাপ দেয়, তাহলে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হবে দেশটি।
আজ সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে সোভিয়েত রাশিয়ায় গ্রাজুয়েটদের ৫ম এশিয়ান কনফারেন্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জাতীয় পরিচয়পত্র মিলছে ১০ হাজার টাকায়
৮ ছেলে মেয়ে নিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন শমসের ইসলাম। তিনি ১৯৯২ সালেও একবার পালিয়ে এসেছিলেন। বছর খানেক থেকে আবার চলে যান। তার ২ স্ত্রী। একজন সন্তানসহ থেকে গেছেন সেখানে। তিনি প্রায় ৮ মাস ঝিনাইদহে ছিলেন। সেখানে কাজ করেছেন ইট ভাটায়, চালিয়েছেন অটোরিক্সা। আবার ক্যাম্পে ফেরত এসেছেন ২ মাস হল।
তিনি বলেন, আমার ৮ ছেলে মেয়ে নিয়ে থাকতে হয় ১ রুমে। অনেক সময় পালা করে ঘুমান তারা। এই ছোট রুমে এত মানুষ নিয়ে থাকতে থাকতে বির’ক্ত হয়ে গেছি। সাহায্য যথেষ্ট পাই। কিন্তু টাকার প্রয়োজন হয় অনেক সময়। তাই ক্যাম্প ছেড়ে যাই।
কুতুপালং ২ নম্বর ক্যাম্পের বি ব্লকের বাসিন্দা আজাদ মালয়েশিয়া থেকেও ঘুরে এসেছেন। সেখানে কাজ করেছেন ৬ মাস। তিনি বলেন, দালালের মাধ্যমে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে গিয়েছিলাম। দালালকে দিতে হয়েছে ৬০ হাজার টাকা। বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র আছে তার। কুতুপালং বাজারে থেকেই দালালরা করে দিয়েছেন পরিচয়পত্রের ব্যবস্থা। তিনি মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে এসেছেন মিয়ানমার হয়ে।
তার মিয়ানমারে যাতায়াত রয়েছে। তার দেয়া ঠিকানা অনুযায়ী কুতুপালং বাজারের সেই দোকানে গিয়ে দেখা যায় ২ কক্ষ বিশিষ্ট দোকানটির সামনে মোবাইল বেচাকেনা চলছে। আর পিছনে কম্পিউটার ও প্রিন্টিং মেশিন এর ব্যবসা। পরিচয় গোপন করে জাতীয় পরিচয়পত্র বানিয়ে দিতে হবে বললে দোকানি রাজি হন। বলেন, দিতে হবে ১০ হাজার টাকা। কিন্তু কিছু সময় পরে সন্দেহ হওয়ায় দোকান ছেড়ে চলে যান তিনি।
আলী আকবরের মিয়ানমারে রয়েছে হুণ্ডির ব্যবসা। সেখানে থাকা অনেক আত্মীয় স্বজন বাংলাদেশে টাকা পাঠান। আর এখান থেকেও পাঠানো হয় টাকা। ব্যবসার জন্য প্রতি মাসেই মিয়ানমার যান তিনি। ছেলের খোঁজ মিলছে না মালেক মিয়ার। তার ছেলে গিয়েছে নারায়ণগঞ্জে। সেখানে কাজ করে একটি দোকানে। টাকাও পাঠাতো।
মালেক মিয়া বলেন, ছেলেটার সঙ্গে কথা হত। সে বলে জাতীয় পরিচয়পত্র বানানোর কাজ শুরু করে দিয়েছে। তারটা হলে সবারটা করে ক্যাম্প ছেড়ে চলে যাবে। কিন্তু তার পর থেকেই মোবাইল বন্ধ। কোন খোঁজ মিলছে না।
স্থানীয় রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা অধিকাংশই স্বাভাবিক পরিস্থিতি নিশ্চিত হলে দেশে ফিরতে চান। প্রত্যা’বাসনের আশু কোন পদক্ষেপ পরিলক্ষিত না হওয়ায় তারা এই জীবন থেকে বের হতে চান। ফলে তারা স্থানীয়দের সঙ্গে মিশে যাচ্ছেন। চলে যাচ্ছে ক্যাম্পের বাইরে।
উখিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক নুরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, কেউ যদি পালানোর চেষ্টা করে সে রাস্তা না ব্যবহার করে পাহাড় দিয়েই পালিয়ে যেতে পারবে। আর এই সড়কে এত গাড়ি! প্রতিটি গাড়ি যদি কমপক্ষে ৫ মিনিটও চেক করি, তবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজট হয়ে যাবে।
নির্দিষ্ট কোন সীমানা না থাকায় তারা ইচ্ছা করলেই পালাতে পারছে। এখন যে কাঁটা তারের বেড়া দেয়া হচ্ছে, আশা করি এতে ক্যাম্পের বাইরে যাওয়ার পথ বন্ধ হবে বলে আশাবাদী এই পুলিশ কর্মকর্তা।
132