কাল ১৭২ বছর পর বিশেষ সূর্যগ্রহণ, ‘রিং অব ফায়ার’ দেখা যাবে

0

বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি ডেস্ক:

আগামী ২৬ ডিসেম্বর এমন এক সূর্যগ্রহণ দেখবে বিশ্ব, যা শেষবার মানুষ দেখেছিল ১৭২ বছর আগে। এ গ্রহণের সময় সূর্যের চারপাশে থাকবে আগুনের বলয়। বিজ্ঞানীরা যাকে বলেন ‘রিং অব ফায়ার’।

মহাকাশ বিজ্ঞানীরা জানান, আড়াই ঘণ্টা ধরে চলবে এই মহাজাগতিক দৃশ্য। সূর্যকে ৯০ শতাংশের বেশি ঢেকে ফেলবে চাঁদ, যা খালি চোখেই অবলোকন করতে পারবেন পৃথিবীবাসী। দৃশ্যটি সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে সবচেয়ে ভালো দেখা যাবে।

সূর্যগ্রহণের ধরণ:

পূর্ণ সূর্যগ্রহণ:

সূর্যগ্রহণে চাঁদ সূর্যকে সম্পূর্ণ ঢেকে ফেলতে পারে, ফলে কোনো স্থানে তখন হয় পূর্ণ সূর্যগ্রহণ। পূর্ণ সূর্যগ্রহণে সূর্য পুরো ঢাকা পড়ে যায় বলে সৌরমুকুট দেখা যায়।

আংশিক সূর্যগ্রহণ: অন্যত্র তখন চাঁদ সূর্যের আংশিক ঢেকে রাখায় সংঘটিত হয় আংশিক সূর্যগ্রহণ।

বলয় গ্রহণ: কিন্তু চাঁদের কৌণিক ব্যাস সূর্যের চেয়ে ছোট হলে হবে বলয় গ্রহণ। অমাবস্যার সময়ে সূর্যগ্রহণ হয় তবে সব অমাবস্যায় সূর্যগ্রহণ হয় না, কারণ চাঁদ ভূ-কক্ষের সাথে ৫ ডিগ্রী হেলে থাকে।

প্রচ্ছায়া: কোনো গ্রহ/উপগ্রহের ছায়ার কেন্দ্রীয় গাঢ়, অন্ধকার অঞ্চল।

উপচ্ছায়া: সূর্যালোকে আলোকিত পৃথিবী বা অন্য কোনো বস্তুর মূল ছায়ার কোণের চারপাশে আংশিক ছায়ার যে অংশ দেখা যায়। এ অঞ্চলে আংশিক গ্রহণ হয়।

গ্রহণের স্থিতি:

পৃথিবী থেকে বেশিক্ষণ ধরে এবং বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে সূর্যগ্রহণ দেখতে পাওয়ার শর্ত হল:

♣ সূর্য বেশি দূরত্বে থাকার ফলে তুলনামূলকভাবে ছোট মনে হবে। ♣ চাঁদ কাছে থাকবে, ফলে চাঁদের বড় গোলক সূর্যকে বেশিক্ষণ ধরে আড়াল করে রাখতে পারবে। ♣ চাঁদ কাছে থাকলে তার ছায়াও বৃহত্তর ভূখন্ডের ওপর পড়বে। ♣ মূল মধ্যরেখার যত কাছে থাকা যাবে গ্রহণ তত দীর্ঘস্থায়ী হবে।

পর্যবেক্ষণের বিষয়সমূহ:

মুক্তারমালা: চাঁদের আড়ালে সূর্য পুরোপুরি ঢাকা পড়ে যাওয়ার পূর্বমুহূর্তে চাঁদের পূর্বপ্রান্ত ঘিরে একটি সরু আলোর রেখা আর তার মাঝে মাঝে আলোকবিন্দু দেখা যায়, একে বাংলায় বলে মুক্তমালা। আবার চাঁদের পাহাড়, পর্বত, উপত্যকার ফাঁক দিয়ে আলো এসে হীরার আংটি বা ডায়মন্ড রিং এর মতোই দেখায় সূর্যগ্রহণের ২য় ও ৩য় স্পর্শের সময়।

তাপমাত্রার হ্রাস: সূর্যগ্রহণের সময় আবহাওয়ার তাপমাত্রা দ্রুত হ্রাস পায়। সেই তাপমাত্রা কী রকম কমছে প্রতি ১৫ সেকেণ্ড অন্তর একটা গ্রাফ কাগজে সারি করে সংগ্রহ করা যেতে পারে। গ্রহণের ১০ মিনিট আগে থেকে শুরু করে শেষ হওয়ার ১০ মিনিট পর পর্যন্ত। শুধু একটা ঘড়ি ও থার্মোমিটার হলেই চলবে। তবে আবহাওয়ার চেয়ে মাটি, পাথর ইত্যাদির তাপমাত্রা তাড়াতাড়ি বাড়ে ও কমে।

প্রাণীর আচরণ: পাখি, পোকামাকড় ও জন্তু-জানোয়ার হঠাৎ দিনের বেলা সূর্যের আলো কমতে থাকায় বি’হ্বল হয়ে পড়ে, তাদের আচার আচরণের ওপরও নজর রাখা যেতে পারে। মানুষের আচরণ নিয়েও গবেষণা করতে পারা যায়, অবশ্যই বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে।

ছায়ালহরী: গ্রহণের সময় সূর্য যেমনি ঢাকা পড়তে আরম্ভ করে গাছের নিচে পাতার ফাঁক দিয়ে যে আলো মাটিতে পড়ে তাদের প্রতিবিম্বতেও ঐ সূর্যের আকারের প্রভাব থাকে। এইসময় অন্ধকার হওয়ার কয়েক মিনিট আগে আলোছায়ার ঢেউ বা ছায়ালহরী ভাল করে পর্যবেক্ষণ করলে তবেই দেখা যায়।

শেয়ার করুন !
  • 5.5K
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!