আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
সমাজতন্ত্রের ভিত্তিতে মুসলমান ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র বিবেচিত ধর্মগ্রন্থ কোরআন ও বাইবেল-কে নতুন রূপে লেখার উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্বের ক্ষমতাশীল রাষ্ট্র পিপলস রিপাবলিক অব চায়না।
দেশটির ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তাদের সমাজতান্ত্রিক মূল্যবোধের আলোকে প্রধান প্রধান ধর্মগ্রন্থগুলোর সব অনুবাদ নতুন করে লেখা হবে। গতকাল মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি মেইল।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, গত নভেম্বরে চীনে ধর্মীয় বিষয়াদি দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা জাতিতত্ত্ব বিষয়ক কমিটির এক সভায় সংশ্লিষ্টদের এই নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে এতে কোরআন বা বাইবেলের কথা সরাসরি উল্লেখ না করলেও বেইজিং বলছে, প্রধান ধর্মগ্রন্থগুলোর নতুন সংস্করণে সমাজতন্ত্রের সঙ্গে সাংঘ’র্ষিক কোনও উপাদান থাকবে না।
চীনা কমিউনিস্ট পার্টির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, প্রধান ধর্মগ্রন্থগুলোর সব অনুবাদ পুনরায় মূল্যায়ন করা হবে। অর্থাৎ সংযোজন বিয়োজন করা হবে। এ গ্রন্থগুলোর নতুন সংস্করণে সমাজতন্ত্রের সঙ্গে সাংঘ’র্ষিক কোনও তথ্য রাখা হবে না। কোনও অনুচ্ছেদ ভুল মনে হলে সেন্সর বোর্ড সেগুলো সংশোধন বা পুনরায় অনুবাদ করবে।
চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মাসে কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে বিভিন্ন ধর্মের প্রতিনিধি, ধর্মবিশ্বাসী ও বিশেষজ্ঞদের ১৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের বৈঠক হয়। চীন সরকারের পলিটিক্যাল কনস্যুলেটিভ কনফারেন্সের চেয়ারম্যান ওয়াং ইয়াংয়ের তত্ত্বাবধানে ওই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। এ মাসের গোড়ার দিকে ম্যাকাওতে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বিষয়টির প্রতি ইঙ্গিত করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
মঙ্গলবার ওয়াং ইয়াংয়ের বরাত দিয়ে ফরাসি সংবাদমাধ্যম লে ফিগারো জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী যুগের চাহিদা ও সমাজতান্ত্রিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে বিভিন্ন ধর্মের তত্ত্ব ব্যাখ্যা দেবে চীনা ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ।
এদিকে কোরআন এর পরিবর্তন বিষয়ে সংবাদ প্রচারিত হওয়ার পর আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি মুসলমান অধ্যুষিত দেশগুলো। ওআইসিসহ কোনো মুসলিম সম্প্রদায়ের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাও নীরবতা পালন করছে।