সময় এখন ডেস্ক:
সদ্যবিদায়ী ২০১৯ সালে ৪ হাজার ২১৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৮৫ নারী ও ৭৫৪ শিশুসহ অন্তত ৪ হাজার ৬২৮ জন নিহ’ত হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৮ হাজার ৬১২ জন। আহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা যথাক্রমে ৬১৩ ও ৩৯৯। ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মহাসড়ক, জাতীয় মহাসড়ক, আন্তঃজেলা সড়ক ও আঞ্চলিক সড়কসহ সারাদেশে এসব দুর্ঘটনা ঘটে।
বুধবার (১ জানুয়ারি) ঢাকার গণমাধ্যমকর্মীদের সংগঠন শিপিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন রিপোর্টার্স ফোরামের (এসসিআরএফ) এক বিবৃতিতে ‘সড়ক দুর্ঘটনার বার্ষিক প্রতিবেদন-২০১৯’-এ এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ২৪টি জাতীয় দৈনিক, ১০টি আঞ্চলিক সংবাদপত্র এবং ৯টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও সংবাদ সংস্থার তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
গত বছর (২০১৯ সাল) সড়ক দুর্ঘটনা ও আহতের সংখ্যা পূর্ববর্তী বছরের (২০১৮ সাল) তুলনায় কম হলেও প্রাণহা’নির সংখ্যা বেড়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। ২০১৮ সালে ৪ হাজার ৩১৭টি দুর্ঘটনায় ৪ হাজার ৫৮০ জন নিহ’ত ও ১০ হাজার ৮২৮ জন আহত হয়েছিল। আর গত বছর দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪ হাজার ২১৯টি, এতে নিহ’ত ও আহতের সংখ্যা যথাক্রমে ৪ হাজার ৬২৮ ও ৮ হাজার ৬১২ জন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জানুয়ারিতে ৩৮৩টি দুর্ঘটনায় ৫৩ নারী ও ৭১ শিশুসহ ৪১১ জন নিহ’ত এবং ৫৮ নারী ও ৪০ শিশুসহ ৭২৫ জন আহত হয়েছে।
ফেব্রুয়ারিতে ৪০১টি দুর্ঘটনায় ৪১৫ জন নিহ’ত হয়েছে, যার মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা যথাক্রমে ৫৮ ও ৬২। এছাড়া ওই মাসে ৮৮ নারী ও ৮৬ শিশুসহ আরও ৮৮৪ জন আহত হয়েছে।
মার্চে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩৮৪টি। এতে ৪৬ নারী ও ৮২ শিশুসহ ৩৮৬ জন নিহ’ত এবং ৬৭ নারী ও ৭৬ শিশুসহ ৮২০ জন আহত হয়েছে।
এপ্রিলে ৩২৭টি দুর্ঘটনায় ৩৪০ জন নিহ’ত ও ৬১০ জন আহত হয়েছে। নিহ’তদের মধ্যে ৩৮ ও ৫৩ শিশু রয়েছে। আর আহতদের তালিকায় নারী ও শিশুর সংখ্যা যথাক্রমে ৪৬ ও ২৮ জন।
মে মাসে দুর্ঘটনা ঘটেছে ২৯৭টি, যাতে ৪৭ নারী ও ৪৪ শিশুসহ ৩৩৮ জনের প্রাণহা’নি এবং ২৭ নারী ও ১২ শিশুসহ ৫০৪ জন আহত হয়েছে।
জুনে দুর্ঘটনা, প্রাণহা’নি ও আহতের সংখ্যা যথাক্রমে ৩৬৭, ৪৩৯ ও ৮১৮। নিহ’তদের মধ্যে ৪৯ নারী ও ৬৯ শিশু এবং আহতদের মধ্যে ৫৪ নারী ও ২৫ শিশু রয়েছে।
জুলাইয়ে ৩১১টি দুর্ঘটনায় ৪৬ নারী ও ৪০ শিশুসহ ৩৪৮ জন নিহ’ত এবং ২১ নারী ও ২২ শিশুসহ ৫১৩ জন আহত হয়েছে।
আগস্টে দুর্ঘটনা ও প্রাণ’হানির সংখ্যা যথাক্রমে ৩৩৭ ও ৩৯৮। এতে ৪৭ নারী ও ৫৭ শিশুর প্রাণহা’নি ঘটেছে, আহত হয়েছে ৫৮ নারী ও ৩৮ শিশুসহ আরও ৮২৩ জন।
সেপ্টেম্বরে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩৫৩টি, এতে ৩৮ নারী ও ৬৪ শিশুসহ ৩৬৭ জন নিহ’ত এবং ৫৭ নারী ও ১২ শিশুসহ ৮৪২ জন আহত হয়েছে।
অক্টোবরে ৩৫৬টি দুর্ঘটনায় ৩৯৮ জনের প্রাণহা’নি ঘটেছে। নিহ’তদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা যথাক্রমে ৫৫ ও ৭৮। এছাড়া এই মাসে ৩৯ নারী ও ৪ শিশুসহ আহত হয়েছে আরও অন্তত ৬৬৭ জন।
নভেম্বরে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩১৪টি, এতে ৫৩ নারী ও ৬২ শিশুসহ ৩৪২ জন নিহ’ত এবং ৬১ নারী ও ২৭ শিশুসহ ৬৮১ জন আহত হয়েছে।
বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে দুর্ঘটনা, প্রাণহা’নি ও আহতের সংখ্যা যথাক্রমে ৩৮৯, ৪৪৬ ও ৬৮১। নিহ’তদের মধ্যে ৫৫ নারী ও ৭২ শিশু রয়েছে। আর আহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা ৩৭ ও ২৯ জন।
শিপিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন রিপোর্টার্স ফোরামের (এসসিআরএফ) সভাপতি আশীষ কুমার দে বলেন, তাদের নিয়মিত পর্যবেক্ষণে সড়ক দুর্ঘটনার জন্য ১২টি প্রধান কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে।
সেগুলো হলো-
১. গাড়ি চালানোর সময় চালকদের বে’পরোয়া মনোভাব, ২. চলন্ত অবস্থায় চালকের মোবাইলে ফোনালাপ, ৩. ট্রাফিক আইন অ’মান্য করে ওভারটেকিং ও ওভারলোডিং, ৪. বিরতি ছাড়াই দূরপাল্লার সড়কে দীর্ঘক্ষণ গাড়ি চালানো, ৫. অ-দক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন চালক নিয়োগ, ৬. মহাসড়কে মোটরবাইকসহ ক্ষুদ্র যানবাহনের অ’বাধ চলাচল ৭. ত্রু’টিপূর্ণ গাড়ি চলাচল বন্ধে আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাব,
৮. দূরপাল্লার সড়কের বিভিন্ন স্থানে ঝুঁ’কিপূর্ণ বাঁক ও বে-হাল দশা, ৯. নিয়োগপত্র না পাওয়ায় পরিবহন কর্মীদের মাঝে হ’তাশা, ১০. চালক ও সহকারীর কাছে দিন চুক্তিতে গাড়ি ভাড়া দেয়া, ১১. বিভিন্ন স্তরে চাঁদা’বাজির কারণে শ্রমিক অ’সন্তোষ এবং ১২. পথচারীদের অ’সতর্কতা ও ট্রাফিক আইন মেনে না চলা।
202