সময় এখন ডেস্ক:
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম রাজনীতিবিদদের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ। তার ত্যাগ-তি’তিক্ষা জাতির কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
দলটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের প্রথম মৃ’ত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার বনানীতে তার কবরে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের একজন বিরল রাজনীতিবিদ সৈয়দ আশরাফ। বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী সৈয়দ নজরুল ইসলামের এই সুযোগ্য পুত্র আমাদের পার্টির পর পর দু’বার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের জন্য সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ৭৫ পরবর্তী সময়ে সৈয়দ আশরাফ অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশে একজন ‘পারফেক্ট ম্যান’ ছিলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, সৈয়দ আশরাফের জীবন থেকে আমাদের সবার শিক্ষা নেয়ার আছে। তার নম্রতা, সততা ও বিনয় ভবিষ্যৎ রাজনীতিকদের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। তার প্রথম মৃ’ত্যুবার্ষিকী তখনই সার্থক হবে যদি আমরা তার মতো আচরণে বিনয়ী, নম্র ও বাস্তব জীবনে সৎ হতে পারি। আজ সৈয়দ আশরাফের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে। এখান থেকে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম শিক্ষা নিতে পারবে।
এ সময় সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের পরিবারের পক্ষ থেকে দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন তার বোন কিশোরগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর।
সৈয়দ আশরাফ ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রা’ন্ত হয়ে থাইল্যান্ডের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানেই ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মা’রা যান এই প্রবীণ রাজনীতিবিদ।
সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ১৯৫২ সালের ১ জানুয়ারি ময়মনসিংহে জন্মগ্রহন করেন। তার পিতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম মুক্তিযু’দ্ধ চলাকালীন মুজিবনগর সরকারের অ’স্থায়ী রাষ্ট্রপতি ও মুক্তিযু’দ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন।
আশরাফুল ইসলাম ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার যু’দ্ধে অংশ নেন। তিনি মুক্তিবাহিনীর একজন সদস্য ছিলেন এবং ভারতের দেরাদুনে প্রশিক্ষণ নেন।
সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এমএ ডিগ্রী লাভ করেন। পারিবারিক ঐতিহ্যের সূত্র ধরে তিনি ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। ১৯৭০ বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগা’রে পিতা সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ জাতীয় চার নেতার নি’র্মম হ’ত্যাকাণ্ডের পর তিনি যুক্তরাজ্য চলে যান। প্রবাস জীবনে তিনি যুক্তরাজ্যে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
আশরাফুল ইসলাম ১৯৯৬ সালে দেশে ফিরে আসেন এবং কিশোরগঞ্জ সদর আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এসময় তিনি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০০১ সালের ১ অক্টোবরে অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় তিনি নির্বাচিত হন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০০৮ সালের নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৫ সালের ১৬ জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন।
তিনি এক কন্যার জনক। তার স্ত্রী শিলা ইসলাম ২০১৭ সালের অক্টোবরে মা’রা যান।
3.1K