বরিশাল প্রতিনিধি:
বাবার মৃ’ত্যুর পর লা’শ দাফন না করেই বিবা’দে জড়িয়ে পড়ে সন্তানরা। জমিজমার বণ্টন ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত লা’শ দাফন করতে দেবেন না বলে সিদ্ধান্ত নেয় তারা। পরে রাতভর দাফন না করেই মসজিদের সামনে পড়ে ছিল লা’শ। আর সেই ডেডবডি পাহারা দিয়েছে রাস্তার কুকুর।
গত ৩০ ডিসেম্বর বরিশাল বাকেরগঞ্জের দাড়িয়াল ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ওই ওয়ার্ডের বিত্তবান আবুল হাসেম খান মা’রা যাওয়ার পর ছেলেমেয়েরা জমি সংক্রান্ত ভাগাভাগি নিয়ে বিবা’দে জড়িয়ে পড়ে। জমি বণ্টনের নি’ষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত লা’শ দাফন করতে দেবেন না বলে এক ছেলে বলে উঠে। অন্যরা লা’শ দাফন করতে গেলে বাধা দেয় ওই ছেলে।
একপর্যায় স্থানীয় সমজিদের সামনের সড়কের ধারে বাবার ডেডবডি ফেলে রেখে সব ছেলেরা চলে যায়। কিছুক্ষণ এলাকাবাসী লা’শ পাহারা দেন। কিন্তু রাত গভীর হলে তারাও যে যার মত চলে যান। পরে আবুল হোসেন খানের লা’শ পড়ে ছিল একা।
এরপর সেখানে আসে একটি বেওয়ারিশ কুকুর। গভীর রাতে ডেডবডিের পাশে ওই কুকুর ছাড়া আর কেউ ছিল না। পাহারাদারের মতো কুকুরটি সারা রাত ডেডবডির পাশেই বসে থাকে। এ ঘটনার একটি ছবি সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যা বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।
জানা যায়, কুকুরটি কারো পোষা নয়। আশেপাশেই থাকে। প্রয়াত আবুল হাসেম খান মাঝে মাঝেই কুকুরটিকে বিস্কুট খাওয়াতেন। আর তাই কুকুরটি সেই কৃতজ্ঞতাবোধ থেকেই ডেডবডির পাশ ছেড়ে যায়নি।
এদিকে সারারাত সন্তানরা সম্পত্তির ভাগ বাটোয়ারার কোনো সু’রাহা করতে না পেরে বাবার ডেডবডি দাফন করা থেকে বির’ত থাকে। এ খবর পেয়ে এগিয়ে আসেন স্থানীয় চেয়ারম্যান। অবশেষে পুলিশের মধ্যস্থতায় আবুল হাসেম খানের দাফন সম্পূর্ণ করেন তিনি।
এ বিষয় দাড়িয়াল ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এমএ জব্বার বাবুল জানান, ঘটনা যা ঘটছে তা সত্যি। আমি ঢাকায় ছিলাম আমি শুনেছি যে ডেডবডির জানাজার জন্য সবাই একত্রিত হয়েছে। এসময় তার ওয়ারিশরা বাবার ডেডবডির জানাজা দিতে বাধা দেয়। তারা জানান, জামাজমি বন্টন না করে ডেডবডি জানাজা দেয়া যাবে না। স্থানীয়রা এর সমাধান করতে না পারায় পরদিন আমার লোকজন দিয়ে জানাজা ও ডেডবডি দাফনের কাজ সম্পন্ন করি।
বাকেরগঞ্জ থানার ইন্সেপেক্টর মো. জুবাইর জানান, ছোট ছেলে ডেডবডি দাফনে বাধা দেয়। পরে খবর পেয়ে আমরা গিয়ে দাফনের ব্যবস্থা করি।
253