আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মার্কিন ড্রোন হাম’লায় ইরানের সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কমান্ডার কাসেম সোলেইমানি হ’ত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যে সৃষ্ট নতুন ক্রাইসিস নিয়ে আলোচনা করতে রাশিয়া যাচ্ছেন জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা ম্যার্কেল। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ডাকে আগামী ১১ জানুয়ারি মস্কো যাচ্ছেন তিনি।
সোমবার রুশ প্রেসিডেন্টের গণমাধ্যম শাখার বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। ক্রেমলিন বলছে, প্রেসিডেন্ট পুতিনের আমন্ত্রণে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা ম্যার্কেল রাশিয়া আসছেন। ইরান-যুক্তরাষ্ট্র ক্রাইসিস ছাড়াও সিরিয়া, লিবিয়া ও ইউক্রেন নিয়ে আলোচনার পরিকল্পনা করছেন এ দুই নেতা।
ম্যার্কেলের মুখপাত্রের বরাত দিয়ে মস্কো টাইমস এক প্রতিবেদনে বলছে, জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেইকো মাস চ্যান্সেলর ম্যার্কেলের সঙ্গে রাশিয়া সফর করবেন।
ইরানিদের কাছে ‘জাতীয় বীর’ হিসেবে পরিচিত কাসেম সোলেইমানিকে দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির পর ২য় সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবে মনে করা হয়। গত ২৩ বছর দেশটির বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর অভিজাত শাখা কুদস ফোর্সের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। গত শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) বাগদাদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে মার্কিন ড্রোন হাম’লায় নিহ’ত হন তিনি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, দেশে জাতীয় বীর হলেও ইরানি এই সামরিক কমান্ডারকে সন্ত্রা’সী হিসেবে মনে করতো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তাকে হ’ত্যার পক্ষে সাফাই গেয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিক ও সামরিক কর্মকর্তাদের ওপর হাম’লার পরিকল্পনা করছিলেন সোলেইমানি।
ইরানের সামরিক বাহিনীর শীর্ষ এই হ’ত্যাকাণ্ড ঘিরে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন করে ক্রাইসিস তৈরি হয়েছে। অনেকেই ওয়াশিংটন-তেহরানের এই ক্রাইসিসে মধ্যপ্রাচ্যে যু’দ্ধের অ’শনিসংকেত পাচ্ছেন বলে আশ’ঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
কাসেম সোলেইমানি হ’ত্যাকাণ্ডের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের ৫২টি স্থাপনা যুক্তরাষ্ট্রের হাম’লার টার্গেটে রয়েছে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তবে ইরান জেনারেল সোলেইমানি হ’ত্যার জবাব যথাসময়ে, উপযুক্ত পরিবেশে সামরিক উপায়ে দেয়া হবে বলে পাল্টা হুম’কি দিয়েছে।
কুদস ফোর্সের এই প্রধান মার্কিন হাম’লায় নিহ’ত হওয়ার পর রোববার রাতে ৬ বিশ্বশক্তির সঙ্গে স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তির শর্ত না মানার ঘোষণা দিয়েছে তেহরান। একই সঙ্গে পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি আগের চেয়ে দ্রুতগতিতে এগিয়ে নেয়ারও অঙ্গীকার করেছে ইরান।
দেশটির বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর অভিজাত শাখা কুদস ফোর্সের প্রধানের ডেডবডি তেহরানে পৌঁছায় সোমবার সকালে। ইরানের শীর্ষ এই জেনারেলের ডেডবডির প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে তেহরানের রাস্তায় নামে লাখো জনতার ঢল।
এদিকে, মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র ক্রাইসিস তৈরি হওয়ার পর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে টেলিফোন করেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। এ সময় তারা সোলেইমানি হ’ত্যাকাণ্ড ঘিরে মধ্যপ্রাচ্যে সৃষ্ট ক্রাইসিস নিয়ে আলোচনা করেন।
মস্কো টাইমস বলছে, প্রেসিডেন্ট পুতিনকে নিজ থেকে টেলিফোন করেছেন এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। টেলিআলাপনে এ দুই রাষ্ট্রনেতা মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপ সেখানকার পরিস্থিতিকে ভ’য়াবহ করে তুলছে বলে একমত হন।
সূত্র: রয়টার্স, মস্কো টাইমস, বিবিসি।
157