শ্রম আইন ভাঙায় ড. ইউনূসকে আদালতে হাজির হতে সমন

0

আইন আদালত ডেস্ক:

শ্রম আইনের বিধান না মানায় ফৌজদারি অভিযোগ আমলে নিয়ে গ্রামীণ কমিউনিকেশন্সের চেয়ারম্যান নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেছেন ঢাকার একটি শ্রম আদালত।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) ঢাকার ৩য় শ্রম আদালতের বিচারক রহিবুল ইসলাম এ সমন জারি করেন। ওই আদালতের সেরেস্তাদার মিয়া মো. জামাল উদ্দিন জানান, ৬ ফেব্রুয়ারি তাকে আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।

গত ৫ জানুয়ারি ঢাকার একই আদালতে এ মামলা করেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক (সাধারণ) তরিকুল ইসলাম। মামলায় ড. ইউনূস ছাড়াও গ্রামীণ কমিউনিকেশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজনীন সুলতানা, পরিচালক আ. হাই খান ও উপ-মহাব্যবস্থাপক (জিএম) গৌরি শংকরকে বি’বাদী করা হয়েছে। মামলাটি গ্রহণ করে আদেশের জন্য রেখেছিলেন আদালত। আজ ড. ইউনূসসহ ওই ৩ বি’বাদীর বিরু’দ্ধেও সমন জারি করা হয়।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৩০ এপ্রিল বাদীপক্ষের এক পরিদর্শক প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শনটি পরিদর্শন করে শ্রম আইনের কিছু ব্য’ত্যয় দেখতে পান। ওই পরিদর্শক প্রতিষ্ঠানের ত্রু’টিগুলো সংশোধনের নির্দেশনা দেন। এরপর ৭ মে ডাকযোগে বি’বাদী পক্ষ এ বিষয়ে জবাব দেন। জবাবের পর মামলার বাদী একই বছর ১০ অক্টোবর গ্রামীণ কমিউনিকেশন্সে সরেজমিনে পরিদর্শনে যান। সেখানে গিয়ে প্রতিষ্ঠানটির দ্বারা ১০টি বিধি ল’ঙ্ঘন হচ্ছে বলে দেখতে পান।

এ বিষয়ে বি’বাদীদের জবাব দিতে বলা হয়। তবে জবাব সন্তোষজনক হয়নি গত ২৮ অক্টোবর বর্তমান পরিদর্শক আবারও তা অ’বহিত করেন। কিন্তু নির্দেশনা বাস্তবায়ন না করে বি’বাদীরা ফের সময়ের আবেদন করেন। এরপর সময় অনুযায়ী তারা জবাব দাখিল না করায় প্রতীয়মান হয় যে, বি’বাদীরা শ্রম আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নন।

এ অবস্থায় ড. ইউনূসসহ বি’বাদীদের বিরু’দ্ধে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬, বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) আইন, ২০১৩ ধারা ৩৩ (ঙ) এবং ৩০৭ মোতাবেক দ’ণ্ডনীয় অপরাধের অভিযোগ আনা হয়।

গ্রামীণ কমিউনিকেশন্সের বিরু’দ্ধে যেসব বিধি ল’ঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- বিধি মোতাবেক শ্রমিক/কর্মচারীদের নিয়োগপত্র, ছবিসহ পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বহি দেওয়া হয়নি, শ্রমিকের কাজের সময়ের নোটিশ পরিদর্শকের কাছ হতে অনুমোদিত নয়, কোম্পানিটি বার্ষিক ও অর্ধ-বার্ষিক রিটার্ন জমা দেয়নি,

কর্মীদের বৎসরান্তে অর্জিত ছুটির অর্ধেক নগদায়ন করা হয় না, কোম্পানির নিয়োগবিধি মহাপরিদর্শক কর্তৃক অনুমোদিত নয়, ক্ষ’তিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটি ও উৎসব ছুটি সংক্রান্ত কোনো রেকর্ড/রেজিস্ট্রার সংরক্ষণ করা হয় না, কোম্পানির মূনাফার অংশ ৫ শতাংশ শ্রমিকের অংশগ্রহণ তহবিল গঠনসহ লভ্যাংশ বণ্টন করা হয় না,

সেফটি কমিটি গঠন করা হয়নি, কর্মীদের অন্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করালেও কোনো ঠিকাদারি লাইসেন্স গ্রহণ করেননি এবং কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর থেকে লাইসেন্স গ্রহণ করেনি।

ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের কারণে গ্রামীণ কমিউনিকেশন্সের চাকরিচ্যু’ত ৩ কর্মীর পৃথক ৩টি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এর আগে একই আদালত গত ৯ অক্টোবর ড. ইউনূসের বিরু’দ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন। পরে ৩ নভেম্বর ঢাকার ৩য় শ্রম আদালতের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জাকিয়া পারভীনের আদালত থেকে আত্ম’সমর্পণ করে জামিন পান তিনি।

শেয়ার করুন !
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!