সময় এখন ডেস্ক:
প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানসহ ১০ জনের বিরু’দ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে আজ।
ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের ক্যাম্পাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নাইমুল আবরার রাহাতের মৃ’ত্যুর ঘটনায় প্রথম আলো’র অপরাধ তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।
প্রথম আলো পত্রিকার সহ-প্রকাশনা মাসিক কিশোর আলো’র অনুষ্ঠানে দায়িত্ব অব’হেলার কারণে মা’রা যায় আবরার। এ হ’ত্যাকাণ্ডের পর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদনে প্রথম আলোর দায়িত্বে অব’হেলার প্রমাণ পাওয়া যায়। প্রথম আলো কর্তৃপক্ষ শুরু থেকে এই বিষয়টি নিয়ে ধামা-চাপা দিতে চেয়েছিল।
শেষ পর্যন্ত আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর হাকিম কায়সারুল ইসলাম মামলার অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক আব্দুল আলীম আজ দুপুরে এ ১০ জনকে আসামি করে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
উল্লেখ্য, আরও যাদের বিরু’দ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে তারা হলেন- কবির বকুল, শুভাশিষ প্রামাণিক শুভ, মহিতুল আলম পাভেল, শাহ পরাণ তুষার, জসিম উদ্দিন অপু, মোশারফ হোসেন, সুজন ও কামরুল হায়দার।
অভিযোগ এসেছে, আবরার বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার পর তাকে দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া প্রয়োজন ছিল। কিন্তু আয়োজক কর্তৃপক্ষ তাকে আশপাশের কোনো হাসপাতালে না নিয়ে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ায় তার মৃ’ত্যু হয়।
রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজে যে অনুষ্ঠানে রাহাত বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মা’রা যান, ওই অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিল প্রথম আলোর কিশোর সাময়িকী কিশোর আলো। প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান কিশোর আলোরও প্রকাশক; কিশোর আলোর সম্পাদক হলেন আনিসুল হক।
বিদ্যুৎস্পষ্ট হওয়ার জন্য কিশোর আলো কর্তৃপক্ষের অ-ব্যবস্থাপনাকে দায়ী করার পাশাপাশি কাছের এত হাসপাতাল থাকতে দূরের হাসপাতালে রাহাতকে নেওয়া এবং মৃ’ত্যুর পরও অনুষ্ঠান চালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা হয়।
সমালোচনার মুখে কিশোর আলো কর্তৃপক্ষ জানায়, ওই অনুষ্ঠানের অংশীদার ছিল ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, অনুষ্ঠানে তাদের একটি মেডিকেল ক্যাম্প ছিল, ওই ক্যাম্পের চিকিৎসকের পরামর্শেই রাহাতকে ইউনিভার্সেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল।
এই ঘটনার পর ৩০৪ (ক) ধারা বা অব-হেলার কারণে মৃ’ত্যু সংঘটনের অভিযোগ এনে মামলা করলেন রাহাতের বাবা; যে ধারায় অপরাধের সর্বোচ্চ শা’স্তি যাবজ্জী’বন কারাদ’ণ্ড।
মামলায় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানের নাম উল্লেখ করে, সেই সঙ্গে নাম উল্লেখ না করে কিশোর আলোর প্রকাশক ও ওই অনুষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত অ-জ্ঞাতনামাদের বিরু’দ্ধে অভিযোগ আনেন তিনি।
অভিযোগে বলা হয়, সঠিকভাবে বিদ্যুতের ব্যবস্থাপনা না করে এরকম অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে এবং এতে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা করা হয়নি। ঘটনা ঘটার পর রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ ক্যাম্পাসের উল্টো পাশের সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে রাহাতকে না নিয়ে উদ্দেশ্য-মূলকভাবে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
বাদী বলেন, কর্তৃপক্ষ আমাকে কিছু জানায়নি। তার বন্ধু ও সহপাঠীর মাধ্যমে ছেলের মৃ’ত্যুর সংবাদ জেনেছি। অথচ আনুমানিক ৩টার সময় সে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। ৪টা ১৫ মিনিটে ইউনিভার্সেলে ভর্তি করা হয়, ৪টা ৫১ মিনিটে ডাক্তার তাকে মৃ’ত ঘোষণা করে।
মুজিবুর অভিযোগ করেছেন, এ মৃ’ত্যু শুধু একটি ম’র্মান্তিক দুর্ঘটনা হিসেবে মেনে নেওয়ার জন্য আমাকে চাপ প্রদান করা হয়। লা’শের পোস্টমর্টেম ছাড়া মোহাম্মদপুর থানায় একটি অপমৃ’ত্যুর মামলা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
মুজিবুর দাবি করেছেন, তাকে ‘ভুল বুঝিয়ে’ ময়নাতদন্ত ছাড়া লা’শ গ্রহণের জন্য মুচলেকা নেওয়া হয়েছিল।
বাদীর আইনজীবি মোহাম্মদ ওমর ফারুক আসিফ বলেন, ১ নভেম্বরের ওই মৃ’ত্যুটি কোনো ম’র্মান্তিক দুর্ঘটনা বা অপমৃ’ত্যু নয়। বরং আসামিদের চরম অব-হেলা, অ’যত্ন, গা’ফিলাতি, অ-ব্যবস্থাপনা ও চিকিৎসার অব-হেলা এবং অ-সাবধনতার কারণে নাইমুল আবরার রাহাতের মৃ’ত্যু হয়।
১ Comment
আইন সবার জন্যে সমান। নিশ্চয় ওনারা অপরাধ প্রমানিত হলে সাজা শাস্তিও মেনে নেবেন বলে জনগণ বিশ্বাস করেন।