৯১’র মতো একটা ‘আপসেট’ চান ইশরাক!

0

বিশেষ প্রতিবেদন:

১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যতগুলো আপসেট ঘটেছিল তার মধ্যে সবচেয়ে বড় ছিল সূত্রাপুর-কোতোয়ালি আসনে। ওই আসনে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে পরাজিত করে সাদেক হোসেন খোকা চমক সৃষ্টি করেছিলেন। এবার সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সাদেক হোসেন খোকার পুত্র ইশরাক হোসেন সেই ৯১’র স্মৃতিকে ফিরিয়ে আনতে চান। চান একটা আপসেট ঘটুক।

পুরান ঢাকার অধিবাসী ইশরাক হোসেনের বাবা সাদেক হোসেন খোকা পুরান ঢাকার জনপ্রিয় এবং পরিচিত মুখ। আর এটাই নির্বাচনের প্রধান পুঁজি বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ইশরাক হোসেনের। ইশরাকের নির্বাচনী টিম মনে করছে, পুরান ঢাকার ভোট যদি একাট্টা করতে পারে, তাহলে ইশরাকের জন্য নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া অনেক সহজ হবে।

কারণ ধানমন্ডি-ঝিগাতলাসহ আধুনিক ঢাকায় ভোটাররা ভোট দিতে কম যান এবং সেখানে বিএনপির নিজস্ব যে দলীয় ভোট আছে সেটা পেলেই চলবে। পুরান ঢাকার যে ভোট আছে, সেই ভোট একাট্টা করতে পারলে ইশরাকের পক্ষে নির্বাচনে চমক দেখানো সহজ হবে। আর এজন্য ঢাকাইয়া আবেগের উপর জোর দিচ্ছেন ইশরাক এবং তার প্রাচারণা টিম।

পুরান ঢাকার একটা ঐতিহ্য আছে, তাদের মুরব্বিরা ভোটের সিদ্ধান্ত নেন এবং আদি ঢাকার বাসিন্দা ছাড়া কাউকে ভোট দেবার ব্যাপারে তাদের একটি নে’তিবাচক মনোভাব কাজ করে। আর এই সুযোগটাই কাজে লাগাতে চান ইশরাক। যদিও পুরান ঢাকার সিংহভাগ পরিবার এবং মুরব্বিরা আওয়ামী লীগের সমর্থক এবং আওয়ামী লীগ করে। বিশেষ করে সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের মাতৃকুল মাজেদ সর্দারের পরিবার পুরান ঢাকায় একটা বিশাল প্রভাব বিস্তার করে আছেন।

তবে ইশরাক মনে করেন, যেহেতু সাঈদ খোকন মনোনয়ন পাননি, কাজেই মুরব্বিরা নি’র্লিপ্ত থাকবেন। ইশরাকের এই আশাবাদের পেছনে কাজ করছে ১৯৯১ সালের নির্বাচন। ওই নির্বাচনে সাদেক হোসেন খোকা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয়তম ব্যক্তি শেখ হাসিনাকে পরাজিত করে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। ৯১ সালের সেই স্মৃতিকে ফিরিয়ে আনতে চান ইশরাক। আর এ কারণেই তিনি পুরান ঢাকাকে একাট্টা করছেন।

উল্লেখ্য, ১৯৯১ সালের নির্বাচনে ঢাকার আঞ্চলিক ইস্যুকে সামনে নিয়ে আসা হয়েছিল এবং সাদেক হোসেন খোকা ঢাকার বাসিন্দা এই বিবেচনায় তার পক্ষে ভোট দিয়েছিল পুরান ঢাকাবাসী। ইশরাক এখন সেই ৯১ সালের কৌশলেই খেলতে চাচ্ছেন। পুরান ঢাকার বিস্তৃর্ণ এলাকায় সাদেক হোসেন খোকার জনপ্রিয়তা এবং সাদেক হোসেন খোকার আবেগকে কাজে লাগিয়ে ইশরাক এই ভোটগুলোকে ঘরে তুলতে চাইছেন।

প্রশ্ন হলো, ইশরাক কি এটা পারবেন? রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং নির্বাচনের পর্যবেক্ষক মহল বলছেন, ১৯৯১ সাল আর ২০২০ সাল এক নয়। ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগ সভাপতি হেরেছিলেন দলের অভ্যন্তরীন কো’ন্দল, বিরো’ধ এবং অতি আত্মবিশ্বাসের কারণে। এবারের পরিস্থিতি তা না।

১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগ সভাপতি তার বিজয় অনিবার্য ধরেই নির্বাচনী প্রচারণায় তেমন গুরুত্ব দেননি। এবার বিষয়টি ভিন্ন। এখন পুরান ঢাকায় মুরব্বিদের কথায় তরুণ প্রজন্ম ভোট দেবে সেই বাস্তবতাও নেই। তাই এই বাস্তবতার বিবেচনায় ইশরাকের ঢাকাইয়া আবেগ কতটা কাজে লাগে সেটাই দেখার বিষয়।

শেয়ার করুন !
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!