ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
পাহাড়ি দার্জিলিং জাতের সুমিষ্ট কমলা এখন ঝিনাইদহের সমতল ভূমিতেও ফলছে। প্রবল সম্ভাবনা দেখে সরকারও কমলা চাষের প্রসার ঘটাতে উদ্যোগ নিয়েছে।
জেলার মহেশপুর উপজেলার চাঁপাতলা গ্রামে কমলা চাষে সফল হওয়ার বিষয়ে ওই গ্রামের চাষী রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি ২০১৬ সালে দার্জিলিং বেড়াতে যাই। সেখানে কমলা কাগান দেখে আমার খুব আগ্রহ হয়।
আমি আগে থেকেই আমার নার্সারিতে চারা উৎপাদন করতাম। সেই অভিজ্ঞতা ও আগ্রহ থেকে ২০০ কমলার চারা কিনে আনি। তখন প্রতিটি চারার দাম পড়ে ১০০ রুপি করে। সেই সঙ্গে সেখান থেকে কিছু মাল্টার চারাও কিনে আনি।
রফিকুল বলেন, শুরুতে আমার নিজের ছিল ১ বিঘা জমি। লিজ নিই আরও ৩ বিঘা। এই ৪ বিঘা জমিতে শুরু করি কমলা ও মাল্টার চাষ। এতে প্রায় ৩ লাখ টাকা ব্যয় হয়। বর্তমানে ১২০টি দার্জিলিং জাতের ও ৩০টি চায়না জাতের কমলা গাছে ফল ধরেছে। তাছাড়া ৫০০ মাল্টা গাছেও ফল ধরেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কমলার ভারে নুয়ে পড়েছে গাছের ডাল। পরিচর্যা করছেন নিয়মিত।
রফিকুল বলেন, দার্জিলিং জাতের কমলা ওঠার পর প্রথমে প্রতি কেজি ১২০ টাকা দরে, পরে ১৫০ টাকা দরে বেচেছি। এ বছর কমলা বেচে ৫ লাখ টাকা আয় হয়েছে। ৮০ টাকা কেজি দরে মাল্টা বিক্রি করে ৬ লাখ টাকা আর চায়না কমলা বেচে ২৪ হাজার টাকা আয় হয়েছে।
বর্তমানে ২৫ বিঘা ফলের বাগান আছে জানিয়ে রফিকুল বলেন, এ বছর এ পর্যন্ত ৫ লাখ টাকার চারা বিক্রি করেছি। কমলার চারা প্রতিটি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। বাগানে জৈবসারের পাশাপাশি পটাশ ও টিএসপি ব্যহার করি।
রফিকুলের সফলতা দেখে এখন অনেকেই কমলা চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ তার দৃষ্টিনন্দন কমলা বাগান দেখতে আসেন।
জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার সেলিম আহমেদ বলেন, আমি লোকমুখে খবর শুনে রফিকুলের বাগান দেখতে এসেছি। কমলা খেয়েছি। তার কমলা আকারে বড় ও মিষ্টি।
এই কমলা চাষের প্রসার ঘটাতে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তরের উপ-পরিচালক কৃপাংশু শেখর বিশ্বাস।
1.9K