আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
করোনা আত’ঙ্কে কাঁপছে বাংলাদেশসহ পুরো বিশ্ব। ইতিমধ্যে ১০৪টি দেশ ও অঞ্চলের প্রায় ১ লাখ ৬ হাজার ১৯৫ জন এই ভাইরাসে আক্রা’ন্ত হয়েছে। সৌদি সরকার করোনা ভাইরাস ঠেকাতে পবিত্র নগরী মক্কায় ওমরা এবং মদিনা জিয়ারতে নিষে’ধাজ্ঞা জারি করাকে শরিয়তসম্মত বলেছেন মক্কা-মদিনার প্রধান ইমাম শায়খ আব্দুর রহমান আস সুদাইসি।
তিনি বলেন, সংক্র’মণজণিত যে কোনো ম’হামারি বা রোগ-ব্যধি ছড়িয়ে পড়লে তা থেকে দেশের মানুষকে নিরাপত্তা দেয়া সরকারের প্রথম কাজ। সম্প্রতি করোনায় আক্রা’ন্ত ১০৪টি দেশ। এ ইস্যুতে সৌদি সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা ইসলামি শরিয়তের আইনের সীমানা ও ইসলামি নীতিমালার প’রিপন্থী নয়।
সৌদি গণমাধ্যম আল আরাবিয়া সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার কাবা শরিফের জুমার খোতবায় খতিব শায়খ আব্দুল্লাহ আল-জুহানি ও মসজিদে নববির জুমআর খোতবায় খতিব শায়খ সালেহ আল বাদিরও প্রধান ইমামের এ মতকে সমর্থন করে জুমার বয়ানে এর যৌক্তিকতা ও গুরুত্ব তুলে ধরেন।
শায়খ আব্দুল্লাহ আল-জুহানি কাবা শরিফে জুমআর খোতবায় বলেন, পবিত্র দুই মসজিদে খাদেম বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ ও ক্রাউন প্রিন্স মুহাম্মাদ বিন সালমান করোনা প্রতিরো’ধে ওমরাহ পালনের ওপর নিষে’ধাজ্ঞা জারি করতে সৌদি প্রশাসনকে যে নির্দেশনা দিয়েছেন তা শরিয়তের প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
করোনা ভাইরাসের মতো মা’রাত্মক ম’হামারিতে সতর্কতা অবলম্বনের জন্য মসজিদে হারাম এবং মসজিদে নববিতে ইশার নামাজের ১ ঘণ্টা পর বন্ধ করে দিয়ে ফজরের ১ ঘণ্টা আগে খুলে দেয়া হয়। সতর্কতামূলক এ সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক মনে করেন দুই পবিত্র মসজিদের প্রধান ইমাম শায়খ সুদাইসি।
তিনি বলেন, সংক্রা’মণজনিত যে কোনো ভাইরাস ও রোগ-ব্যাধির প্রভাব থেকে মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববির পরিবেশকে সুরক্ষা দেয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। এ দায়িত্ববোধ থেকেই সৌদি সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েয়েছে।
এ দিকে ২ মার্চ থেকে কাবা শরিফের মূল মাতআফেও (তাওয়াফ করার চত্ত্বর) তাওয়াফ বন্ধ ছিল। মসজিদে হারামের ২য় ও ৩য় তলার উপর দিয়ে কাবা শরিফের তাওয়াফ অ’ব্যাহত ছিল।
শায়খ সুদাইসি জানান, বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ শুধু তাওয়াফ করার জন্য কাবা শরিফের মূল মাতআফ খুলে দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন।
বাদশাহ সালমানের নির্দেশের পর থেকে শনিবার (৭ মার্চ) ফজর থেকে কাবা শরিফের মূল চত্ত্বরে তাওয়াফ শুরু করেছেন।
তবে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ওমরাহ বন্ধ থাকবে বলেও জানা গেছে। পবিত্র এ দুই মসজিদকে করোনা ভাইরাসমুক্ত রাখতে সবাইকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, করোনা ভাইরাসের প্রভাব থেকে দুই পবিত্র মসজিদকে মুক্ত রাখতে ওমরাহ পালন ও জিয়ারতের ওপর সাময়িক নিষে’ধাজ্ঞার পাশাপাশি অ’নির্দিষ্টকালের জন্য উভয় মসজিদে ইতেকাফ, বিছানাপত্র বিছানো ও খাবার-দাবার আনা-নেয়া নিষি’দ্ধ করা হয়েছে। জমজম পানির কুলারগুলোও বন্ধ রাখা হয়েছে।