সময় এখন ডেস্ক:
বিজ্ঞানীরা জ্বীনদেরকে দিয়ে বড় বড় কাজ করায়, এমনই দাবি করেছেন আলোচিত ইসলামি বক্তা মাওলানা তারেক মনোয়ার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ওয়াজের ভিডিওতে দেখা যায় তিনি বলছেন-
“আমেরিকার সবচেয়ে পুরনো ব্রিজ, ওয়াশিংটন ব্রিজ, বেলেডনা ব্রিজ। আড়াইশ বছর পুরনো। ২৭শ কোটি নাট-বল্টু এটার ভেতরে। বিশাল বিশাল লোহা। একেক লোহা পাঁচশ টন, ছয়শ টন লোহা- উঠিয়েছে কেমনে? জ্বীনকে দিয়ে উঠিয়েছে। জ্বীনদেরকে দিয়ে, অবশ্যই জ্বীনদেরকে দিয়ে উঠিয়েছে। আগের সায়েন্টিস্টরা, এরা জ্বীন পালতো। খারাপ জ্বীন পালতো। যদি বলে যে, কোনো হুজুর জ্বীন ডাকে, বুঝবেন ইগা কাফের। এটা কুফরী করেছে।
কুফরী করার কারনে জ্বীনটা, খারাপ জ্বীনটা, কাফের জ্বীনটা তার কথা শোনে। খারাপ জ্বীনকে বশে আনতে, কাফের জ্বীনকে কোরান শরীফের উপর পেশাব করতে হয়। জোরে বলেন নাউযুবিল্লাহ। এদেশের বহু ভণ্ড পীর এই কাজ করে, জ্বীনকে হাত করেছে। আগের সায়েন্টিস্টগুলো কাফের, মুশরিক, ইহুদি। সায়েন্টিস্টগুলো জ্বীনকে হাত করে এরপর এই লোহাগুলো তারা সরানোর ব্যবস্থা করেছে।”
এমন অ’বাস্তব, অ’বৈজ্ঞানিক, আজগুবি ও কাল্পনিক ওয়াজ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আলোচিত এই বক্তা। অনেককেই বিনোদন হিসেবে ইউটিউব ও ফেসবুকে তার ওয়াজ শেয়ার করতে দেখা যায়।
তারেক মনোয়ার ইতিপূর্বে জানান, হেলিকপ্টার একটি অ’স্বাস্থ্যকর পরিবহন। তাই চড়তে অ’স্বস্তি লাগে। রকেটই উত্তম মনে হয়েছে তার কাছে। তিনি বেশ কয়েকবার রকেট চড়েছেন। এ প্রসঙ্গে ওয়াজে তিনি বলছেন, আমি হেলিকপ্টারে উঠতে চাইনা। হেলিকপ্টারের চেয়ে বেশি দ্রুতগামী রকেটে আমি চড়েছি কয়েকবার। হেলিকপ্টারটা অ’স্বাস্থ্যকর একটা জিনিস। যদিও আমাদের কারো কারো কাছে এটা আকর্ষণীয়। কিন্তু আমার কাছে এতে কোনো আকর্ষণ নেই।
অতি সম্প্রতি তারেক মনোয়ারের একটি ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায় তিনি বলছেন, পৃথিবীতে সবচেয়ে পয়সাওয়ালা হলেন বেলগ্রেড, আইফোনের মালিক। দেখা হয়েছে আমার সাথে… আমার কাছে তাকে মনে হয়েছে একটা টিকটিকি।
উল্লেখ্য, তিনি সম্ভবত বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি বিল গেটসকে বুঝিয়েছেন। যদিও প্রকৃতপক্ষে বিল গেটস আইফোনের উৎপাদনকারী কোম্পানি অ্যাপলের মালিক নন।
অন্য আরেকটি ওয়াজে তারেক মনোয়ারকে বলতে শোনা যাচ্ছে, আমি অক্সফোর্ডে ৩ বার শ্রেষ্ঠ টিচার হয়েছি, আজকেই ফট করে বলে ফেললাম। এটা কেউ জানে না.. আমার পরিবারও জানে না। অক্সফোর্ডের সিলেবাসে ইংল্যান্ড আমেরিকার স্কুলগুলো চলে। তিনি আরও জানান, ১৯৯০ সালে তিনি ‘বেস্ট টিচার’ নির্বাচিত হয়েছিলেন।
এছাড়াও ভাইরাল হওয়া অপর একটি ভিডিওতে তারেক মনোয়ার নিজেকে নব্বইয়ের দশকে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের ফুটবলার বলে দাবী করে বলেন, ভালো খেলতাম…, অনেক ভালো খেলতাম…। ৩/৪টা গেইম তো খুব ভালো খেলতাম। ঢাকার চ্যাম্পিয়নশিপ পুরষ্কারও আছে আমার ব্যাডমিন্টনে।
তারেক মনোয়ার আরও বলেন, ফুটবল….ইংল্যান্ডে গিয়ে লীগে (ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ) খেলেছি। ১৯৯০ সাল…। অত্যন্ত কম বয়স। পয়সা দিয়ে নিয়ে যেত খেলার জন্য। ভালোই ইনকাম…। শেষে দেখি যে পুরাটা হারাম।
অন্য আরেক ভিডিওতে দেখা গেছে তিনি দাবি করছেন, ১৯৯০ সালে তিনি ইংল্যান্ডের ব্রাইটন ইসলামিক সেন্টারের খতিব ছিলেন। সে সময়ে তিনি একজন ব্রিটিশ মডেলকে ইসলাম গ্রহণ করান বলেও দাবি করেন।
৯০ সালে একই সাথে মসজিদের খতিব থাকা এবং ফুটবল লিগে খেলার দাবিকে অনেকে হাস্যকর ও অ’সত্য বলে মনে করছেন। এ নিয়ে ফেসবুকে অনেকে তারেক মনোয়ারের সমালোচনায় সরব হলেও কেউ কেউ তার পক্ষেও দাঁড়াচ্ছেন।
ভিডিও:
3.7K