নরসিংদী প্রতিনিধি:
❝রাত ২টা ৪৯ মিনিট। আবছা অন্ধকার। আকাশ ও জমিনে আলো-আঁধারির খেলা। দমকা বাতাস। মেঘনা নদীর দক্ষিণ কূল। বেপারিপাড়া শ্মশানঘাট। চারদিক নিস্ত’ব্ধ হলেও দূরে মিটিমিটি আলোর রেখা মৃদু দুলছে।
শ্মশানপাড়ের বটগাছের শাখা-প্রশাখা, পত্রপল্লব দমকা হাওয়ায় নেড়ে উঠছে প্রতিনিয়ত, যেন স্বজনহারা পৃথিবীর মতো হু হু করে ডুকরে গুমরে বিলাপ করছে। তার সঙ্গে স্বজনহীন এ প্রান্তরে তিনটে কুকুরের বুকফাটা আহাজারিই যেন মধ্যরাতের অ’ব্যক্ত একমাত্র রোনাজারি। বটতলায় জীর্ণ ভ্যান।
ওপরে সৃষ্টির সেরা জীব- যা ক্ষণিক আগেই হয়েছে অ’জীব। শ্মশানে চলছে ভী’ত-সন্ত্র’স্ত অন্তিম প্রস্তুতি। দু’জন শবদাহের প্রস্তুতি শেষ করল। শবের একমাত্র উত্তরসূরি অগ্নিমুখ করেই দূরে সরে গেলেন। ধিকিধিকি জ্বলতে থাকল শবাগ্নি। যেন চাপা ভ’য় থেকে হাঁপ ছেড়ে বাঁচা গেল। কিন্তু এ কেমন বেঁচে যাওয়া। নাকি ম’রেই বেঁচে গেলেন বলরাম দাস?❞
করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃ’তব্যক্তির লা’শ সৎকার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এমন আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়ে ভাইরাল হলেন নরসিংদীর সদর উপজেলা কমিশনার (ভূমি) মো. শাহ আলম মিয়া।
শনিবার রাত ১০টার দিকে নরসিংদী শহরে করোনা উপসর্গ নিয়ে বলরাম দাস (৪৫) নামে এক ব্যক্তি মৃ’ত্যুবরণ করেন। তার লা’শ সৎকার করতে আত্মীয় স্বজনসহ কেউ এগিয়ে না এলে গভীর রাতে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে লা’শ সৎকার করতে এগিয়ে আসেন এসিল্যান্ড মো. শাহ আলম।
তিনি তার ফেসবুক আইডিতে রবিবার সকাল ৮টায় এক আবেগঘন স্ট্যাটাস দিলে মুহূর্তেই স্ট্যাটাসটি ভাইরাল হয়ে যায়।
এসিল্যান্ড শাহ আলম এর এমন হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া স্ট্যাটাসে মন্তব্য করেন অনেকেই। জানিয়েছেন অনেকেই আবেগময় প্রতিক্রিয়া।
রাজু দাস নামের একজন লিখেছেন, বেঁচে থাকতে হয়ত এই মানুষটিই পরিবারের সবার মুখে আহার জুগিয়েছেন, সবার সকল সমস্যা, রোগে নিজের আরাম আয়েশ ত্যাগ করে করেছেন সেবা, দিয়েছেন ওষুধ-পথ্য। কিন্তু শেষ সময়ে তিনি পেলেন না কারো সাহচর্য্য! হায়রে মানুষ!