বরিশাল প্রতিনিধি:
বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জে একটি মাদ্রাসার অফিস সহকারীকে মা’রধরের পর গলায় জুতার মালা পরানোর ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ জুন) মামলা দায়েরের পর অভিযুক্ত দড়িরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নির্যা’তিত মাওলানা শহিদুল ইসলাম আলাউদ্দিন মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার দরিচর-খাজুরিয়া দাখিল মাদ্রাসার অফিস সহকারী। উপবৃত্তির টাকা তছরুপের অভিযোগ গত বুধবার বিকেলে দরিচর-খাজুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে গিয়ে জুতার মালা পরিয়ে তাকে লা’ঞ্ছিত করা হয়।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত উপজেলার দরিচর-খাজুরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা রাঢ়ী, স্থানীয় ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার শহীদ দেওয়ান, সাবেক মেম্বার ইউনুস বয়াতি ওরফে কামরুজ্জামান, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আব্দুস ছত্তার সিকদারসহ ১০ জনসহ আরও ৫/৬ জনকে অ’জ্ঞাত আসামি করে মেহেন্দিগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মেহেন্দিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবিদুর রহমান জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকা দরিচর-খাজুরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা রাঢ়ী এবং স্থানীয় বজলু আকনসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।
এদিকে, মাদ্রাসার অফিস সহকারীকে জুতার মালা পরানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সর্বত্র তোলপাড় শুরু হয়। ওই ভিডিওতে চেয়ারম্যান মোস্তফা রাঢ়ী, সাবেক মেম্বার আব্দুস ছত্তার সিকদার এবং চৌকিদারসহ কয়েকজনকে দেখা যায়।
ঘটনার কারণ উল্লেখ করে স্বামী আলাউদ্দিনের বরাত দিয়ে স্ত্রী নাহিদা সুলতানা জানান, গত ২০১৯ সালে উপবৃত্তির তালিকা পাঠানোর সময় এক ছাত্রী মাদ্রাসায় উপস্থিত না থাকায় নিজের একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে তিনি ছাত্রীর নাম অন্তর্ভূক্ত করেন। এরপর দীর্ঘদিন ওই নম্বরটি তিনি ব্যবহার করতেন না। নিয়ম অনুযায়ী এক বছরের উপবৃত্তির ১ হাজার ৮০০ টাকা ওই মোবাইল নম্বরে জমা হয়। ওই টাকা ছাত্রীকে বুঝিয়ে দেওয়ার আগেই গত ৩০ মে তাকে মা’রধর করে সিম কার্ডটি নিয়ে যায় ছাত্রীর খালু সাবেক ইউপি মেম্বার ছত্তার সিকদার। এরপর বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা অফিসারের কাছে বিচার দিলে এমন ঘটনা ঘটায় তারা।
তিনি আরও বলেন, টাকা তছরুপের ইচ্ছে থাকলে আমার স্বামী গোপনে টাকা উঠিয়ে ফেলতে পারতেন, তবে তিনি তা করেননি। ওই ছাত্রীর স্বজনদের জানানোর আগেই অভিযুক্তরা এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন।