স্বাস্থ্য বার্তা ডেস্ক:
করোনা ভাইরাস শনাক্তে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত কিট (র্যাপিড ডট ব্লট) কার্যকর নয় বলে মন্তব্য করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া।
বঙ্গবন্ধু মেডিকেল হাসপাতালের পক্ষ থেকে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে যে করোনা ভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার জন্য যে র্যাপিড টেস্ট কিট গণস্বাস্থ্য দিয়েছিলো পরীক্ষায় সেগুলো কার্যকর বলে প্রমাণ হয়নি।
বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য কনক কান্তি বড়ুয়া এক সংবাদ সম্মেলনে অবশ্য বলেন, যেসব এলাকায় পিসিআর সুবিধা নেই সেখানে একটি সহায়ক হতে পারে। দেশীয় একটি প্রতিষ্ঠানের তৈরি করা কিটের মূল্যায়ন করতে পেরে আমরা আনন্দিত। যারা এ কিটের আবিষ্কার করেছে তাদের ধন্যবাদ জানাই।
তিনি জানান ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর বঙ্গবন্ধু মেডিকেলকে ১ বছর সময় দিলেও বাস্তবতার নিরিখে ১ মাসের মধ্যে গবেষণা শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করে গবেষণা দল।
মোট ৫০৯টি রক্ত স্যাম্পল পরীক্ষার মাধ্যমে ১ মাস সময়ের মধ্যে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের গবেষণা দলের কার্যক্রম শেষ হয় বলে জানান তিনি।
করোনা কিটে বড় ত্রু’টি, স্বীকার করে BSMMU-কে চিঠি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র’র
গত ২ জুন নিজেদের উদ্ভাবিত কিটে বড় মাপের ত্রু’টি পেয়ে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষকে এই কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষা সাময়িকভাবে স্থ’গিত করার অনুরোধ জানায় গণস্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়ার কাছে পাঠানো এক লিখিত আবেদনে এ অনুরোধ জানান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জিআর কোভিড-১৯ র্যাপিড ডট ব্লট প্রকল্পের কো-অর্ডিনেটর ডা. মুহিব উল্লাহ খন্দকার।
বিএসএমএমইউতে কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষা ও মতামতের জন্য ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরামর্শে ৫০০ অ্যান্টিবডি কিট ও ৫০০ অ্যান্টিজেন কিট হস্তান্তর করা হয়েছিল। বিষয়টি উল্লেখ করে আবেদনপত্রে বলা হয়, অ্যান্টিজেন কিটের আভ্যন্তরীণ কার্যকারিতা পরীক্ষায় নমুনা হিসেবে লালা সংগ্রহের কোনো ইনভ্যাসিভ প্রসিডিউর প্রয়োজন হয় না। লালা ব্যবহার করে ভালো ফল পাওয়ায় আমাদের আবেদনে আপনারা নমুনা হিসেবে লালা পরীক্ষার অনুমোদন দিয়েছেন।
আবেদন পত্রে বলা হয়, সম্প্রতি জিআর কোভিড ১৯ র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট কিটের নমুনা যথাযথ প্রক্রিয়ায় সংগ্রহে অ’সামঞ্জস্যতা পাওয়ায় সঠিক ফলাফল নির্ণয়ে জটিলতা তৈরি হচ্ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অ্যান্টিজেন শনাক্তকরণের জন্য যথাযথ উপকরণ লালার নমুনায় থাকছে না বা অন্য বস্তুর মিশ্রণ লক্ষণীয়। সম্মিলিত মনিটরিং টিম এই সমস্যাটি চিহ্নিত করেছে। গণস্বাস্থ্য আরএনএ বায়োটেক টিম এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য তাদের আরএন্ডডি ল্যাবে সুনির্দিষ্টভাবে সর্বোপরি ব্যবহারযোগ্য লালা সংগ্রহ পদ্ধতি প্রয়োগের কাজ শুরু করেছে। শিগগিরই বিষয়টি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র জানাতে পারবে উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে।
এ অবস্থায় গণস্বাস্থ্যের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানিয়ে বলা হয়, আমাদের লালা সংগ্রহের সঠিক পদ্ধতি নির্ধারিত না হওয়া পর্যন্ত অ্যান্টিজেন টেস্ট কিটটির পরীক্ষা বন্ধ রাখার অনুরোধ জানাচ্ছি। প্রয়োজনে আমরা এই দুইটি লট ফেরত এনে নতুন লট বদলে দেবো।
সেই সাথে অতি দ্রুত অ্যান্টিবডি কিটের সকল কাজ শেষ করে তার ফলাফল ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কাছে দিতে চিঠিতে অনুরোধ জানায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। আজ ১৭ জুন, বুধবার সেই ফলাফল জানানো হয়েছে।