স্বাস্থ্য বার্তা ডেস্ক:
করোনা ভাইরাসে আক্রা’ন্ত রোগীদের চিকিৎসা বিষয়ে ডেক্সামেথাসোন এর ব্যবহার নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন বিষয়ে জানালেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ।
মহামা’রী কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসের চিকিৎসায় প্রথম জীবন রক্ষাকারী ওষুধ আখ্যা দিয়ে ডেক্সামেথাসোন নিয়ে দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে প্রচুর খবর প্রকাশিত হচ্ছে। সবার জ্ঞাতার্থে বলতে চাই, ডেক্সামেথাসোন নতুন কোনো ওষুধ নয়। ৪০-৫০ বছর ধরে ডেক্সামেথাসোনের ব্যবহার চলে আসছে। ডেক্সামেথাসোন মূলত একটি স্টেরয়েড। অনেক রোগীদের চিকিৎসায় আমরাও ডেক্সামেথাসোন ব্যবহার করেছি।
ডেক্সামেথাসোন জীবন রক্ষাকারী ওষুধ। গুরুতর ক্ষেত্রে যেমন মানুষ অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে সে ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করা হয়, কিংবা প্রেসার কমে গেলেও এটি ব্যবহার করা হয়। তীব্র শ্বাসক’ষ্টের রোগীদের ক্ষেত্রে, বিভিন্ন রকমের আথ্রাইটিসের চিকিৎসায় ডেক্সামেথাসোনের ব্যবহার রয়েছে। সিরিয়াস অ্যালার্জির চিকিৎসায় এর ব্যবহার রয়েছে।
ডেক্সামেথাসোন যেহেতু একটি স্টেরয়েড তাই এর কিছু সাইড ইফেক্টও আছে। এটি অনেক দিন ধরে ব্যবহার করলে মানুষ মোটা হয়ে হয়ে যায়। এছাড়া উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে। ডায়াবেটিস হতে পারে, হাড় ক্ষ’য়ে যেতে পারে; এমনকি ফ্র্যাকচার হয়ে যেতে পারে। সেই সাথে পেটে আলসার হতে পারে, রক্ত জমাট বেঁধে যেতে পারে। ডেক্সামেথাসোন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকেও কমিয়ে দেয়। এর অ’পরিকল্পিত ব্যবহারে সেকেন্ডারি কোনো ব্যাকটেরিয়ার সং’ক্রমণ হতে পারে।
আমাদের বুঝতে হবে, ডেক্সামেথাসোনের মা’রাত্মক কিছু সাইড ইফেক্ট আছে। করোনা ভাইরাসে সং’ক্রমিত হলে শুরুতেই ডেক্সামেথাসোন ব্যবহার করা যাবে না। কেউ যেন নিজের ইচ্ছে মতো দোকান থেকে কিনে ডেক্সামেথাসোন ব্যবহার না করেন। কর্তব্যরত চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ডেক্সামেথাসোন ব্যবহার করা যাবে না।
ফার্মেসির ওষুধ বিক্রেতাদের প্রতি অনুরোধ কোনো ক্রমেই যেন প্রেসক্রিপশন ছাড়া এ ওষুধ বিক্রি করা না হয়। কারণ তাতে উপকারের চেয়ে অ’পকারের শ’ঙ্কা অনেক বেশি।
লেখক: অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ
পরিচিতি: মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক