বিশেষ প্রতিবেদন:
বাংলাদেশ করোনা সং’ক্রমণের ৪র্থ মাস পার করছে। এই করোনাকালে শুধুই যে জনস্বাস্থ্যের সং’কট শুরু হয়েছে তাই নয়, অর্থনৈতিক সং’কটও দানা বেঁধে উঠেছে। বিশেষ করে প্রান্তিক ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য খাদ্য, জীবিকা এবং বেঁচে থাকা নিশ্চিত করা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে সরকারের সামনে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুরু থেকেই এই বিষয়টির উপর সবথেকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। গরীব মানুষরা যেন ৩ বেলা খেতে পারে সেজন্য একাধিক কর্মসূচী এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছেন।
এই কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে প্রান্তিক মানুষদের জন্য বিনামূল্যে খাদ্য সহায়তা, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর প্রতিটি পরিবারের জন্য আড়াই হাজার টাকা করে ঈদ উপহার এবং ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিতরণ কর্মসূচী। এছাড়াও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষদের জন্য টিসিবির ন্যায্যমূল্যে চাল-ডাল-পেঁয়াজ বিতরণ শহরাঞ্চলগুলোতে অ’ব্যাহত রয়েছে।
তবে বাংলাদেশের মতো একটি জনঅধ্যুষিত দেশে অসংখ্য দরিদ্র মানুষ এবং হঠাৎ বেকার হয়ে যাওয়া অ’নিশ্চয়তার পড়ে যাওয়া মানুষদের খাদ্য সহায়তা দেওয়া একা একটি সরকারের পক্ষে অসম্ভব ব্যাপার। যদিও সরকার ইতিমধ্যে ব্যাপক জনগোষ্ঠীর মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেছে, সহায়তা দান করেছে। কিন্তু এই ত্রাণ বিতরণ এবং সহায়তা কর্মসূচী আমলাতান্ত্রিক বেড়াজালে নানাভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। অনেক মানুষ ত্রাণের আওতায় আসেনি এমন অভিযোগ-ও রয়েছে। কিন্তু এটা নিয়ে তেমন কোন সং’কট তৈরি হয়নি শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের কারণে।
এখন পর্যন্ত করোনা সং’ক্রমণের ৪ মাস পেরোতে চললেও কোন মানুষ না খেয়ে থাকেনি, কোন মানুষ অ’নাহারে ক’ষ্ট পায়নি। এর মূল কারণ হলো আওয়ামী লীগের তৃণমূল সংগঠন। যদিও করোনা সং’কটের সময় কিছু ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানসহ কয়েকজন জনপ্রতিনিধিদের বিরু’দ্ধে ত্রাণ লোপাটের অভিযোগ আছে। প্রায় শতাধিক স্থানীয় পর্যায়ের জনপ্রনিধিকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বরখা’স্ত করেছে।
কিন্তু বাস্তবতা হলো এই, আমলারা যেখানে পারেনি, সেখানে প্রান্তিক পর্যায়ে তৃণমূল পর্যন্ত সব দরিদ্র মানুষের কাছে খাবার পৌঁছে দিয়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই। দেশের বিভিন্ন স্থানে তৃণমূল আওয়ামী লীগ এবং তার অঙ্গসহযোগী সংগঠনগুলো জনগণের কাছে সার্বক্ষণিকভাবে ত্রাণ সহায়তা, খাদ্য সহায়তা এবং আর্থিক সহায়তা দিয়ে এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে এবং এই করোনা সং’কটে আওয়ামী লীগ তার শক্তির বিপুলত্ব আরেকবার প্রমাণ করেছে।
মজার ব্যাপার হলো, বাংলাদেশে অনেক রাজনৈতিক দল রয়েছে। এই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে ঢাকাকেন্দ্রিক ত্রাণ তৎপরতা এবং ঢাকাকেন্দ্রিক বক্তৃতা-বিবৃতির মাঝেই দেখা গেছে। দূর্গম, প্রান্তিক অঞ্চলে তাদের দলের টিকিটি পর্যন্ত দেখা যায়নি। অনেক স্থানে প্রশাসনও ত্রাণ সহায়তা পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছে, কিন্তু সেখানে আওয়ামী লীগের তৃণমূল সংগঠন ঠিকই পৌঁছে গেছে। সাধারণ জনগণের সাহায্যার্থে একমাত্র সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগ আবির্ভূত হয়েছে।
অন্যদিকে বিএনপি এখন পর্যন্ত যে ত্রাণ সহায়তা করেছে তা ঢাকাকেন্দ্রিক। দূর্গম অঞ্চলগুলোতে যেখানে অ’সহায়দের কাছে ত্রাণ পৌঁছানো কঠিন সেখানে তো তারা যায়নি, ঢাকার বাইরেও তাদের কার্যক্রম খুব একটা চোখে পড়েনি। সংসদের বিরো’ধী দল জাতীয় পার্টির ঢাকার ভেতরে মুষ্টিমেয় হাতেগোণা কয়েকটি এলাকায় কিছু ত্রাণ তৎপরতা চোখে পড়েছে। অন্য স্থানগুলোতে তাদের কোন সহায়তা কার্যক্রম দেখা যায়নি।
অন্য রাজনৈতিক দলগুলো হাত-পা গুটিয়ে বসেছিল, সেখানে আওয়ামী লীগের নেতারা স্বপ্রণোদিত হয়ে, নিজে থেকে গত ৪ মাস যাবত গরীব মানুষ, নিম্নবিত্ত মানুষ এমনকি মধ্যবিত্ত মানুষদের খাদ্য সহায়তা কর্মসূচী অ’ব্যাহত রেখেছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এটাই হলো আওয়ামী লীগের শক্তি, আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের সঙ্গে থাকা দল, তৃণমূলের মধ্যে বেড়ে ওঠা দল তা সকল সং’কটে প্রমাণ করে, এবারো প্রমাণ করেছে। আর আওয়ামী লীগের দু-একজন স্থানীয় জনপ্রতিনিধির দূর্নীতি বা দু’র্বৃত্তায়নকে যারা বড় করে দেখছে তারা আওয়ামী লীগের আসল শক্তিকেও উ’পেক্ষা করছে বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
উল্লেখ্য, সরকারি সহায়তার পাশাপাশি আওয়ামী লীগ নিজস্ব উদ্যোগে ত্রাণ কমিটি করেছে, আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয় থেকে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ তৃণমূল পর্যন্ত এই ত্রাণ কার্যক্রম যেন সুষ্ঠভাবে হয় তা পরিচালনা করছেন।
2.1K