আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
বিশ্ব শীঘ্রই করোনা ভাইরাসের একটি কার্যকর ভ্যাক্সিন পেতে যাচ্ছে বলে আশা প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় সং’ক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অ্যান্থনি ফাউচি।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেছেন, এর মধ্য দিয়ে মহামা’রির অবসান ঘটাবে। ভ্যাক্সিনের প্রাথমিক পরীক্ষার ফলাফলকে ‘উৎসাহব্যঞ্জক’ আখ্যা দিয়ে এমন আশাবাদের কথা জানিয়েছেন স্বনামধন্য এই বিজ্ঞানী।
সং’ক্রমণের সংখ্যা ও মৃ’ত্যুর ক্ষেত্রে বিশ্বে শীর্ষ অবস্থানটি যুক্তরাষ্ট্রের। সেখানে প্রাণহা’নির সংখ্যা ১ লাখ ১৮ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। করোনা ভাইরাসের মূলকেন্দ্র হয়ে ওঠা নিউ ইয়র্ক ও নিউজার্সি তাদের সং’ক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলেও ২০টি অঙ্গরাজ্যে সং’ক্রমণ বাড়তে দেখা যাচ্ছে।
ক্যালিফোর্নিয়া ও টেক্সাসের মত যে এলাকাগুলোতে সং’ক্রমণের হার বাড়ছে, সেখানে লকডাউনের প্রয়োজন আছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিসের পরিচালক ফাউচি বলেন, আমার মনে হয় না, লকডাউনে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে আর কথা বলার কিছু আছে।
বিজ্ঞানীদের মধ্যে অনেকেই সার্স-কোভিড-২ ভাইরাসের জন্য ভ্যাক্সিন তৈরির প্রচেষ্টাকে ‘মুনশট’ আখ্যা দিয়েছেন। তাদের যুক্তি করোনা ভাইরাসের জন্য সফল টিকা কখনও তৈরি হয়নি। এক দশকের বেশি সময় ধরে প্রচেষ্টার পরও এইচআইভির কোনো টিকা পাওয়া যায়নি।
তবে ফাউচি বলছেন, করোনা ভাইরাসের টিকার সঙ্গে এইচআইভির টিকার তুলনা করা যাবে না। করোনা ভাইরাসের টিকার বিষয়ে আমি আত্মবিশ্বাসী, কারণ এই ভাইরাসে আক্রা’ন্ত অধিকাংশ রোগী এ থেকে মুক্তি পেয়েছেন। তাদের ইমিউন সিস্টেম বা প্রতিরোধী ক্ষমতা ভাইরাসটিকে পরাস্ত করতে পেরেছে। এ থেকে বোঝা যায়, প্রকৃতি আপনার কাছে প্রমাণ হাজির করেছে যে এটি দূর করা সম্ভব।
প্রসঙ্গত, চীনের উহানের একটি ভাইরোলোজি ল্যাব থেকে করোনা ছড়িয়েছে- মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ বিভিন্ন অ-নির্ভরযোগ্য মাধ্যমে ওঠা এই দাবি মে মাসের শুরুর দিকে এক বক্তব্যের মাধ্যমে নাকচ করে তার পক্ষে যুক্তি দেখিয়েছিলেন বিজ্ঞানী ড. অ্যান্থনি ফাউচি।
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ড. ফাউচি বললেন, ভাইরাসটি বনাঞ্চল থেকে আনা হয়েছে কিংবা গবেষণাগার থেকে ছড়িয়েছে এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। আপনি যদি বাদুড় বা অন্য কিছুর মধ্যে এই ভাইরাসের বিবর্তন খেয়াল করেন, তাহলে খুব ভালোভাবে বুঝতে পারবেন যে এটি কৃত্রিম নয় কিংবা ইচ্ছা করে ছড়িয়ে দেওয়া হয়নি। পর্যায়ক্রমিক বিবর্তনসূত্র শক্তভাবে নির্দেশ করে যে ভাইরাসটি প্রকৃতি থেকেই প্রাণীদেহে এসেছে।
কারো কারো মতে, কেউ বনাঞ্চলে করোনা ভাইরাস খুঁজে পেয়েছে এবং সেটা ল্যাবে এনে গবেষণার সময় দুর্ঘটনাবশত ছড়িয়ে পড়েছে। বৈজ্ঞানিক প্রমাণের ভিত্তিতে এই দাবিও নাকচ করেছেন ফাউচি।