সময় এখন ডেস্ক:
মানিকগঞ্জ-১ আসনের এমপি ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক নন্দিত ক্রিকেটার নাঈমুর রহমান দুর্জয়কে ঘিরে জেলার সর্বত্র তোলপাড় শুরু হয়েছে। গত কয়েকদিন বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দুর্জয় ও তার ঘনিষ্ঠজনদের নানা অ’নিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, দখ’লবাজি, চাঁদা’বাজি নিয়ে প্রকাশিত খবরই এখন আলোচনা সমালোচনার শীর্ষে। রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে শুরু করে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, অফিস-আদালত, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, চায়ের দোকান সবখানেই একই আলোচনা। ওয়েস্টিন হোটেলে পাপিয়াকান্ড নিয়েও এই সাবেক অলরাউন্ডারের বিরু’দ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিত’র্ক ও আলোচনা-সমালোচনা আছে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের সূত্র ধরেই দুর্জয় এমপি ও তার সহযোগীদের নানারকম দুর্নীতি লু’টপাটের এন্তার তথ্য বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। তার অন্যতম দুর্নীতির একটি হচ্ছে, আরিচা ঘাটের কাছে নদী ভাঙন ঠেকানোর নামে সরকারি টাকায় বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজার দিয়ে যমুনা নদী থেকে বালু উত্তোলন এবং তা নিহালপুরে পরিত্য’ক্ত খন্দকার ইটভাটায় মজুদ করে বিক্রি। এটি সম্পূর্ণ অ’বৈধ কর্মকাণ্ড। বিআইডব্লিউটিএ সাধারণ নাব্য সং’কটের কারণে ড্রেজিং করে। কিন্তু এখানে এবার কোনো নাব্য সং’কট হয়নি। শুধু এমপির বালুর ব্যবসার জন্য এই ড্রেজিং কার্যক্রম চালানো হয়। যে কারণে এবার বর্ষা আসার আগেই আরিচায় নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে।
এ ছাড়া আরিচায় বিআইডব্লিউটিএ’র বিশাল টার্মিনাল দখ’ল করে দীর্ঘদিন ধরে বালুর ব্যবসাও চলছে এমপির নামেই। আরিচা-কাজিরহাট নৌ-র্যুটে অ’বৈধভাবে স্পিডবোটের ব্যবসাটিও পরিচালিত হচ্ছে এমপি দুর্জয়ের নামেই। এ লকডাউনের মধ্যে এমপির কর্মীরা আরিচা ট্রলারঘাটের নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে নিয়ে নেয়। কর্মীরা নৌকার মাঝিদের ঘাট থেকে সরিয়ে দিয়ে নিজেরাই যাত্রীপ্রতি ৫০০ টাকা করে যাত্রী পারাপার করেছে। এমপির চাচা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তায়েবুর রহমান টিপুর অত্যা’চারে শিবালয় এলাকায় কেউ জমি কিনতে পারছে না। কোনো শিল্পপতি জমি কিনতে গেলেই তিনি প্রতি শতাংশে ৫ হাজার টাকা করে দাবি করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। শিবালয়ের আলোকদিয়ার চরে সোলার বিদ্যুৎ প্ল্যান্টের কাজ থমকে গেছে এমপির জন্য। কারণ ওই প্ল্যান্টের মাটি ভরাটের কাজে বাজারদরের চেয়ে অনেক বেশি টাকা দাবি করায় ওই কোম্পানি আর এগোয়নি।
মানিকগঞ্জের শিবালয়, ঘিওর ও দৌলতপুর উপজেলার সব ধরনের ঠিকাদারি কাজ চলে দুর্জয়ের ইঙ্গিতে। তার নিয়ন্ত্রিত দল-উপদলের নেতাদের খুশি না করে সেখানে কোনোরকম কর্মকান্ড চালানোর দুঃসাহস রাখেন না ঠিকাদাররা। হাটবাজার ইজারা নেওয়া, খেয়াঘাট বরাদ্দ পাওয়া, খাসজমি ইজারা পাওয়া থেকে শুরু করে ব্রিকফিল্ডে মাটি সাপ্লাই দেওয়ার ক্ষেত্রেও নির্ধারিত চাঁদা প্রদান করে তবেই পা ফেলা যায়। মাটি খননের নিষি’দ্ধ স্ক্যাভেটর ও ভেকু মেশিন চলে শতাধিক। হাজার হাজার একর পলি জমি মুহূর্তেই ধ্বং’স হয়ে যাচ্ছে। হাইকোর্টের নিষে’ধাজ্ঞা সত্ত্বেও ড্রেজিং চলছে অবিরাম। স্পিডবোট চলছে কাজীর হাট র্যুটে চরম ঝুঁ’কি নিয়ে। এসব ক্ষেত্রে কেবল এমপির নির্দেশনাকে পুঁজি করেই চালাচ্ছে তারা।
প্রতিবেদক: সাঈদুর রহমান রিমন, বাংলাদেশ প্রতিদিন