আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কার করতে গিয়ে ক্লান্তিহীন কাজ করে চলেছেন পৃথিবীর সেরা সেরা বিজ্ঞানী ও গবেষকরা। রাতদিন এক করেও এখনো কোনো কূল কিনারা করতে পারেননি। এর মধ্যেই ভারতের যোগগুরু বাবা রামদেব দাবি করেছেন, করোনার ওষুধ আবিষ্কার করে ফেলেছেন তিনি। পতঞ্জলি আয়ুর্বেদের ‘করোনিল’। তার দাবি, এই ওষুধ খেলে ৭ দিনেই সারবে করোনা, ১০০ শতাংশ নিশ্চিত।
রামদেবের এই দাবি নিয়েই তীব্র সমালোচনা করলেন লোকসভায় কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী। মঙ্গলবার গভীর রাতে বাবা রামদেবকেই টুইটে মেনশন করে কংগ্রেস নেতা লেখেন, ‘আপনি সত্যিই একটা ‘চিটিংবাজ’ বটে। ভোজবাজির মতোই করোনা সারিয়ে দিতে পারেন আপনি!’ এর পরই প্রবীণ এই কংগ্রেস নেতা লিখেছেন, ‘সরকারের উচিত এই গেরুয়া ভেকধারীদের বিরু’দ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।’
অধীর চৌধুরীর এ মন্তব্যের আগেই অবশ্য রামদেবের দাবি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। তার ওষুধ তথা দাবি নিয়ে বিস্তারিত তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে আয়ুষ মন্ত্রণালয়। শুধু তাই নয়, এ ধরনের দাবির কোনো পরীক্ষালব্ধ প্রমাণ না থাকায় ওষুধটির প্রচার, বিজ্ঞাপন, বিপণন– সবই বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
পতঞ্জলির প্রতিষ্ঠাতা বাবা রামদেব গতকালই (মঙ্গলবার) সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেন, তার আবিষ্কৃত আয়ুর্বেদিক ওষুধ ‘করোনিল এবং স্বসারি’ এ পর্যন্ত দেশের ২৮০ জন কোভিড পজেটিভ রোগীর ওপর পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হয়েছিল। ৩ দিনের মধ্যে ৬৫ শতাংশ রোগীর করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। রোগ সেরে গিয়ে সবার শারীরিক অবস্থাই স্থিতিশীল।
রামদেব আরো দাবি করেন, করোনিলের ট্রিটমেন্টে ৭ দিনের মধ্যে ১০০ শতাংশ রোগী সুস্থ হয়ে গেছে। মৃ’ত্যু একটিও নেই। এই সপ্তাহ থেকে সারা দেশে ৫৪৫ টাকার বিনিময়ে এই ওষুধ পাওয়া যাবে বলেও জানান তিনি।
রামদেবের দাবির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে। সেটাই স্বাভাবিক। যে ওষুধের দিকে তাকিয়ে আছে গোটা বিশ্ব, গবেষণায় তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে বিশ্ববিখ্যাত ল্যাবরেটরিগুলো, সেই ওষুধ নাকি এক তুড়িতে আবিষ্কার করে ফেললেন যোগগুরু রামদেব!
এর পরেই আয়ুষ মন্ত্রণালয় পতঞ্জলিকে একটি নোটিশ পাঠিয়ে জানায়, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই ওষুধের উপাদান কী কী তা জানাতে হবে। তিনি যে রোগীদের ওপর গবেষণা করেছেন, তার বিস্তারিত তথ্যও জানাতে হবে। কোন হাসপাতালে এই পরীক্ষা চলেছে, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য এই সংস্থা আদৌ সরকারের কাছে নাম লিখিয়েছিল কি না– সবটাই বিস্তারিত জানতে চেয়েছে মন্ত্রণালয়।
সূত্র- দ্য ওয়াল
206