সময় এখন ডেস্ক:
শ্রমিক এবং পরিবহন ধর্মঘটের প্রসঙ্গে অবধারিতভাবেই তার নাম এসে পড়ে। তিনি নৌপরিবহন মন্ত্রী এবং শ্রমিকনেতা শাজাহান খান। বলা হয়- তার ‘প্রশ্রয়েই’ পরিবহন শ্রমিকরা বেপরোয়া মনোভাব দেখায়। এসব অভিযোগ কিন্তু অনেক পুরোনো। এজন্য পরিবহনসংক্রান্ত যেকোনো বিষয়েই সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হন মন্ত্রী শাজাহান খান।
সড়ক পরিবহন আইন বাতিলের দাবিতে পরিবহন শ্রমিকরা যখন ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট পালন করছে তখন সাংবাদিকরা সচিবালয়ে এ ব্যাপারে মন্ত্রীর মন্তব্য জানতে গিয়েছিলেন। তবে মন্ত্রী সাংবাদিকদের এড়িয়ে গেছেন এবং কোনো মন্তব্য করতে সম্মত হননি।
কর্মসূচি ডাকা সংগঠন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি শাজাহান খান। তার সম্মতিতেই এই কর্মসূচি পালন করছে শ্রমিকরা।
রবিবার ভোর ৬টা থেকে শুরু হওয়া ধর্মঘটে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়ে দেশবাসী। সচিবালয়ের দপ্তর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় অপেক্ষমাণ সাংবাদিকরা এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শাজাহান খান সাংবাদিকদের এড়িয়ে চলে যান। এরপর সাংবাদিকরা প্রশ্ন করতে করতে এগিয়ে গেলে মন্ত্রী যেতে যেতে বলেন, ‘কোনো মন্তব্য নয়।’
এই কর্মসূচিতে নৌমন্ত্রীর ইন্ধন আছে কী না-জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী ‘না, এমনটা নয়। আমরা সংগঠনের সবাই মিলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নৌমন্ত্রী আমাদের সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি। তিনি আইনের কঠিন ধারাগুলো ঠেকাতে চেষ্টা করেছেন, কিন্তু পারেননি।’
সড়ক দুর্ঘটনা বাংলাদেশে বরাবর এক আলোচিত বিষয়। বছরে চার হাজারেরও বেশি মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে বছরজুড়েই আলোচনা হয়। বিশেষজ্ঞরা দুর্ঘটনার জন্য সড়কের প্রকৌশল ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি, চালকদের অতিরিক্ত সময় ধরে গাড়ি চালানো, পথচারীদের যত্রতত্র পারাপার, অতিরিক্ত গতি, অদক্ষ ও লাইসেন্সহীন চালক, সড়কে আইন না মানার প্রবণতাকে দায়ী করে থাকেন। তবে গণমাধ্যমে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চালকের অদক্ষতা এবং আইন লঙ্ঘনের বিষয়টি সামনে আসে। আর পরিবহন শ্রমিকরা এক ধরনের প্রশ্নের মুখে পড়ে গেছেন।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে গত ৩০ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত দেশজুড়ে ছাত্র আন্দোলনের পর গত ৭ অক্টোবর ‘সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’ জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। এই আইনের বেশ কিছু ধারা শ্রমিক স্বার্থের বিরুদ্ধে করা হয়েছে বলে অভিযোগ শ্রমিক ফেডারেশনের। অভিযোগ, এর মাধ্যমে পরিবহন শ্রমিকদের চরম অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।
এ অবস্থায় এই আইনের সংশোধন করা ও বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সমস্যা নিরসনে আট দফা দাবি জানায় শ্রমিক ফেডারেশন। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে তারা ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট ডেকেছে। এরপরও দাবি আদায় না হলে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের হুমকি দিয়েছে শ্রমিকরা।