স্পোর্টস ডেস্ক:
ট্র্যাক রেকর্ড যে খুব আহামরি, তা কিন্তু নয়। টেস্ট পিছু উইকেট প্রায় ৪টি (২৯ টেস্টে ১১৪ উইকেট)। ৪ উইকেট পেয়েছেন ৫ বার। ৫ উইকেট নিয়েছেন ৭ বার। আর ম্যাচে ১০ বা তার বেশি উইকেট পেয়েছেন মাত্র ১ বার।
তারপরও সাকিবের পর তিনিই টেস্টে বাংলাদেশের সেরা ও সফল বাঁ-হাতি স্পিনার। সাকিব না থাকলে তো তাইজুল ইসলামই বাংলাদেশের স্পিন ব্যাটারির প্রধান হা’তিয়ার।
বলে টার্ণ খুব বেশি নেই। তবে তাইজুলের আছে এক জায়গায় অনেকক্ষণ ধরে বল করার ক্ষমতা। ভাল জায়গায় ক্রমাগত বল ফেলার দক্ষতা বেশি বলেই টেস্টে তার বোলিং কার্যকরও খুব; কিন্তু তাইজুল যে অ্যাকশনে বোলিং করতেন, সীমিত ওভারের ফরম্যাটে সেই পুরনো অ্যাকশনে সফল হওয়া ছিল কঠিন।
ওই অ্যাকশনে বোলিং বৈচিত্র্য আনা সহজ ছিল না। সে উপলব্ধি থেকে খানিকটা দেরিতে হলেও অ্যাকশন পাল্টে ফেলেছেন তাইজুল। সেই পুরনো বোলিং অ্যাকশন পাল্টে এই বাঁ-হাতি স্পিনারকে নতুন অ্যাকশনে খুঁজতে উৎসাহ জুগিয়েছেন স্পিন কোচ ড্যানিয়েল ভেট্টোরি।
আজ মঙ্গলবার বিসিবির দেয়া ভিডিও বার্তায় সেই বোলিং অ্যাকশন পাল্টে ফেলার গল্প শোনালেন তাইজুল ইসলাম। তিনি বলেন, মূলতঃ আমার আগের যে অ্যাকশনটা ছিল, তাতে জায়গামত বল করাটা অনেক সুবিধা ছিল; কিন্তু ওই অ্যাকশন ৩ ফরম্যাটে চালিয়ে নেওয়া কঠিন। তাতে বৈচিত্র্যের মাত্রাটা একটু কম ছিল। এখন যে নতুন বোলিং অ্যাকশন, এটা নিয়ে ভেট্টোরির সাথে কথা বলেছি, তিনি আমাকে বলেছেন, এই অ্যাকশন দিয়ে ৩ ফরম্যাটে খেলতে পারবা।
বোলিং অ্যাকশন পাল্টে ফেলার পেছনের কাহিনী জানাতে গিয়ে তাইজুল আরও বলেন, আসলে বিভিন্ন দিক চিন্তা করেই অ্যাকশন পাল্টে ফেলেছি। বলের বাউন্স ও বিভিন্ন বৈচিত্র্যের কথা চিন্তা করে অ্যাকশনটা পরিবর্তন করা।
তাইজুলের অনুভব, এই অ্যাকশন বদলে নাকি এরই মধ্যে ফলও পাচ্ছেন। তার বোলিং বৈচিত্র্য আগের চেয়ে বেড়েছে। তাই তো মুখে এমন কথা, আমি ইতোমধ্যে ফলাফলও পাচ্ছি ব্যাটসম্যানদের বল করে। বৈচিত্র্যের দিকেও সাহায্য করছে নতুন অ্যাকশনটা।
অ্যাকশন বদলে ফেলার পর এখন শেরে বাংলায় তামিম, মুশফিক, মুমিনুল, মাহমুদউল্লাহ, লিটন ও সৌম্য সরকারসহ দেশের প্রায় সব বড় ও প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যানকে নিয়মিত বল করে যাচ্ছেন তিনি।
তাইজুলের বিশ্বাস, শেরে বাংলার সেন্টার উইকেটে দেশের সব বড় বড় ব্যাটসম্যানকে বোলিং করে ওই বদলে ফেলা অ্যাকশনকে আরও আত্মস্থ করে ফেলেছেন। তার দাবি গত ২ সপ্তাহ শেরে বাংলার নেটে বোলিং করায় তার উপকার হয়েছে। এই নতুন বোলিং অ্যাকশনটা তার শরীরের সাথে মানিয়ে গেছে। এখন লম্বা স্পেলে টানা ২ ঘণ্টাও বল করতে পারছেন।
এ সম্পর্কে তাইজুলের ব্যাখ্যা, আমি ব্যক্তিগতভাবে বোলিং নিয়ে কাজ করেছি। আমি ভেট্টোরির সাথে কথা বলেছি যে আমার অ্যাকশনের বিষয়ে, মাঝখানে অ্যাকশন বদলেছিও। ব্যাটসম্যানদেরকে এখন বলও করছি। আমার শরীরের সাথে অ্যাকশনটা মানিয়ে গেছে। এখন ২ ঘণ্টা বোলিং করতেও সমস্যা হচ্ছে না।
আমাদের ব্যক্তিগত কিছু অনুশীলন ছিল, প্রত্যেকটা খেলোয়াড় ১-২ ঘণ্টা করে সেশন করছিল। এই সেশনগুলো করাতে, ব্যক্তিগত অনুশীলন করাতে খেলোয়াড়দের সুবিধাটা হয়েছে- যার যার কাজগুলো নিজের মত করে করতে পারছি। আত্মবিশ্বাস লেভেল বেড়ে গেছে। এখন ব্যাটসম্যানদের বল করা শুরু করেছি ২ সপ্তাহ হচ্ছে। কিছুদিন গেলে আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে যাবে।