বিশেষ সংবাদদাতা:
‘অনেক হয়েছে, আর কোনো প্রতিহিংসার রাজনীতি চাই না। এতে দল আজ ডুবতে বসেছে। অতীতে যা কিছু ঘটেছে, যত ভুল ভ্রান্তি, অপরাধ, সব কিছুর জন্য বিএনপি সবার কাছে মার্জনা চাইবে। তবে যদি জনগণ তাদেরকে আবারও ক্ষমতায় আসার সুযোগ করে দেয়।’ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির খসড়া নির্বাচনী ইশতেহারে এমনটিই জানিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান।
নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়নের সঙ্গে জড়িত দলের এই সিনিয়র নেতা আরও বলেছেন, নির্বাচনে বিএনপির প্রধান ইস্যু হলো গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা এবং বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি।
তিনি স্লোগান দিয়ে বলেন, ‘একটি ভোট, বেগম জিয়ার মুক্তির পথ।’ এটাই আমাদের মূল বক্তব্য।
বিএনপির খসড়া নির্বাচনী ইশতেহারে ১০টি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে। এই ১০টি বিষয় হলো:
১. গণতন্ত্র এবং মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনা।
২. বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি। এই নির্বাচনকে বিএনপি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির গণভোট হিসেবে দেখতে চাইছে।
৩. ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ বিভিন্ন কালো আইন বাতিল করা।
৪. গুম, খুন এবং বিচার বহির্ভূত হত্যা বন্ধ। বিগত দিনে এ সংক্রান্ত ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত।
৫. ব্যাংকিং খাতে দুর্নীতি; রিজার্ভ চুরি ঘটনার তদন্ত। ব্যাংকিং ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা।
৬. বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাজনৈতিক এবং সরকারের প্রভাব মুক্ত করা। স্বাধীন এবং স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে এগুলোকে বিকশিত করা হবে।
৭. দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হবে।
৮. রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর একক কর্তৃত্ব এবং ক্ষমতা হ্রাস করা হবে।
৯. প্রতিপক্ষের ওপর কোনো রাজনৈতিক প্রতিহিংসা না এবং পরম সহিষ্ণু নীতিতে দেশ পরিচালনা করা হবে।
১০. জাতীয় সংসদে উচ্চ কক্ষ প্রতিষ্ঠা করে সেখানে সমাজের গুণীজনদের স্থান করে দেওয়া হবে।
বিএনপির একাধিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপি তাদের নির্বাচনী ইশতেহার মোটামুটি চূড়ান্ত করেছে। নির্বাচনী ইশতেহারে বিগত এক যুগে বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনিয়ম এবং অব্যবস্থাপনার চিত্র তুলে ধরা হবে। বিএনপি তার নিজস্ব ইশতেহারের বাইরেও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারেও একটি ইশতেহার দেবে বলে নেতৃবৃন্দ জানিয়েছে।