সময় এখন ডেস্ক:
বিজয়ের মাসের প্রথম প্রহরে চলে গেলেন বীর প্রতীক তারামন বিবি। এই বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অসীম বীরত্বের জন্য বীর প্রতীক মর্যাদায় ভূষিত দুইজন নারী মুক্তিযোদ্ধার একজন তারামন বিবি।
এক শোক বার্তায় শনিবার রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতি ও স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণ চিরকাল তাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। তিনি তারামন বিবির রুহের শান্তি ও মুক্তি কামনা করেন এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।
প্রধানমন্ত্রী শোকবর্তায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তারামন বিবির অসামান্য অবদান গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্থানি দখলদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করতে তারামন বিবি অস্ত্র হাতে নিয়ে যে সাহসী ভূমিকা পালন করেছিলেন, তার সেই অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
প্রধানমন্ত্রী তার রুহের শান্তি ও মাগফিরাত কামনা করেন এবং তারামন বিবির শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
এদিকে, তারামন বিবির মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন কুড়িগ্রামের অপর দুই খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা শওকত আলী সরকার বীর বিক্রম এবং আব্দুল হাই সরকার বীর প্রতীক।
তারামন বিবির মৃত্যুর খবর পেয়ে তার বাড়িতে ছুটে যান শওকত আলী সরকার। তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন আমাদের সামাজিক সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করে তিনি (তারামন বিবি) যে বীরত্ব ও সাহসিকতা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন তা অবিস্মরণীয়। তিনি শুধু মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য খাবার তৈরি ও পাকিস্থানি সেনাদের খবর সংগ্রহ করেই ক্ষান্ত ছিলেন না, এই বীর কন্যা অস্ত্র হাতে সম্মুখ যুদ্ধেও অংশ নিয়েছিলেন। তার এ অবদান জাতি চিরকাল শ্রদ্ধা চিত্তে মনে রাখবে।’
গভীর শোক জানিয়ে আব্দুল হাই সরকার বলেছেন, ‘তারামন বিবি শুধু কুড়িগ্রাম নয়, এ রাষ্ট্রের গর্ব। বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত দুইজন নারী মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে তিনি একজন। আজ তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ এক বীর সন্তানকে হারালো। মহান আল্লাহ মুক্তিযুদ্ধে তারামন বিবির অবদানকে কবুল করে তাকে জান্নাতের উচ্চতম আসনে সম্মান দান করুন-এই দোয়া করি।’
কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলার নিজ বাসভবনে শনিবার ভোররাতে তারামন বিবি মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৬২ বছর। দীর্ঘদিন ধরে তিনি শ্বাসকষ্টজনিত রোগে।