সময় এখন ডেস্ক:
আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-৩ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী গোলাম মাওলা রনির মনোনয়ন পত্র বাতিল ঘোষণা দেয় জেলা রিটার্নিং অফিসার মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী। রোববার (২ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় এই বাতিল ঘোষণা করা হয়।
হলফনামায় স্বাক্ষর না থাকায় রনির অসম্পূর্ণ মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে বলে জানান জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা।
এছাড়া বিএনপি মনোনীত অপর প্রার্থী মো. শাহজাহান খান ঋণ খেলাপী হওয়ায় তার মনোনয়নপত্রও বাতিল করা হয়েছে। তবে বিএনপি থেকে মনোনীত অপর প্রার্থী হাসান মামুনের মনোনয়ন বৈধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীরা আগামী ৩ দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন বরারব আপিল করতে পারবেন বলে জানান জেলা রিটার্নিং অফিসার মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী।
এর আগে, সকাল সাড়ে ১০টার পর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শুরু হয়। ৩০০ আসনে প্রার্থী হতে আগ্রহী ৩ হাজার ৬৫ জনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শুরু হয়েছে। বাছাই শেষে জানা যাবে যোগ্য প্রার্থীদের তালিকা।
তবে বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হওয়ার পরও কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে চাইলে আগামী ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। এই পর্বের পর ১০ ডিসেম্বর প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেবে নির্বাচন কমিশন। এর পর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবেন প্রার্থীরা
উল্লেখ্য, গত ৮ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। পুনঃ তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৩০ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ। নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার ৯ ডিসেম্বর। আর প্রতীক বরাদ্দ হবে ১০ ডিসেম্বর।
গোলাম মাওলা রনির বিরুদ্ধে অবস্থান স্থানীয় বিএনপির
আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে সদ্য যোগ দেওয়া সাবেক এমপি গোলাম মাওলা রনিকে এ আসনে মনোনয়ন দেওয়ায় স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। রনি ২০০৮ সালে এ আসনে নৌকা প্রতীকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ক্ষমতায় থাকার সময় তিনি স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়েছেন এমন দাবি করেন নেতাকর্মীরা।
দশমিনা উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফখরুজ্জামান বাদল বলেন, ‘রনিকে বিএনপির মনোনয়ন দেওয়ায় আমরা স্থানীয় নেতারা তীব্র নিন্দা জানাই। এই রনি আওয়ামী লীগের এমপি থাকা অবস্থায় বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম ও অত্যাচার চালিয়েছে। ২০১২ সালে ৩টি নাশকতার মামলা দিয়েছে আমার বিরুদ্ধে। জেল খেটেছি। তিনি যদি এ আসন থেকে ধানের শীষে নির্বাচন করেন তাহলে স্থানীয় নেতারা তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন।’
দশমিনা উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘রনি এ আসনের সংসদ সদস্য থাকাকালীন ২০১২ সালের ২২ এপ্রিলের একটি মামলায় আমিসহ ৯ বিএনপি নেতা জেল খেটেছি। এ আসনে আমরা একজন ত্যাগী নেতা চাই, যিনি নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের কথা ভাববেন।’
দশমিনা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রুহুল মোল্লা বলেন, ‘বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী গুম হওয়ার পরের দিন দশমিনায় হরতাল পালন করা হয়। ওই দিন গোলাম মাওলা রনির নির্দেশে ‘ভাইয়া বাহিনী’ বিএনপি অফিস পুড়িয়ে দেয়। অফিসে থাকা খালেদা জিয়া ও জিয়াউর রহমানের ছবি পুড়িয়ে দিয়ে উল্লাস করে। তার বাহিনী দিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার চালাতো। আমরা তাকে ঘৃণা করি। বিএনপি থেকে নির্বাচন করলে তার বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল করা হবে। আমরা মামুন ভাইকে সমর্থন করি। তার পক্ষে আমরা নির্বাচনে কাজ করবো।’