পিরোজপুর সংবাদদাতা:
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পুত্র শামিম সাঈদীর পিরোজপুর-১ আসনে জোটের প্রার্থী হিসাবে ধনের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করার বিষয়টি মেনে নিতে রাজি নয় নাজিরপুর উপজেলা বিএনপি।
সোমবার (৩ ডিসেম্বর) দলীয় কার্যালয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলোচনা সভায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম খান বলেন, রাজাকার সাঈদীর পুত্র শামীম সাঈদীকে মনোনয়ন দিলে আমাদের নিশ্চিত ভরাডুবি হবে। কেননা এখানে তার কোনো ভোট নাই। তাছাড়া তার বাড়ি জেলার ইন্দুরকানী উপজেলায় যা পিরোজপুর-২ আসনে। এছাড়া এখানে প্রশাসনের চাপের মুখে মাঠে কাজ করতে পারবে না দলীয় নেতা-কর্মীরা।
তিনি আরো বলেন, বিএনপিতে ক্লিন ইমেজের প্রার্থী রয়েছেন। সমালোচনার উর্ধ্বে থাকা প্রার্থী হলে আমাদের জন্য ভালো হয়। রাজাকার সাঈদীর ছেলে হওয়ায় তাকে নিয়ে নির্বাচনী মাঠে আমাদের সমস্যা হবে। এ কথা আমরা রেজুলেশনের মাধ্যমে কেন্দ্রেও অবহিত করেছি।
আলোচনা সভায় সাঈদী পুত্রকে জোটের প্রার্থী হিসবে চুড়ান্ত মনোনয়ন দিলে দলীয় কাজ থেকে বিরত থাকার কথা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন উপজেলার শ্রীরামকাঠী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. মোতাহার হোসেন মোল্লা, দীর্ঘার সাধারণ সম্পাদক মো. খায়রুল কবির, মাটিভাঙ্গার সাধারন সম্পাদক মো. শামীম হাসান রুনু, উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচীব মো. হাফিজুর রহমান লায়েক প্রমুখ।
তবে তাদের বক্তেব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে ও দলীয় হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তকে মেনে নিয়ে বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির কনিষ্ঠ সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম লাহেল মাহমুদ, সদর ইউনিয়নের সভাপতি মো. আছাদুজ্জামান শিকদার, সাধারণ সম্পাদক মো. মহর আলী মৃধা, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. মাজেদুল কবির রাসেল, সদস্য সচীব মুহাম্মদ তাওহীদুল ইসলাম প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ড পান সাঈদী। তবে আপিলের রায়ে ২০১৪ সালে দেওয়া হয় আমৃত্যু কারাদণ্ড। সাঈদী পিরোজপুর-১ আসন থেকে একাধিকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত হওয়ায় তিনি আর ভোটে দাঁড়াতে পারবেন না। সাঈদী কারাগারে যাওয়ার পর তার বড় ছেলে শামীম সাঈদীকে পিরোজপুর-১ আসনের জন্য প্রার্থী হিসেবে বাছাই করেছে জামায়াত। পরে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জোটের প্রার্থী হিসেবে তাকে ধনের শীষ প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়।
2