দিনাজপুর প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে জয়রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে স্কুল গান বাজনা বন্ধের নির্দেশ দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে কথিত ‘বাংলাদেশ ইসলামী সচেতন দল’ নামের একটি সংগঠন।
গত ৪ নভেম্বর ওই চিঠি দেওয়ার পর ইসলামী সচেতন দলের সদস্যরা গত ৬ নভেম্বর প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে গিয়ে তাকে প্র’হার করে এবং তাকে হুম’কি দেয়। এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম গত বুধবার (১১ নভেম্বর) উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযুক্তরা হলেন- জয়রামপুরের মৃত মজিবর রহমানের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক (৩৬)। তিনি এলাকায় দুটি কওমি মাদ্রাসা পরিচালনা করেন। অপর অভিযুক্তর নাম আব্দুল ওয়াদুদ (৫৫)। তিনি উপজেলার ১নং বুলাকিপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণরামপুর গ্রামের আব্দুল বারীর ছেলে। পেশায় তিনি কৃষক। আরেক অভিযুক্তের নাম রুহুল আমিন (৩৪)। তিনি একই ইউনিয়নের কৃষ্ণরামপুর গ্রামের আব্দুল ওয়াদুদের ছেলে। পেশায় তিনি অটোরিক্সা চালক।
অভিযোগ জানা যায়, প্রতি বছরের মতো এবারও জয়রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করার জন্য বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম শুরু করা হয়।
গত ৪ নভেম্বর প্রধান শিক্ষক তার কক্ষে প্রবেশ করে মেঝেতে একটি হলুদ খাম দেখতে পান। খামটিতে লেখা ছিল, ‘প্রিয় জয়রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়। একটি শুভ বার্তা।’ এর খাম খুলে বাংলা, আরবি ও ইংরেজি মিশ্রিত লেখা একটি চিঠি পান। চিঠিতে বলা হয়, গান বাজনা করা যাবে না, ইসলামে ইহা নিষি’দ্ধ। নির্দেশ অ’মান্য করলে বিদ্যালয় উ’ড়িয়ে দেওয়াসহ বিভিন্ন হুম’কি দেয়া হয়।
এরপর গত ৬ নভেম্বর প্রধান শিক্ষক তার কক্ষে কাজ করার সময় অভিযুক্ত ৩ জন অফিসে ঢুকে অ’কথ্য গা’লাগাল এবং প্র’হার করেন। এ সময় তারা বলতে থাকেন, তোকে চিঠি দিয়ে নিষে’ধ করা হয়েছে, তারপরও কেন এসব কার্যক্রম চলছে। এ সময় তারা প্রধান শিক্ষকের প্রাণনা’শ করা হবে বলে জানায়। আশপাশ থেকে লোকজন ছুটে এলে তারা স্কুল থেকে হেঁটে বেরিয়ে যায়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাফিউল আলম বলেন, চিঠি পড়ে ও ঘটনা শুনে তাৎক্ষণিক ঘোড়াঘাট থানায় একটি জিডি করার পরামর্শ দিয়েছি। অভিযোগকারী বৃহস্পতিবার ঘোড়াঘাট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।