অর্থনীতি ডেস্ক:
দেশে প্রথমবারের মতো ব’র্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য একটি কেন্দ্র স্থাপনের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আমিন বাজার এলাকায় এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজটি করবে চায়না মেশিনারি ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন (সিএমইসি)৷ ৪২.৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কেন্দ্রটি নির্মাণে ব্যয় হবে ১৫ হাজার ৩২৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।
এ মাসের শুরুতে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ভার্চুয়াল সভায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির অনুমোদন দেয়া হয়। পরে অনলাইনে সভার বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবু সালেহ্ মোস্তফা কামাল।
তিনি বলেন, দেশে প্রথমবারের মতো ব’র্জ্য দিয়ে একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন আমিন বাজার এলাকায় ২৫ বছর মেয়াদী ৪২.৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ব’র্জ্য থেকে বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপন করা হবে। বিদ্যুৎ বিভাগের আওতায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে ১৫ হাজার ৩২৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।
অতিরিক্ত সচিব আরও বলেন, এ কাজটি পেয়েছে চীনের প্রতিষ্ঠান চায়না মেশিনারি ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন (সিএমইসি)। এটা ইনসিনারিয়েশন পদ্ধতিতে ব’র্জ্য পোড়ানোর একটি প্ল্যান্ট। আমরা সেখান থেকে বিদ্যুৎ পাব। দেশে এটি নতুন ধরনের পদ্ধতি যেখানে ব’র্জ্য পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুতের দাম পড়বে ১৮.২৯৫ টাকা।
পরে স্থানীয় সরকার বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ২০ মাসের মধ্যে সিএমইসি এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। চুক্তির মেয়াদ ২৫ বছর। স্পন্সর কোম্পানি নিজস্ব রিস্কে প্ল্যান্ট স্থাপন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বহন এবং উৎপাদিত বিদ্যুৎ বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে বিক্রির মাধ্যমে তাদের ব্যয় নির্বাহ করবে। সিটি কর্পোরেশন প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় জমির সংস্থান এবং নিয়মিত ব’র্জ্য সরবরাহ করবে।
উল্লেখ্য, ইনসিনারেশন প্রক্রিয়ায় ব’র্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রধান সুবিধা হচ্ছে, এই প্রকল্পটি চালু হলে সেখানে প্রতিদিন ৩ হাজার মেট্রিক টন ব’র্জ্য সরবরাহ করতে হবে। এই পরিমাণ ব’র্জ্য সরবরাহ করতে না পারলে উত্তর সিটি কর্পোরেশনকে প্রতি টন ঘাট’তি ব’র্জ্যের জন্য ১ হাজার টাকা হারে স্পন্সর কোম্পানিকে ডেমারেজ দিতে হবে। যেহেতু প্রতিদিন ৩ হাজার টন ব’র্জ্য প্রয়োজন হবে, তাই উল্লেখিত পরিমাণ ব’র্জ্য সংগ্রহ করতে হলে আর যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা পড়ে থাকবে না বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে আরও জানানো হয়, এই প্রকল্পটির সফলভাবে বাস্তবায়ন হলে দেশের সকল সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা এবং জেলা পর্যায়ে ইনসিনারেশন পদ্ধতিতে ব’র্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে সরকার।