বিএনপির যে নেতারা প্রধানমন্ত্রীত্বের স্বপ্নে বিভোর-

0

বিশেষ সংবাদদাতা:

বিএনপির একের পর এক অবান্তর অভিযোগের ফিরিস্তি, হাস্যকর আবদারের পরও সরকার যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে তাদের দাবি বিবেচনা করে যাচ্ছে। তবুও এটা পরিষ্কার নয় শেষ পর্যন্ত তারা নির্বাচনে যাবে কিনা। এরইমধ্যে বিএনপিতে শুরু হয়েছে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব, নেতৃত্বের কোন্দল আর প্রধানমন্ত্রী হবার প্রতিযোগিতা।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জিয়া পরিবারের কেউ অংশগ্রহণ করছেন না। খালেদা জিয়া নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন পত্র জমা দিলেও দণ্ড থাকায় তিনি নির্বাচনে অযোগ্য হয়েছে। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৭ বছরের কারাদণ্ড মাথায় নিয়ে লন্ডনে পালিয়ে আছেন তারেক জিয়া। নেতৃত্বের জন্যই বিএনপি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেয়। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন নিজেও নির্বাচন করছেন না। কাজেই, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট জয়ী হলে ড. কামাল হোসেন যে প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন না এটা মোটামুটি নিশ্চিত।

যেহেতু জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং ২০ দলীয় জোটে বিএনপিই প্রধান দল। কাজেই শেষ পর্যন্ত যদি এই দুই জোট নির্বাচনে জয়ী হয়, তাহলে বিএনপি থেকেই কেউ যে প্রধানমন্ত্রী হবেন তা নিশ্চিত। বিভিন্ন কূটনৈতিক বৈঠকে বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে এই প্রশ্নটি করা হচ্ছে, যে নির্বাচন জিতলে কে প্রধানমন্ত্রী হবেন? বিএনপি খুব সচেতনভাবেই এই প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যাচ্ছে। তারা এটাকে ভবিষ্যতের উপর ছেড়ে দিচ্ছেন। সর্বশেষ ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকেও বিএনপি নেতারা বলেছেন, নির্বাচনের পর সংসদ সদস্যরা মিলে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।

খালেদা জিয়া গ্রেপ্তারের পর থেকে কার্যত বিএনপির নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরই দল পরিচালনা করছেন। কিন্তু ক্ষমতায় গেলে ফখরুল সংসদীয় দলনেতা বা প্রধানমন্ত্রী হবেন, এমন গ্যারান্টি নেই বিএনপিতে। বিএনপির শীর্ষ নেতারা বলছেন, মির্জা ফখরুল মহাসচিব, দলের চেয়ারপার্সন নন।

সূত্র মতে, নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে ততোই দলের সিনিয়র নেতারা তাদের প্রভাব বলয় বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। নিজেদের পক্ষে অধিক সংখ্যক এমপির সমর্থন বাড়ানোর চেষ্টা এখন থেকেই করে যাচ্ছেন তারা। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং সিনিয়র নেতা ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন ইতিমধ্যেই তার ঘনিষ্ঠদের কাছে নির্বাচনে জিতলে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার আকাঙ্খার কথা বলেছেন। বিএনপির মধ্যে তিনিই সবচেয়ে সিনিয়র নেতা যিনি নির্বাচন করছেন। মোশারফ হোসেন বেগম জিয়ার ঘনিষ্ঠ হলেও তারেক জিয়ার সাথে তার দূরত্ব রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী হবার ইচ্ছা গোপন করেননি ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদও। তিনি দলে তার প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। বেগম জিয়া তাকে পছন্দ না করলেও তারেক জিয়া তাকে খুব পছন্দ করেন। দু’দফা লন্ডনে গিয়ে তারেক জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছেন মওদুদ। মির্জা ফখরুল দলে জনপ্রিয় না হলেও, দলের বাইরে জনপ্রিয়। গত দশ মাসে তিনিই বিএনপির মূল নেতা হিসেবে সামনে এসেছেন।

তবে, বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, শেষ পর্যন্ত কে প্রধানমন্ত্রী হবেন তা নির্ভর করবে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়ার ইচ্ছার উপর। কারণ নির্বাচন করুক না করুক, তাদের কথাই বিএনপিতে শেষ কথা।

শেয়ার করুন !
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!