বিএনপির মনোনয়নের লোভ দেখিয়ে ইজ্জত হরণ: নিলোফার চৌধুরী মনির অভিযোগ!

0

বিশেষ সংবাদদাতা:

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য নিলোফার চৌধুরী মনি এবার বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে যৌন কেলেঙ্কারির মত গুরুতর অভিযোগ তুলে মুখ খুলেছেন। বিএনপির এই সাবেক প্রভাবশালী নেতা তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক প্রোফাইল থেকে লিখেছেন-

‘মনোনয়ন এর লোভ দেখিয়ে মা বোনদের ইজ্জত হরন বন্ধ করুন। জনগণ জেগে উঠলে সমস্যা হবে। লন্ডন কিন্তু বেশি দূর না।’

তিনি আরও লিখেছেন-

‘টাকা গেছে লন্ডনে, হামলা হবে পল্টনে? সবই যোগ্য ব্যক্তিদের মনোনয়ন না দেয়ার ফল। টাকাই সব না’

তার এমন ভয়াবহ অভিযোগ বিএনপির এবারের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রদানের বিরুদ্ধে উত্থিত অভিযোগকে আরও উস্কে দিয়েছে। এবারের বিএনপির মনোনয়ন প্রার্থীদের মধ্যে যাদেরকে দল নির্বাচিত করেছে, তাদের অনেকের বিরুদ্ধেই জন সম্পৃক্ততা না থাকা, অর্থের বিনিময়ে মনোনয়ন সংগ্রহসহ নানাবিধ অভিযোগ উঠেছিল। ইতিমধ্যেই এই মনোনয়নকে কেন্দ্র করে বঞ্চিতদের সমর্থকদের দ্বারা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শীর্ষ নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ কয়েকজন নেতা লাঞ্ছিত হয়েছেন। দলের চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়েও হামলা হয়েছে।

তবে এসবের সাথে সাবেক সাংসদ নিলোফার চৌধুরী মনির আনীত অভিযোগটি (যদি সত্যিই হয়ে থাকে) অবশ্যই বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে একটি কলংকজনক অধ্যায় বলে বিবেচিত হবে- এমনটি জানান বিএনপির রাজনীতি থেকে ইস্তফা দেয়া সঙ্গীত শিল্পী মনির খান। ‘বিএনপির রাজনীতি করা ছিল জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল’– প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদ থেকে পদত্যাগকারী এই সঙ্গীত শিল্পী বলেন, মনি আপা যে অভিযোগটি করেছেন, সেটি অবিশ্বাসও করতে পারছি না। কারন এবারের মনোনয়নকে কেন্দ্র করে যা ঘটেছে, সেই বিশৃঙ্খল অবস্থা দেখে রাজনীতির ওপরে বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েছি আমিও।

এর আগে শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে কাজী মনিরুজ্জামান মনিরকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা দেয়ার পর বিক্ষোভে ফেটে পড়েন অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারের সমর্থকরা। তৈমুর মনোনয়ন না পাওয়ায় তার সমর্থকরা চেয়ারপারসন কার্যালয় লক্ষ্য করে ইট ছোঁড়ে। এ সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়িতেও তারা হামলা করে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। সমর্থকরা অভিযোগ করেন, টাকার বিনিময়ে এই আসনের মনোনয়ন বিক্রি হয়েছে।

এদিকে খালেদা জিয়ার প্রয়াত পুত্র আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমানের ‘বিশেষ আবদারের কারনে’ বাদ পড়েন চাঁদপুর-১ (কচুয়া) আসনের জনপ্রিয় নেতা বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এবং সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহছানুল হক মিলনের মত হেভিওয়েট প্রার্থী। যা নিয়ে সমর্থকরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

মিলনের অনুসারীরাও শনিবার নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে তারা কার্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেন। মূল গেটে প্রতিবাদ মিছিল লেখা একটি ব্যানার টাঙিয়ে দেয়া হয়। এ সময় মিলনের স্ত্রী নাজমুন নাহার বেবী ছাড়াও বিক্ষোভে অংশ নেন চাঁদপুরের কচুয়া থানা বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।

বিএনপির মনোননয় নিয়ে এমন লঙ্কাকান্ড দেখে মনোননয়ন পেতে ব্যর্থ বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সিনিয়র সদস্য এবং ব্যারিস্টার (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) ডিবিসি নিউজকে জানান, বিএনপির মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও দল আমাকে বিবেচনায় নেয়নি। আমিও দলের রাজনীতি এবং বর্তমান অবস্থা দেখে হতাশ। মনোনয়ন নিয়ে যা ঘটছে, তা দেখে বিএনপির ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত এখন।

শেয়ার করুন !
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!