সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:
পুলিশ সদস্যের বিচার না হলে বিষ খাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আশাশুনির দুই বীর মুক্তিযো’দ্ধা। গতকাল সোমবার দুপুরে আশাশুনি প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তারা এমন ঘোষণা দেন।
অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের প্রয়াত মানিক চন্দ্র মন্ডলের ছেলে বীর মুক্তিযো’দ্ধা দীনেশ চন্দ্র মন্ডল লিখিত ও মৌখিকভাবে বলেন, রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় আমি আমার ডায়াং মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি থেকে আশাশুনিতে আসার সময় আশাশুনি বাইপাস হাইওয়ে ৩ রাস্তার পাশে (দক্ষিণে) এসআই জুয়েল আমাকে গাড়ি থামাতে বলেন।
তার নির্দেশমতো আমি গাড়ি থামাই। পরে এক কনস্টেবল সোহাগ আমাকে বলে- এই গাড়ি রাস্তার পাশে আন। আমি বলি- কাকা, কী হয়েছে বলেন? তিনি বলেন- রাস্তার ওপর কথা বলব না। গাড়ি রাস্তার পাশে আন। এরপর তিনি চড়া মেজাজে বলেন- এই বা… লাইট লাগাইছ কেন? তখন আমি বলি- কাকা, আমি একজন মুক্তিযো’দ্ধা। তাছাড়া আমি একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা। আমার ছেলে পুলিশে চাকরি করে। ভদ্রভাবে কথা বলেন!
তখন তিনি বলেন- ওই বা… মুক্তিযো’দ্ধা পরিচয় বাদ দে! তারপর তিনি আমার মুক্তিযো’দ্ধা কাউন্সিলের ব্যাজ দেখিয়ে বলেন- বুকের মধ্যে ওই বা… লাগাইছ কেন। ওসব খুলে ফেল। এই বলে গাড়ির লাইটটা প্লায়ার্স দিয়ে কেটে নেন। পরে হর্ণ কাটতে গেলে আমি বাধা দেই। তিনি বলেন- দুটি হর্ণ রাখা যাবে না। আমি বলি- ৮০ সিসির চায়না গাড়িতে কোম্পানি দুটি হর্ণ লাগাইয়া দিয়েছে। এটা আপনি কাটবেন কেন?
সে বাধা না মানলে আমি বলি- ঘটনাটি আমি এসপিকে বলব। সে তার প্যান্টের জিপার খুলে আমাকে বলে- আমার বা… ছিঁ’ড়িস। এ সময় সেখানে শতাধিক পথচারী উপস্থিত ছিলেন। আশপাশের দোকানদারও আমার সঙ্গে কী ব্যবহার হয়েছে, তা দেখেছে। ঘটনাটি শুধু আমার সঙ্গে ঘটেনি। আমার আগে অপর এক বীর মুক্তিযো’দ্ধা আফসার গাজীকেও একইভাবে অপ’মান করা হয়েছে বলে ওই সময় জেনেছি।
এছাড়া বীর মুক্তিযো’দ্ধা আফসার গাজীর গাড়ির সামনে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত স্টিকার ছিঁ’ড়ে ফেলে দিতে উ’দ্যত হয় ওই পুলিশ কনস্টেবল সোহাগ।
বক্তব্যের এক পর্যায়ে অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে বীর মুক্তিযো’দ্ধা দীনেশ চন্দ্র মন্ডল বলেন, এহেন অপ’মান জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের জন্য অতীব দুঃখজনক। ওই পুলিশ কনস্টেবল কোন পরিবার থেকে এসেছে, কার ইন্ধনে এসব বলেছে, বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করার জন্য এবং ন্যায় বিচার পাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযু’দ্ধবিষয়ক মন্ত্রীসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
‘সঠিক বিচার যদি না পাই, অন্যথায় আমি বিষ খেতে বাধ্য হব।’ এ ঘটনায় তিনিসহ বীর মুক্তিযো’দ্ধা আফসার গাজী বিষয়টি ওইদিন সন্ধ্যায় লিখিতভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মৌখিকভাবে থানা অফিসার ইনচার্জকে অবহিত করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বীর মুক্তিযো’দ্ধা আফসার আলী গাজী, আব্দুল করিম, কার্তিক চন্দ্র মন্ডল, মাস্টার আকবর আলীসহ আরও কয়েকজন বীর মুক্তিযো’দ্ধা। জাগোনিউজ।