চট্টগ্রাম ব্যুরো:
দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বী দল আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি। ভোটের লড়াই ছাড়াও পরস্পরের প্রতি লড়াই চলমান। তবে চট্টগ্রামের রাজনীতিতে পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। এখানে বিরোধী দলে থাকলেও বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক পরিমন্ডল ছাড়া পারিবারিকভাবেও অনেক নেতাই বিরোধীদলের নেতা কর্মীদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখেন। চট্টগ্রামের ঐতিহ্যই এমন।
প্রয়াত চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র চট্টলবীর আলহাজ্ব এ বি এম মহিউদ্দীন চৌধুরী নিজে ছিলেন ঔদার্য্যের প্রতীক। তার বাসভবনের দরজা কখনই বন্ধ হতো না। দল মত নির্বিশেষ সকল ধর্ম বর্ণ গোত্রের মানুষের জন্য তার ছিল অবারিত দ্বার। এসে খেয়েও যাচ্ছেন ইচ্ছেমত- এটা খুবই পরিচিত এক দৃশ্য। তার সুযোগ্য পুত্র আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এবং চট্টগ্রাম-৯ আসনের প্রার্থী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলও পিতার দেখানো পথে হাঁটছেন। বুকে টেনে নিচ্ছেন বিরোধীদেরও।
চট্টগ্রামে আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর আগে হযরত শাহ আমানত খান (রহ.) মাজার জিয়ারত করে মাঠে নামার আগে পরম আন্তরিকতায় পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে বুক মেলালেন বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান ও ব্যারিস্টার নওফেল। তাদের এই সৌহার্দ্যমূলক আলিঙ্গনে উভয়দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে মাজার প্রাঙ্গণে এক অভূতপূর্ব প্রীতিময় দৃশ্যের অবতারণা হয়।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রামের দুই আসনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থী মাজার প্রাঙ্গণে পরস্পরকে দেখে হাসিমুখে হাত বাড়িয়ে এগিয়ে যান। তারা পরস্পর কুশল বিনিময় করেন। একে অপরের সুস্বাস্থ্য ও সাফল্য কামনা করেন। বিএনপি নেতা নোমান এবং মহিউদ্দীন চৌধুরীর পরিবারের মধ্যে অত্যন্ত ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে। চট্টলবীরের মৃত্যুতে বিএনপি নেতা নোমানের ক্রন্দরত দৃশ্য কাঁদিয়েছিল অনেককেই।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম মহানগরী আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র মরহুম এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চট্টগ্রাম-৯ (কোতয়ালী) আসনে এবার নির্বাচন করছেন। অন্যদিকে প্রবীণ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান নগরীর চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-পাহাড়তলি-হালিশহর) আসনে নির্বাচন করছেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দুই পক্ষের এই দুই নেতার কোলাকুলি নগরীতে রাজনৈতিক সম্প্রীতির নজির বলেও পর্যবেক্ষক মহলে আলোচিত হচ্ছে।