সময় এখন ডেস্ক:
বিএনপির নেতাকর্মীরা বাসে আগুন দেবেন আর জনস্বার্থে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, মামলা হবে না, এটা মামার বাড়ির আবদার নাকি? বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বুধবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে আশুলিয়ার নয়ারহাট এলাকার ২য় নয়ারহাট সেতু ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধনকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি মহাসচিব বলেছেন- ‘খালেদা জিয়াকে নাকি অ’ন্যায়ভাবে ব’ন্দি করে রাখা হয়েছে’। জেনে বুঝে শুনে তিনি মিথ্যাচার করছেন। সরকার খালেদা জিয়ার বিরু’দ্ধে মামলাও দেননি, সাজাও দেননি। মামলা করেছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর সাজা দিয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীন আদালত। বরং শেখ হাসিনাই খালেদা জিয়ার প্রতি সদয় হয়ে দুইবার সাজা স্থ’গিত করেছেন।
তিনি বলেন, বিএনপি এমন একটি দল যাদের কৃতজ্ঞতাবোধ নেই। তারা নিজেরা কিছু করতে পারেন না নিজেদের নেত্রীর জন্য। ভালোমতো একটা বিক্ষো’ভ মিছিলও করতে পারেননি। শেখ হাসিনা মানবিক কারণে তার পরিবার পরিজনের অনুরোধে তার সাজা স্থ’গিত করে মুক্তি দিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, মানুষ নাকি দুঃসময় অতিক্রম করছে। জানতে চাই- করোনা, বন্যা, সুপার সাইক্লোন, আম্পানের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগ দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসাবে বিএনপি কী ভূমিকা পালন করেছে? আপনারা তো জনগণের পাশে না দাঁড়িয়ে গণমাধ্যম আর ফেসবুকে কথা বলার বৃষ্টি ঝরিয়ে যাচ্ছেন। করোনায় গোটা বিশ্ব যখন টালমাটাল তখন জীবন জীবিকা সচল রাখতে দেশনেত্রী শেখ হাসিনা যে দূরদর্শিতা দেখিয়েছেন তা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, জনগণের দুঃসময়ে কোনো ভূমিকা না রেখে শুধু বক্তৃতা বিবৃতি বিএনপির লিপ সার্ভিসই হচ্ছে এখনকার রাজনীতি। আর সরকার যা করছে তা অন্ধ সমালোচনা করে চলেছে তারা অ-বিরাম। আসলে বিএনপি দেশের আরো দুঃসময়, জনগণের করুণ অবস্থা প্রত্যাশা করেছিলো। তারা বলেছিলো ‘মানুষ না খেয়ে চিকিৎসা না পেয়ে রাস্তায় ম’রে পড়ে থাকবে’। আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং শেখ হাসিনার মানবিক নেতৃত্বের কারণে সে পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।
মন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেতাদের মনে একটু জ্বালা। মানুষের ভোগা’ন্তি আর ক’ষ্টই তাদের প্রত্যাশা। সরকারের বিরো’ধিতা করতে গিয়ে দেশ ও জনগণের উন্নয়নের বিরো’ধিতা করে যাচ্ছে তারা। তাই জনগণ তাদের কথায় আর সায় দেয় না। তাদের আন্দোলনের ডাক অসাড়ের তর্জন-গর্জনের মতোই সার।
তিনি বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরু’দ্ধে নাকি সরকার অ’ন্যায়ভাবে মামলা দিচ্ছেন। আপনার সন্ত্রা’স সৃষ্টি করবেন, জনগণের জান-মালের ক্ষ’তি করবেন বাসে আগুন দিবেন, নিজেরা নিজেরা মা’রামারি করবেন আর সরকার জনস্বার্থে ব্যবস্থা নিলে রাজনৈতিক প্রতিহিং’সা? আপনারা বাসে আগুন দেবেন আবার ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। এ যেন মামা বাড়ির আবদার!
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের নেতাকর্মীরা এমনকি জনপ্রতিনিধিরাও অপরাধ করলে ছাড় দিচ্ছি না। আমরা তো তাদের পক্ষ নিচ্ছি না, আর প্রশ্রয়ও দিচ্ছি না। অথচ বিএনপি অনুসরণ করছে সন্ত্রা’সের নীতি। অনুসরণ করছে দলগতভাবে হ’ত্যা, স্বড়যন্ত্রের রাজনীতিতে তারা বিশ্বাসী। এটাই তাদের রাজনীতির ঐতিহ্য। তারা নিজ নিজ দলের অপরাধীদের লালন করে। তাদের কোনো দলীয় অপরাধী অপ’কর্মের বিচার হয়নি। এটা আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি।
তিনি বলেন, সুবিধাবাদ জিন্দাবাদে বিশ্বাস করে বলে তারা দুর্নীতিবাজ দলের প্রশ্রয়ে অপরাধ এবং দুর্নীতি প্রমাণ করেছে তাদের গঠনতন্ত্র পরিবর্তনের মাধ্যমে। গঠনতন্ত্র থেকে তারা রাতের অন্ধকারে এক কলমের খোঁচায় ৭ ধারা বাতিল করেছে। যে ৭ ধারায় বলা আছে চিহ্নিত দুর্নীতিবাজরা বিএনপির নেতা হতে পারবে না, জনপ্রতিনিধি হতে পারবেন না। সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা বিএনপির নেতা হতে পারবে না। দেউলিয়া ব্যক্তিরা জনপ্রতিনিধি হতে পারবে না। এই ৭ ধারা তারা বাতিল করেছে। তার মানে তারা নিজেরাই স্বীকৃতিপ্রাপ্ত দুর্নীতিবাজ দল। এটাই তারা প্রমাণ করেছে ৭ ধারা বাতিলের মাধ্যমে।
সেতু উদ্বোধনকালে মন্ত্রী বলেন, ঢাকা আরিচা মহাসড়কে যে সব ব্যানার ফেস্টুন আছে তা সড়কের সৌন্দর্য বর্ধনে অপ’সারণ করতে হবে। আমরা পরীক্ষামূলক হেমায়েতপুরে সড়কে বাতি লাগিয়েছি। যা সাধারণ মানুষ সাধুবাদ জানিয়েছে। আমরা গাবতলী থেকে স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত সড়কে বাতি লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছি।
এর আগে মন্ত্রী ১০৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যায়ে ১৯৩.৩০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১৯ মিটার প্রস্থ নয়ারহাট সেতু-২’র নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন।