মৌলভীবাজার সংবাদদাতা:
বঙ্গবন্ধুর স্নেহভাজন হিসেবে পরিচিত ছিলেন সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা সুলতান মো. মনসুর আহমদ। কিন্তু বর্তমানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিয়ে শাঁখের করাতের মতো অবস্থায় আছেন তিনি। আওয়ামী লীগের কর্মী সমর্থকদের ঘৃণা কুড়াচ্ছেন যেমন, তেমনি ধানের শীষের প্রার্থীরাও করছেন সন্দেহ!
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মনোনয়ন পেতে ব্যর্থ হয়ে তিনি মুজিবকোট পরেই যোগ দেন বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শরীক দল ড. কামাল হোসেনের গণফোরামে। আর জোটের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন ধানের শীষে। যদিও তার নির্বাচনী এলাকা মৌলভীবাজার-২ কুলাউড়া আসনের বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা তাকে নিয়ে ভুগছেন সন্দেহে। কারন তিনি আওয়ামী লীগ ছাড়লেও মুজিবকোট ত্যাগ করেননি যেমন, তেমনি তার পোস্টারে নেই বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দের কোনো ছবি!
সরেজমিনে গিয়ে সুলতান মো. মনসুর আহমদের নির্বাচনী পোস্টার কিংবা নির্বাচনী প্রধান অফিসে জিয়া পরিবারের কোনো সদস্যের ছবি দেখা যায়নি। যাতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন ধানের শীষের নেতাকর্মীরা। যদি জিয়া, খালেদা এবং তারেকের ছবি পোস্টারে যুক্ত করা না হয় তাহলে এর সমুচিত জবাব দেয়া হবে বলে জানান নেতাকর্মীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এ নিয়ে তীব্র সমালোচনার ঝড় উঠেছে। তাকে আওয়ামী লীগের দালাল বা গোপন এজেন্ট হিসেবেও অভিহিত করছেন কেউ কেউ।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক, টুইটারসহ অন্যান্য মাধ্যমে সুলতান মনসুরের নির্বাচনী প্রধান অফিসের ছবি দিয়ে ছাত্রদল নেতা তাহমিদ খান শাওন বলেন, যা হওয়ার হয়ে গেছে, এখন ভুলগুলো শুধরে নেয়া হোক। নির্বাচনী কার্যালয়ের প্রধান গেট থেকে অবিলম্বে এই ব্যানার সরিয়ে খালেদা, তারেক জিয়ার ছবিসংবলিত ধানের শীষের ব্যানার রাখতে হবে। নির্বাচনী পোস্টার যেন তারেক জিয়া এবং খালেদা জিয়ার ছবি থাকে। তা না হলে আমাদেরকে পাবেন না। আপনার বিরুদ্ধে যেতে সময় লাগবে না।
কিবরিয়া চৌধুরী লেখেন, নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। নির্বাচনী ব্যানারে দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ জিয়ার ছবি নেই, নেই বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়ার ছবি। কিন্তু সবচেয়ে বেশি দুঃখ লাগে বিএনপির অতিউৎসাহীরা দলের প্রতীকের প্রচারণা না করে ব্যক্তির প্রচারণা শুরু করেছেন। তাদের মনে রাখা উচিত, ব্যক্তি ক্ষণস্থায়ী কিন্তু প্রতীক স্থায়ী।
সাইফুর রহমান লিখেছেন, ঘরে বসে ভোট দেব ধানের শীষে, সব কর্মকাণ্ড বর্জন করবে জিয়ার সৈনিকরা। পাশে বসে পরিচালনা করছেন দালাল প্রকৃতির কিছু বিএনপি নেতা। তাদের এসব কী চোখে পড়ে না। তিনি ছাত্রদল, যুবদল, বিএনপি ইউনিয়নের নেতাদেরকে সুলতান মনসুরের পোস্টার না লাগাতে অনুরোধ করেন।
একেএম ফজলুল হক রুবেল লেখেন, যারা ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করবেন, তারা যদি নেত্রীর ছবি পোস্টারে ব্যবহার না করে, তাহলে আমি ব্যক্তিগতভাবে সমর্থন করব না।
জিয়াউদ্দিন মো. ইউছুফ লেখেন, নেত্রীর ছবি নেই, তাই নকল ধান ছড়া। ভোট দেব না। কোদাল মার্কায় ভোট দেব।