নীলফামারী সংবাদদাতা:
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে অস্বীকারকারী, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী, পাকিস্থানি হানাদার বাহিনীর দোসর জামায়াতে ইসলামীর এক নেতার বিরুদ্ধে দেশের স্বাধীনতা- সার্বভৌমত্ব নিয়ে কটূক্তির দায়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান স্থানীয় জামায়াত নেতা ফয়সাল মুরাদের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে পলাতক মুরাদকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বুধবার উপজেলা শহরে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছেন মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানরা। তার বিরুদ্ধে নাশকতার মামলাও রয়েছে।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের আহবায়ক আসাদুজ্জামান স্টালিন অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে তার উপস্থিতিতে ভাইস চেয়ারম্যান ফয়সাল মুরাদ বাংলাদেশকে অস্বীকার করে বিজয় দিবসকে নিয়ে ধৃষ্টতামূলক বক্তব্য দেন। পরে ঘটনাটি জানাজানি হলে স্থানীয় স্বাধীনতার পক্ষের সংগঠনগুলোর মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
মঙ্গলবার রাতে পৌর যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মানিকুজ্জামান বাদী হয়ে ফয়সাল মুরাদসহ জামায়াত-বিএনপির ৫ জনের বিরুদ্ধে জলঢাকা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার সাক্ষী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সুজাউদ্দৌলা জানান, মঙ্গলবার আমার কার্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল গাফ্ফার, এনএসআই-এর ফিল্ড কর্মকর্তা তৌফিকসহ কয়েকজন বসে কথা বলছিলাম। এমন সময় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফয়সাল মুরাদ এবং বিএনপির লেলিন নামে একজন গিয়ে সংসদ নির্বাচনে জামায়াতের প্রার্থী আজিজুল ইসলামের একটি মতবিনিময় সভার জন্য অনুমতি নিতে চান বলে জানান ইউএনও।
ওই সময় ভাইস চেয়ারম্যান ফয়সাল মুরাদ সেখানে থাকা ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উপজেলা সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল গফ্ফারকে বলেন, বিজয় দিবসটি পিছিয়ে দেওয়া যায় না? একথা শোনার পর এনএসআই কর্মকর্তা তৌফিক বলেন, আপনি এটা কী বলছেন, আপনি কি বাংলাদেশের নাগরিক না? জবাবে ফয়সাল মুরাদ বলে- ‘না আমি এদেশ মানি না, স্বাধীনতা দিবস বিজয় দিবস মানি না।’ এ কথা শোনার পর এনএসআই কর্মকর্তা তাকে সেখান থেকে বিতাড়িত করেন।
ইউএনও সুজাউদ্দৌলা আরও বলেন, ফয়সাল মুরাদসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলার আমি এক নম্বর সাক্ষী হয়েছি এবং ঘটনা সম্পর্কে আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি।
জলঢাকা থানার ওসি মোস্তাফিজার রহমান বলেন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফয়সাল মুরাদকে প্রধান আসামি করে ৫ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা মামলা হয়েছে। মামলার পর থেকেই আসামি পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।
এদিকে, আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে কয়েকটি সংগঠন বিক্ষোভ সমাবেশ ও সড়ক অবরোধ করেছে।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের আহবায়ক আসাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সহিদ হোসেন রুবেল, জেলা জাসদের সভাপতি আজিজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহেদ বাহাদুর, উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক সারোয়ার হোসেন সাদের, রিকশা শ্রমিকলীগ সভাপতি এনামুল হক, পৌর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক লাভলুর রশিদ বক্তব্য রাখেন।
এ বিষয়ে ফয়সাল মুরাদের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি।