ভোলা সংবাদদাতা:
২০০১ এর নির্বাচনের পর বিএনপি জামায়াত কর্তৃক ভিন্ন ধর্মাবলম্বী ও ভিন্ন মত দমনে যে নিষ্ঠুরতা ও বর্বরতা চালানো হয়েছিল তা কোনো দেশের যুদ্ধকালীন অবস্থা থেকে কম নয়। ছেলের বয়সী সন্তানেরা মায়ের বয়সী নারীকে ধর্ষণ করেছিল, বাদ যায় যায়নি শিশু কন্যাও।
দেশের দক্ষিণের জেলা ভোলার লালমোহন উপজেলায় ২০০১ সালের নির্বাচনের দিনই যে ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেছে, সেটা ভেবে এখনও অনেকে শিউরে ওঠেন। ৭১-এ পাকিস্থানিদের অত্যাচারকেও হার মানিয়েছে- বলে জানান এলাকাবাসী। সেদিন বিএনপি নেতা ও সাবেক মন্ত্রী মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ এর কর্মী সমর্থকরা ঝাঁপিয়ে পড়ে আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়া সংখ্যালঘু হিন্দু জনগোষ্ঠীর ওপর। আবাল বৃদ্ধ বণিতা কেউ বাদ যায়নি। বৃদ্ধা থেকে শুরু করে ছোট শিশুরাও হয়েছে গণধর্ষণের শিকার। চোখ উপড়ে, ধারালো অস্ত্রে হাত পা কেটে বীভৎসভাবে হত্যা করা হয় বহু আওয়ামী কর্মী সমর্থককে।
হামলা আর নির্যাতনের শিকার এলাকাবাসীর ভয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আর এলাকায় ঢুকতে পারেননি হাফিজ। দীর্ঘ ৮ বছর পর আবার তিনি এলাকায় ফিরেছেন ভোলা-৩ আসনের বিএনপি প্রার্থী হয়ে। পুলিশ ও নেতাকর্মী বেষ্টিত হয়ে বিনা বাধায় তিনি বাসায় পৌঁছান।
এ সময় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে হাফিজ বলেন, এই নির্বাচনে সরকারি দলের পরিকল্পনা হলো কোনো মানুষকে ভোটকেন্দ্রে যেতে দেবে না। প্রার্থীদের মারধর আর সমর্থকদের বিরুদ্ধে মামলা দেবে। কিন্তু অন্তত ২৯০টি আসনে সঠিক নির্বাচন হবে। এবং এই ২৯০টি আসনের মধ্যে কমসে কম আড়াইশ আসনে বিএনপি ইনশাআল্লাহ জয় লাভ করবে।
২০০১ সালে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনকারী হাফিজ বলেন, যত সন্ত্রাস আছে ভোলা এবং বরিশালে। এখানকার ১০টি আসনে তারা গোলমাল করবে। আপনাদের দায়িত্ব লালমোহন ও তজুমদ্দিনে এই ধরনের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করার।
পুলিশ সদস্যদের প্রতি অনুরোধ করে তিনি বলেন, আপনারা এই দেশেরই নাগরিক। সরকারি কর্মকর্তা এবং কর্মচারী। আপনারা কোনো দলের পক্ষ নেবেন না।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে মেজর হাফিজ বলেন, আপনারা মনে বল রাখবেন, আপনারা কোনো লোকের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করবেন না। আওয়ামী লীগের মিছিল যদি পাশে দিয়ে যায় আপনারা যেতে দেবেন। বিএনপি সন্ত্রাসী দল নয়। পুলিশ বাহিনীর সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করবেন না। আপনারা ধৈর্য ধরুন, বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত হবে।
2