সময় এখন ডেস্ক:
উত্তাল সাগর পাড়ি দিয়ে অ’বৈধভাবে মালয়েশিয়ায় যাওয়াটা রোহিঙ্গাদের কাছে যেন এক স্বপ্নের যাত্রা। বিশেষ করে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে কক্সবাজারের উখিয়ায় আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে এই প্রবণতা চোখে পড়ার মত।
জীবনের ঝুঁ’কি নিয়ে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পথে গত ১ বছরে সাগরে ডুবে ২ শতাধিক রোহিঙ্গা প্রাণ হারিয়েছে। অনেকের আর কোনও সন্ধান মেলেনি।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসির এক বিশেষ প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। ২০২০ সালেই এমন করুণ পরিণতি ঘটে এই রোহিঙ্গাদের ভাগ্যে।
ক্যাম্পে থাকা বেশিরভাগ রোহিঙ্গার স্বপ্ন মালয়েশিয়া যাওয়া। বৈধ পথে যাওয়ার কোন সুযোগ না থাকায় অ’বৈধ পথই বেছে নেয় তারা। বিশেষ করে নারী রোহিঙ্গাদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি। উন্নত জীবনের খোঁজে দালালের হাতে পড়া রোহিঙ্গাদের এই সিদ্ধান্তকে বিপ’জ্জনক যাত্রা অ্যাখা দিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা- ইউএনএইচসিআর বলছে, বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে যারা মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় যাচ্ছে, তাদের বেশিরভাগ শিশু বা অল্প বয়সী ছিল। তাদের হারিয়ে যাওয়া নিয়ে বিবিসি বলছে, এই রোহিঙ্গাদের মে’রে সাগরে ভাসিয়ে দিতে পারে দালালরা।
আরেকটি বিষয় হচ্ছে, করোনার মধ্যে যারা রাতের আঁধারে ক্যাম্প ছেড়ে সাগরে দালালের নৌকায় উঠেছে, খাবার না পেয়ে তাদের মৃ’ত্যু হয়েছে। নইলে করোনা পরিস্থিতিতে দেশগুলোর সীমান্তে কঠোর নজরদারি থাকায় গন্তব্যে পৌঁছানোর আগেই সাগরে মৃ’ত্যু হয় তাদের।
অনেক রোহিঙ্গা মালয়েশিয়া বা অন্য কোন দেশে সাগর পথে যেতে সক্ষম হয়েছে হয়তো। এই সুযোগ নিয়ে দালালরা সহজেই অন্যদের প্রলু’ব্ধ করতে সক্ষম হয়।
বাংলাদেশের ক্যাম্প থেকে পালাতে গিয়ে দালালসহ বিভিন্ন সময় আটক হয়েছে অনেক রোহিঙ্গা। ২০১৯ সালের মে মাসে সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টায় কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ থেকে ৫৫ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে স্থানীয় পুলিশ। এদের মধ্যে ৩১ নারী, ১৪ পুরুষ ও ১০ শিশু ছিল।
নিজের দেশ মিয়ানমার ছেড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় সাড়ে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। টেকনাফ এবং উখিয়ায় ৩০টির বেশি ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়ে আছে তারা। কয়েক বছর ধরে রোহিঙ্গাদের বিশেষ করে তাদের নারীদের মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যাচ্ছে। দালালরাও রোহিঙ্গাদেরকেই টার্গেট করছে।
307