মুক্তমঞ্চ ডেস্ক:
যেভাবে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চলছে তার বিপরীতে অভিযোগ গুটিকয়েক। তার মধ্যে গুরুতর অভিযোগ মূলত দুটি। যেকেউ সাধারণ বিবেচনাতেই অধিকাংশ অভিযোগ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন প্রমাণ করতে পারেন।
এক. প্রধানমন্ত্রীর আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নিজের ভোটটিও পায় নি উল্লেখ করে একটি ছবি ভাইরাল করা হয়েছে। অথচ সে ছবিতে যে ১০৮টির মধ্যে মাত্র ৪টি কেন্দ্রের ফলাফল দেয়া হয়েছে তা বলা হচ্ছে না। গোপালগঞ্জের সকল সংসদ নির্বাচনেই প্রার্থীর বাজেয়াপ্ত হয়েছিল। তাই ৪টি কেন্দ্রে কোনো ভোট না পাওয়া খুবই স্বাভাবিক একটি বিষয়।
দুই. বিবিসি বাংলার নামে দুটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সবচেয়ে বেশি। বিবিসি বাংলার নামে ভুয়া পেজ খুলে সিটি নির্বাচনের একটি ভিডিও এবারের নির্বাচনের বলে প্রচার করা হয়েছে। উল্লেখ্য, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের যে ভিডিও প্রচারিত হয়েছিল সেই কেন্দ্রের নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছিল।
একটি ভিডিও বিবিসির মূল বাংলা পোর্টাল থেকে প্রচারিত যা সবচেয়ে বেশি আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এবারও ঐ প্রতিবেদন প্রকাশের পর ঐ কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ বাতিল বলে ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
বিবিসির উক্ত প্রতিবেদন থেকেই প্রমাণ করা যায় এটি একটি পরিকল্পিত অপপ্রচার। প্রতিবেদনটির লিংক: https://www.bbc.com/bengali/news-46720707
শিরোনাম: সংসদ নির্বাচন ২০১৮: চট্টগ্রামে বিবিসি সংবাদদাতার ক্যামেরায় যেভাবে ধরা পড়লো ভোটের আগেই পূর্ণ ব্যালটবক্স
১. ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে একজন ব্যক্তি পূর্ণ ব্যালট বাক্স নিয়ে যাচ্ছেন। সেই ভিডিওতে লেখা রয়েছে বিবিসি সংবাদদাতা ৭.৫০ মিনিটে ভিডিওটি ধারণ করেছেন। কেন্দ্রের ভেতরের এমন আরেকটি ছবিতে বিস্তারিত বর্ণনায় সময় ৭.৫৪ উল্লেখ করা হয়েছে। ছবি তোলার ক্ষেত্রে সময়ের ব্যবধান ৪ মিনিট হতেই পারে।
কিন্তু কেউ লক্ষ করলেই বুঝতে পারবেন ছবি দুটি রোদের আলোয় তোলা। এই মৌসুমে এমন আলো পাওয়া যাবে ১২টার পরে। কিন্তু ১২টার পরে লেখা হলে অভিযোগ গ্রহণযোগ্য হবে না বলেই ৭.৫০ বলা হয়েছে। ৮টার আগে কেন্দ্রে প্রবেশের সুযোগ নেই। তিনি কীভাবে ঢুকলেন জানি না। তবে তিনি যে ৭.৫০ এ প্রবেশ করেননি তার প্রমাণ পাওয়া যায় আরেকটি ছবিতে।
২. শহীদ নগর স্কুলের (কেন্দ্রের) সামনে তোলা ছবিতে রোদ নেই বরং কুয়াশার আভাস রয়েছে। লেখা হয়েছে, “সকাল ৭টা ৫২ মিনিটের দিকে আমি লালখান বাজার এলাকায় যাই।” ছবির বিস্তারিততে সময় উল্লেখ রয়েছে ৭.৫২ মিনিট। অর্থাৎ ৭.৫২ মিনিটে তিনি কেন্দ্রে প্রবেশ করেননি।
৭.৫২-এ কেন্দ্রে প্রবেশ না করলে ৭.৫০ এ কীভাবে কেন্দ্রের ভেতরের ভিডিও ধারণ করেছেন?
পৃথিবীর যেকোনো দেশে এমন হলুদ সাংবাদিকতার ঘটনা ঘটলে যথাযথ শাস্তি হতো। এখানে ফ্রিডম অব প্রেস বা স্পীচের সুযোগ নেই। জামাতি চ্যানেল এস-এর সাবেক রিপোর্টার শাহনেওয়াজ রকি যা করেছে তা হচ্ছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত জালিয়াতি।
লেখক: আব্দুল্লাহ হারুণ জুয়েল
পরিচিতি: রাজনীতি পর্যবেক্ষক, ব্লগার, লেখক ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট