বিশেষ সংবাদদাতা:
সদ্য সমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গুঞ্জন উঠেছিল ড. কামালের ঐক্য প্রক্রিয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে। সাবেক এই আওয়ামী লীগ নেতা সকল দলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্পন্ন করার দায়িত্ব নিয়ে সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছেন কি না- এমন কথা প্রচার হয়েছিল রাজনৈতিক অঙ্গনে। নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতার ভিত তৈরী করতে প্রধান শর্ত ছিল সকল দলের অংশগ্রহণ। ঐক্যফ্রন্টের ছাতার নিচে বিএনপি এবং সমমনা দলগুলোর নির্বাচনে অংশগ্রহণ এবং আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়- সব বিশ্লেষণ করার পর ড. কামাল বেশ সন্দেহের মধ্যেই আছেন।
ধানের শীষ প্রতীকে ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচনে অংশ নেয়া দলগুলোর মধ্যে বিএনপি পায় ৫টি এবং ড. কামালের নিজের দল গণফোরাম পায় ২টি আসন। যদিও তারেক রহমানের নির্দেেশে বিএনপির ৫ সাংসদ শপথ নেননি এখনও। কিন্তু এরই মধ্যে গণফোরামের ২ সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিচ্ছেন বলে জানান দিয়েছেন ড. কামাল হোসেন। যার ফলে তার অবস্থান বেশ রহস্যময় বলে ভাবছেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা।
আজ শনিবার (৫ জানুয়ারি) দলের এক বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি গণফোরামের সাংসদদের সংসদে যাওয়ার বিষয় উল্লেখ করে বলেন, তারা বিষয়টি ‘ইতিবাচক’ দৃষ্টিতে দেখছেন এবং ‘ইতিবাচক’ সিদ্ধান্ত নেবেন।
ভোটে বিজয়ী গণফোরামের দুই প্রার্থী হলেন সিলেট-২ আসন থেকে উদীয়মান সূর্য প্রতীকের মোকাব্বির খান ও মৌলভীবাজার-২ আসন থেকে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ। এর মধ্যে ‘মুজিব কোটে আস্থাশীল’ সুলতান মনসুর বিজয়ী হয়েছেন ধানের শীষ প্রতীকে।
বিএনপির শপথ না নেয়ার সিদ্ধান্তের সাথে একমত নন ঐক্যফ্রন্ট তথা ড. কামাল হোসেনের গণফোরামের সদস্যরা।
জানা গেছে, ঐক্যফ্রন্টের শরীক গণফোরামের দুই নির্বাচিত সংসদ সদস্য শপথ নিতে চান। তাদের মতে সংসদের বাইরে শুধু নয় সংসদের ভেতরে থেকেও সরকারের সমালোচনা করা প্রয়োজন। এই যুক্তিতে শপথ নিতে চান তারা। সকালে দলীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন গণফোরামের নেতা ড. কামাল।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর ও গণফোরাম নেতা লতিফুল বারী হামিমও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে বিএনপি প্রার্থী শপথ নেবে না বলে ঘোষণা করেছেন দলটি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ইতিপূর্বে দলীয় নেতারা জানিয়েছেন, তারেক রহমানের সিদ্ধান্তের ওপরেই সব নির্ভর করছে।
বৃহস্পতিবার ফখরুল জানিয়েছেন, নির্বাচনের ফলকে পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেছি। আমরা মনে করি, এ কলঙ্কজনক নির্বাচন বাতিল করে আবার অনুষ্ঠিত করতে হবে এবং এটা অবিলম্বে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। তিনি বলেন নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করলে আবার শপথ নেব কিভাবে। আমি পরিষ্কার বলছি শপথ নেব না।