বিশেষ প্রতিবেদন:
মূলধারার রাজনীতিতে ফিরতে নানান রূপে, নানান ঢংয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত সংগঠন জামায়াতে ইসলামী। আর এজন্য তারা কিছু লবিষ্ট নিযুক্ত করেছে। যাদের মূল কাজ হলো জামায়াতকে পুনর্বাসিত করা।
জামায়াতের তত্বাবধানে একটি প্ল্যাটফরমের পৃষ্ঠপোষকতা করা এবং জামায়াতের রাজনীতির পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করা তাদের নিয়মিত কর্মকান্ডের অংশ। এমনকি জামায়াতের খরচে আয়োজিত প্রতিটি সভায় তারা নিয়মিত হাজির হয়ে ইনিয়ে বিনিয়ে জামায়াতের রাজনীতি করার পক্ষে নানান যুক্তি তুলে ধরা তাদের কাজ।
আর এই প্রক্রিয়ার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে জামায়াতের উদ্যোগে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ ইবরাহিমের আহবানে এক দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে।
একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, জামায়াতের প্রায় সব লবিষ্টই এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সরকার বিরোধী বক্তব্যের আড়ালে এরা মূলত জামায়াতকে বৈধতা দেবার নানা যুক্তি উপস্থাপন করেন।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, জামায়াত এমন সব ব্যক্তিকে ভাড়াটে হিসেবে বেছে নিয়েছে, যারা মুক্তিযোদ্ধা অথবা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের মানুষ হিসেবে সমাজে পরিচিত। জামায়াত ঠিক ৭২ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে যেভাবে নেটওয়ার্ক তৈরী করতে মেজর (অব.) আবদুল জলিল, কবি আল মাহমুদের মতো পরিচিত মুক্তিযোদ্ধাদের নিযুক্ত করেছিল, এখন সেই একই কৌশলে মুক্তিযোদ্ধাদের ভাড়াটে হিসেবে ব্যবহার করছে।
এরা যখন জামায়াতকে রাজনীতি করার অধিকারের কথা বলবে, তখন তা সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য এবং বিশ্বাসযোগ্য মনে হবে। এমর ভাড়াটেদের মধ্যে আরও রয়েছেন:
১. মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন: ১/১১ এর সময় সংস্কারপন্থী, বর্তমানে বিএনপিতে কোণঠাসা এই নেতা। এখন জামায়াতকে সাথে নিয়ে আন্দোলনের পক্ষে সোচ্চার। ২০ দলকে পুনরুজ্জীবিত করতে চান তিনি। জামায়াতের নেতাদের সঙ্গে তার এখন ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ।
২. মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ ইবরাহিম: কল্যাণ পার্টির এই নেতা শুরু থেকেই জামায়াতপন্থী হিসেবে পরিচিত। বিভিন্ন সময়ে জামায়াতের পক্ষে তিনি সাফাই গেয়েছেন। এখন জামায়াতের এজেন্ডা বাস্তবায়নে তিনি মূখ্য ভূমিকা পালন করছেন।
৩. ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী: একদা তীব্র জামায়াত বিরোধী এই মুক্তিযোদ্ধাকে ম্যানেজ করেছে জামায়াত। এখন তিনি নতুন সুরে কথা বলছেন, তার সাম্প্রতিক যুক্তি হলো অন্য ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর যদি রাজনীতি করার অধিকার থাকে, তাহলে জামায়াতের থাকবে না কেন? জামায়াতের প্রতিটি সভার তিনি চেনামুখ। এমনকি বিএনপির অনেক নেতা জোটের শরিক জামায়াতের সভায় যেতে অ’স্বস্তিবোধ করলেও ডা. জাফরুল্লাহকে সব সভায় পাওয়া যাবেই।
৪. আসিফ নজরুল: ৭১ এর মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত শহীদ জননী জাহানারা ইমামের গণআদালতের মাধ্যমে আলোচনায় আসেন আসিফ নজরুল। তখনই তিনি জামায়াতের পে-রোলে যান বলে যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ রয়েছে। যু’দ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগৃহীত অতি গুরুত্বপূর্ণ নথি, যা গণআদালতের সাথে জড়িত থাকায় আসিফ নজরুলের নাগালে ছিল, তা জামায়াত এবং পাকিস্থানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই’র হাতে তুলে দিয়ে অ’নৈতিক সুবিধা নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে তার বিরু’দ্ধে। যার ফলে জাহানারা ইমাম রেগে শাহরিয়ার কবিরকে বলেছিলেন, আসিফকে পেলে জুতাপে’টা করতে।
৫. নুরু: সাবেক ডাকসু নেতা নুরু জামায়াতেরই একজন নেতা এমন বক্তব্য বহুল প্রচারিত। জামায়াত উদ্ধার মিশনে তিনিও একজন ভাড়াটে।
1K 0