বিশ্বের ক্ষমতাধর নেতাদের ‘এলিট ক্লাবে’ শেখ হাসিনা

0

সময় এখন ডেস্ক:

সদ্য সমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয়ের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার আবারও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন। এ শপথের মধ্যদিয়ে তিনি ৪র্থ বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন।

একই সঙ্গে শেখ হাসিনা দীর্ঘমেয়াদি ক্ষমতায় থাকা বিশ্ব নারী নেত্রীদের ‘এলিট ক্লাবে’ প্রবেশ করতে যাচ্ছেন। ৪ বার সরকারপ্রধানের দায়িত্ব পালনকারীদের মধ্যে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী মারা গেছেন। জীবিত নারীদের মধ্যে ৪র্থ বারের মতো রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেল। এখন সবচেয়ে বেশি সময় ক্ষমতায় থাকা নারীদের এলিট ক্লাবে প্রবেশ করতে যাচ্ছেন ৭২ বছর বয়সী শেখ হাসিনাও। বাংলাদেশের জন্য এটা একটা রেকর্ড। এছাড়া শেখ হাসিনা ৭ বার সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন।

১৯৮১ সালে দেশে ফেরার পর দলের দায়িত্ব নিয়ে শেখ হাসিনা প্রথম নির্বাচনে অংশ নেন ১৯৮৬ সালে। মিডিয়া ক্যু করে এরশাদের সামরিক সরকার আওয়ামী লীগকে হারিয়ে দেয়। ওই ৩য় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১ম বারের মতো বিরোধীদলীয় নেতা হন শেখ হাসিনা। পরে স্বৈরাচার পতনের পর ১৯৯১ সালে ৫ম সংসদের তিনি বিরোধীদলীয় নেতার আসনে বসেন।

১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে প্রথমবারের মতো সরকার গঠন করেন তিনি। এরপর ২০০১ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করতে না পারলেও ভোট বাড়ে আওয়ামী লীগের। সরকার গঠন করে বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট। বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে সংসদে বসেন শেখ হাসিনা।

এরপর ৯ম সংসদ নির্বাচন থেকে একাদশ সংসদ পর্যন্ত টানা ৩ মেয়াদে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের ৯ম সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৬৪টিতেই শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট জয়লাভ করে। এরপর থেকেই বাংলাদেশে ‘দিন বদলের শুরু’ হয়। দেশের প্রতিটি খাতে অভূতপূর্ব উন্নতি শুরু হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। শেখ হাসিনার জয়রথ চলমান থাকে ১০ম সংসদ নির্বাচনেও। ওই বছরের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আবারও বিজয়ী হয়ে টানা ২ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন শেখ হাসিনা।

২০১৪ সালের নির্বাচনে পর অনেকেই ভেবেছিলেন, পূর্ণ মেয়াদে সরকার পরিচালনা করতে পারবেন না শেখ হাসিনা। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন চাপের মুখে মধ্যবর্তী নির্বাচন দিতে বাধ্য হবেন তিনি। কিন্তু তাদের সকলের ধারণা ভুল প্রমাণ করে দিয়ে বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলন জ্বালাও-পোড়াও মোকাবেলা করে পূর্ণ মেয়াদ সরকার পরিচালনা করেন শেখ হাসিনা। মেয়াদের শেষ দিকে এসে বিএনপিসহ সরকারবিরোধী জোট আবারও সংসদ ভেঙে নির্বাচনের দাবি জানায়।

কিন্তু সংবিধানের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, সংসদ বহাল রেখেই একাদশ সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্বাচন সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিতে টানা ১ সপ্তাহ দেশের সক্রিয় সকল রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে নির্বাচনী সংলাপে বসেন তিনি। ফলে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্ট। এই নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্ট মাত্র ৭টি আসনে জয়ী হয়। আর ২৮৮টি আসন পায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট।

প্রসঙ্গত, আগামীকাল টানা ৩য় বারের মতো নিজের নেতৃত্বে মন্ত্রিপরিষদ গঠন করতে যাচ্ছেন আয়রন লেডি শেখ হাসিনা। এবারে তার মন্ত্রিসভায় তিনিসহ এক ঝাঁক তরুণ নিয়ে ৪৭ জন মন্ত্রী পাবে দেশবাসী। অবশ্য নিজের হাতে রেখেছেন ৬টি মন্ত্রণালয়।

শেয়ার করুন !
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!