বিশেষ প্রতিবেদন:
একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা কু-খ্যাত রাজাকার সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর প্রচুর সম্পদ রয়েছে দেশের বাইরে। গত মাসে সিঙ্গাপুরের একটি ব্যাংক একাউন্টে সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকার সন্ধান পায় দুদক এবং সরকারি একটি গোয়েন্দা সংস্থা। এছাড়াও যুক্তরাজ্যের লন্ডনেও রয়েছে তার অগাধ সম্পত্তি এবং কয়েকটি বাড়ি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, লন্ডনে রাজাকার সাকা চৌধুরীর ৩টি বাড়ি রয়েছে। সেই সাথে সেখানকার স্টক মার্কেটে বিপুল বিনিয়োগ এবং ব্যাংকে গচ্ছিত নগদ অর্থ। একটি বাড়ি ছাড়া বাকি এই সব সম্পত্তি দেখভাল করে এই রাজাকারের সন্তান হুকাচৌ- হুম্মাম কাদের চৌধুরী।
লন্ডনে অন্যতম অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত নাইটব্রিজ। সেখানে রাজাকার সাকাচৌর অভিজাত বাড়িটিতেই থাকেন ড. কামাল হোসেনের জামাতা এবং যু’দ্ধাপরাধীদের লবিষ্ট ডেভিড বার্গম্যান। নাইটব্রিজের অভিজাত এই বাড়িতে ডেভিড বার্গম্যান থাকছেন ২০১৮ সাল থেকে।
জানা গেছে, ডেভিড বার্গম্যান থাকলেও বাড়ির মালিকানা এখনও রাজাকার সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর নামে। লন্ডনে প্রপার্টি ট্রান্সফার বিভাগের তথ্যে তা দেখা যায়। রাজাকার সাকা চৌধুরীর সাজার পর, তার স্ত্রী ফরহাত চৌধুরী বাড়িটি নিজ নামে হস্তান্তরের জন্য আবেদন করেন। যা এখনও নিষ্পত্তি হয়নি।
ডেভিড বার্গম্যান বাড়িটিতে রাজাকার সাকাচৌর ছেলের অনুরোধে ওঠেন। প্রায় ৭ হাজার স্কয়ার ফুটের ঐ বাড়িতে ডেভিড বার্গম্যান ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করেন। সেখানে তার অফিসিয়াল কাজও করেন।
উল্লেখ্য, যু’দ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরুর প্রক্রিয়া চলাকালে ২০১০ সালে লন্ডনে রাজাকার সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী সঙ্গে ডেভিড বার্গম্যানের প্রথম সাক্ষাত হয়। রাজাকার সাকার অনুরোধে লন্ডনে অবস্থানরত এক আইএসআই এজেন্ট লবিস্ট ডেভিড বার্গম্যানকে রাজাকার সাকার কাছে নিয়ে যান। তখনও রাজাকার সাকার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। কিন্তু রাজাকার সাকা জানতেন তারও বিচার শুরু হবে।
তবে, রাজাকার সাকা চৌধুরী লন্ডনে একাধিক ব্যক্তিকে খুব বড়াই করে বলেছিলেন, তার কিছুই করতে পারবে না শেখ হাসিনা। একটা রিট করলেই মামলা আটকে যাবে। তবে বিচার প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য তিনি ডেভিড বার্গম্যানকে দায়িত্ব দেন। বার্গম্যানের ল ফার্মের সাথে আর্থিক লেনদেনসহ একটি চুক্তিও হয়।
সেই সূত্রেই ডেভিড বার্গম্যান এসাইনমেন্ট নিয়ে বাংলাদেশে আসেন। যু’দ্ধাপরাধীদের পক্ষে অপপ্রচার ও মিথ্যা, বানোয়াট লেখালেখির কারণে বার্গম্যান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তৎকালীন বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের আদালতে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে জেলে যান।
বর্তমানে লন্ডনে তারেক জিয়া এবং যু’দ্ধাপরাধী গোষ্ঠী যে বাংলাদেশবিরোধী তৎপরতায় লিপ্ত, তার অন্যতম থিংক ট্যাংক ডেভিড বার্গম্যান। বাংলাদেশে গিয়ে যেভাবে অপ’মানিত হয়েছেন তা ভুলতে পারেননি, সেটা স্পষ্ট।
1.2K