চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ নেতা সোহেলকে ‘চাঁদাবাজ দাবি করে’ হত্যা: জাপা নেতা ওসমান আটক

0

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

চট্টগ্রামে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মহিউদ্দিন সোহেলকে ‘চাঁদাবাজ সাজিয়ে’ হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলার অন্যতম আসামি জাতীয় পার্টির নগর সহ-সভাপতি ওসমান খানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার বিকালে পাহাড়তলী এলাকার নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করে ডবলমুরিং থানা পুলিশ।

গত মঙ্গলবার রাতে সোহেলের ভাই শাকিরুল ইসলাম শিশির বাদি হয়ে নগরের ডবলমুরিং থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে ১২ নম্বর সরাইপাড়া ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পাহাড়তলি রেলওয়ে বাজার ব্যবসায়ী সমিতির আহ্বায়ক সাবের আহম্মেদ এবং জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য ওসমান খানকে। তাছাড়া মামলায় আরও ২৭ জনের নাম উল্লেখ এবং দেড়শ’ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (ডবলমুরিং জোন) আশিকুর রহমান বলেন, ‘মহিউদ্দিন সোহেল হত্যা মামলার আসামি ওসমান খানকে নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামিদেরও গ্রেফতারে অভিযান চলছে।’

প্রসঙ্গত, গত সোমবার সকালে পাহাড়তলী রেলওয়ে বাজারের ‘ব্যবসায়ী’ নামধারী কতিপয় মাদক বিক্রেতা চট্টগ্রামের রাজনীতির অতি পরিচিত মুখ মহিউদ্দিন সোহেল, যিনি সব সময় এলাকার মাদকের আখড়া নির্মূলসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত, ‘চাঁদাবাজ দাবি করে’ তার ওপর চড়াও হয়ে ধারালো অস্ত্রের ব্যবহারে তাকে হত্যা করে। যা পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

এদিকে ঘটনাটিকে বিকৃত করে দেশের গণমাধ্যমগুলোতে প্রচারিত হওয়ার পর চট্টগ্রামের রাজনৈতিক মহল এবং সুশীল সমাজ অত্যন্ত আশ্চর্যান্বিত হয়। যারা মহিউদ্দিন সোহেলকে ব্যক্তিগতভাবে চেনেন, তারা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানান, সোহেল চাঁদাবাজ- এটা কেউ বিশ্বাস করে না। মাদকের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে সোচ্চার এই তরুণের ওপর ক্ষুব্ধ একটা বিশেষ মহলই তাকে হত্যা করেছে।

একই কথা গত মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে নিহত সোহেলের গণমাধ্যমকে জানায়, ‘এলাকার মাদক ব্যবসায় বাধা দেওয়ায় পরিকল্পিতভাবে সোহেলকে হত্যা করা হয়েছে। পাহাড়তলী বাজারের মাদকের আখড়া ভেঙে দেওয়ায় স্থানীয় কাউন্সিলর সাবের আহম্মেদ ও জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি ওসমান খান নিহত সোহেলের ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন।’

সংবাদ সম্মেলনে সোহেলের পরিবারের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন একাত্তরের ঘাতক দালার নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক শওকত বাঙালি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি মো. গাফ্ফারী রাসেল প্রমুখ।

নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার মহিউদ্দিন সোহেলের ছোট ভাই শাকিরুল ইসলাম শিশির সময় এখন ডটকম এর প্রতিবেদককে বলেন, পাহাড়তলী বাজার ও আশেপাশের এলাকাকে মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত করতে কাজ শুরু করার কারণে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিনি কখনো কারও কাছ থেকে চাঁদা দাবি করেননি। তিনি রাজনীতির পাশাপাশি রেলওয়ের একজন প্রথম শ্রেণির ঠিকাদারও।

শিশির আরও বলেন, আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা, সোহেল ভাই আওয়ামী লীগ রাজনীতির সঙ্গে ছোটকাল থেকে জড়িত। তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক ও চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আমার ভাই যদি চাঁদাবাজি করতেন, সন্ত্রাসী হতেন তাহলে তার নামে মামলা ও জিডি থাকতো। কিন্তু তার নামে কোনো থানায় মামলা ও জিডি নেই। তাকে পরিকল্পিত হত্যা করা হয়েছে। এর প্রমাণ তার শরীরে ২৬টি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন।

শেয়ার করুন !
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!