সময় এখন ডেস্ক:
চর্মনাই মাহফিল থেকে ফিরে ডায়রিয়াজনিত কারণে শতাধিক রোগী মতলব আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্রে (আইসিডিডিআরবি) ভর্তি হয়েছেন। ৩ মার্চ মতলব আইসিডিডিআরবি হাসপাতাল ঘুরে এ তথ্যা পাওয়া গেছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে এ হাসপাতালে চর্মনাই থেকে ফিরে আসা ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হতে শুরু করে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই রোগীদের রেগুরার পেশেন্ট মনে করলেও পরবর্তী এ রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে।
কুমিল্লা, দাউদকান্দি, দেবিদ্বার, চাঁদপুর সদর, রায়পুর, লক্ষ্মীপুরসহ বিভিন্ন স্থান থেকে চর্মনাইর মাহফিল-ফেরত ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হতে শুরু করে। এ পর্যন্ত এ হাসপাতালে শতাধিক রোগী চিকিৎসা সেবা নিয়েছে। অনেকেই হাসপাতালে গুরুতর অবস্থায় ভর্তি হলেও মৃ’ত্যুর কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, ২৪, ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি কীর্তনখোলা নদীর তীরবর্তী চর্মনাইর মাদ্রাসা মাঠসহ বিস্তৃত এলাকায় এ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
মতলব আইসিডিডিআরবিতে ভর্তি আছেন- আ. লতিফ মুন্সী (৬৫), আ. রহিম (৩৫), শরীফ উল্লাহ মিজি (৬০), আবু তাহের (২৫), রেজাউল করিম (৬৫), নবীর গাজী (২৫) সহ অনেকেই।
এছাড়া সায়েদ আলী, জাহিদ, মমিন ও মো. রফিক এর নমুনা হতে কলেরার জীবাণু পাওয়া গেছে।
কুমিল্লা, দাউদকান্দি, দেবিদ্বার, চাঁদপুর সদর, রায়পুর, লক্ষ্মীপুর হতে আল আমিন, নূরুল হক, আব্দুল মালেক, আবুল ফারাহ, শরীফ, মো. শাকিল, আজাদ, আতিয়া হোসেন, ফিরোজ, সিদ্দিক মিয়াসহ শতাধিক রোগী চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন। গতকাল পর্যন্ত নতুন অনেকেই ভর্তি হয়েছেন। তবে তারা আশ’ঙ্কামুক্ত।
চর্মনাই মাহফিলের দীর্ঘ ১৬/১৭ বছরের খাদেম রেজাউল করিম (৬৫) জানান, তার বাড়ি ঢাকারগাঁও দাউদকান্দি কুমিল্লায়। মাহফিল থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি বাড়ি ফেরার সময় পেটে সমস্যা দেখা দেয়। বাড়ি যাওয়ার পর ডায়রিয়া ও বমি শুরু হয়ে অবস্থা বেগতিক দেখে গত ১ মার্চ মতলব আইসিডিডিআরবিতে ভর্তি হন।
তিনি জানান, বিগত বছরে তার কখনো ডায়রিয়া হয়নি। এ বছর মাহফিলে লোকের সমাগম বেশি হয়েছে, সেই সাথে দিনে গরম, রাতে ঠাণ্ডার কারণে এমন হতে পারে।
হাসপাতালে ভর্তি নবীন গাজী, লতিফ মুন্সী ও আ. রহিম জানান, চর্মনাই থেকে জ্বর, সর্দি নিয়ে বাড়িতে আসি। তারা ভিন্ন ভিন্ন কাফেলায় চর্মনাই গিয়েছে। ভিন্ন ভিন্নভাবে খাবার গ্রহণ করেছে। তবে প্রায় সকলেই একই খাবার পানি ব্যবহার করেছেন।
মতলব আইসিডিডিআরবির কর্মরত চিকিৎসক ডা. ফাতেমা জানান, তাদের মধ্যে অনেকেই কলেরা উপসর্গ নিয়ে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তাদেরকে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে। তারা সকলেই ভালো আছে। রোগীদের মধ্যে অনেকে ভালো হয়ে বাড়িতে চলে গেছেন।
আইসিডিডিআরবি মতলব শাখার জ্যেষ্ঠ চিকিৎসা কর্মকর্তা চন্দ্রশেখর দাস বলেন, দুষিত পানি পান ও জীবাণুযুক্ত খাবার গ্রহণই এর কারণ হতে পারে। সিরিয়াস ও মাইল্ড ডিহাইড্রেশন নিয়ে রোগীরা ভর্তি হয়েছে, তাদেরকে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে।
বর্তমানে সকলেই সুস্থ রয়েছেন। সুস্থ হয়ে অনেকেই বাড়ি ফিরে গেছেন। চাঁদপুর২৪।