প্রবাস ডেস্ক:
বাংলাদেশ দূতাবাস, টোকিও যথাযথ মর্যাদায় ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদযাপন করেছে।
রোববার (৭ মার্চ) সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠানের শুরুতে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ।
পরে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রদূত কর্তৃক জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয়াংশ হয় ডিজিটাল ফরম্যাটে, অনলাইন অনুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গবন্ধুসহ তাঁর পরিবারের সদস্যবৃন্দ এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের সব শহিদের আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
পরে দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। উল্লেখযোগ্যসংখ্যক জাপানি নাগরিক ও প্রবাসী বাংলাদেশি এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন।
স্বাগত বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ৭ মার্চ এক অনন্য ও উজ্জ্বল দিন।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বাঙালি জাতির মুক্তির কাণ্ডারি ও রাজনীতির মহাকবি বঙ্গবন্ধু রেসকোর্স ময়দানে স্বাধীনতার জন্য উম্মুখ বাংলাদেশের লাখো জনতাকে শুনিয়েছিলেন মুক্তির বাণী, প্রদান করেছিলেন মুক্তি সংগ্রামের সুস্পষ্ট নির্দেশনা। বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণ ছিল বাংলা ও বাঙালির প্রতি বঙ্গবন্ধুর হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা আর অকৃত্রিম দেশপ্রেমের স্বতঃস্ফূর্ত বহিঃপ্রকাশ।
রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, ৭ মার্চের ভাষণ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে মুক্তিকামি জনতা দেশ স্বাধীনের প্রস্তুতি নিয়েছিল এবং দীর্ঘ ৯ মাসের র’ক্তক্ষয়ী সশ’স্ত্র যু’দ্ধের মাধ্যমে পাকিস্থানি হা’নাদার বাহিনীকে পরাজিত করে ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করেছিল।
পরে উম্মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন জাপান প্রবাসী বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতারা। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের ওপর তথ্যচিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়।
এ ছাড়া বিকেলে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে জাপান বাংলাদেশ সোসাইটি (জেবিএস) ও বাংলাদেশ দূতাবাস, টোকিও যৌথ উদ্যোগে একটি অনলাইন আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্মভিত্তিক আলোচ্য বিষয়ে মূল উপস্থাপনা করেন জেবিএসের উপদেষ্টা এবং বিশিষ্ট সাংবাদিক মঞ্জুরুল হক।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন জেবিএসের প্রেসিডেন্ট সাবেক রাষ্ট্রদূত মাসাতো ওতানাবে, জেবিএসের পরিচালক ওসামু হায়াকাওয়া এবং রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জাপানি এবং দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন।
মঞ্জুরুল হক বঙ্গবন্ধুর জন্ম, শৈশব, শিক্ষা জীবন, রাজনীতিতে সংশ্লিষ্টতা, নেতৃত্বের গুণাবলি অর্জন, মানুষের জন্য কাজ করা এবং সর্বোপরি দেশের জন্য কঠিন সংগ্রাম, ত্যাগ, জেলবাস ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করেন। অ’ন্যায়-অত্যা’চারের কাছে মাথা নত না করে বঙ্গবন্ধু কীভাবে বাংলার জনগণকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র এনে দিয়েছিলেন এই আলোচনায় তা সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে।
রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ বলেন, এ বছর আমরা ‘মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী’ পালন করছি এমন সময়ে বঙ্গবন্ধুর জীবনভিত্তিক এই আলোচনা অত্যন্ত সময়োপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ শুধু বাংলাদেশের নয় বিশ্বের সকল নিপী’ড়িত-নির্যা’তিত মানুষকে স্বাধীনতা ও মুক্তির সংগ্রামে সর্বদা অনুপ্রাণিত করবে।
রাষ্ট্রদূত জেবিএস এবং অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সবাইকে ধন্যবাদ জানান। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জাপানি সাবটাইটেলসহ ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের ভিডিও প্রদর্শন শুরু হয়।
160