৭ মার্চের অনুষ্ঠানে ‘লুঙ্গি ড্যান্স’ দেয়া পুলিশদের সাজা চান বীর মুক্তিযোদ্ধারা

0

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদযাপন অনুষ্ঠানে লাউড স্পিকারে হিন্দি গান বাজিয়ে এর তালে তালে উদ্দাম নাচ পরিবেশনার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন স্থানীয় এবং দেশের বিভিন্ন জায়গার বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

ওই ঘটনার ৩ মিনিট ৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধম্যে ভাইরাল হয়েছে। তা দেখে রীতিমতো নি’ন্দার ঝড় বইছে ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী জনগণ এমন ঘটনায় রীতিমত হতবাক হয়ে গেছেন। প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের দায়িত্বশীলতা নিয়েও।

বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং সাধারণ মানুষ এমন ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের পর জড়িত পুলিশ সদস্য এবং অনুষ্ঠানের আয়োজকদের সাজা দাবি করেছেন।

ভিডিওতে ওই নাচে কয়েকজন পুলিশ সদস্যকেও অংশ নিতে দেখা গেছে। এতে অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে কী করে এই ঐতিহাসিক দিনে এমন বিকৃত ও অ-শোভনীয় আয়োজন করা হয়? সে প্রশ্ন সবার মুখে মুখে।

ভাইরাল সেই ভিডিওতে দেখা যায়, মঞ্চে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সম্বলিত ব্যানার। ওই ব্যানারের সামনে হিন্দিতে ‘লুঙ্গি ড্যান্স’ গানের তালে তালে নাচছেন যুবকরা। তাদের সঙ্গে দুই পুলিশ সদস্যও নাচছেন।

অন্য কোথাও খেয়াল নেই তাদের। যেন হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে আনন্দে আত্মহারা তারা। উদ্দাম নাচে বিভোর ওই দুই পুলিশ সদস্যকে আবার উৎসাহ যোগাচ্ছেন এক পুলিশ কর্মকর্তা! মঞ্চের সামনের সারিতে বসে হাততালি দিয়ে তাদের এ নাচ চালিয়ে যেতে উৎসাহ দিচ্ছেন তিনি।

স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রব বলেন, ৭ মার্চ আমাদের আবেগের জায়গা। পুরো জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল সেদিন দেশ স্বাধীন করার সংকল্প নিয়ে। এমন একটা অনুষ্ঠানে এই দৃশ্য দেখতে হবে, এটা স্বপ্নেও ভাবিনি। অনুষ্ঠানের আয়োজকরা স্বাধীনতাবিরোধীদের পক্ষের লোক কি না, সেটা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রহরে প্রাণ দিয়েছিলেন রাজারবাগের হাজারো বীর পুলিশ সদস্য। প্রথম শহিদ তারাই। সেই পুলিশ বিভাগের কয়েকজন সদস্য বাহিনীটির মান সম্মান ধূলায় মিশিয়ে দিয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত প্রত্যেকের সাজা হওয়া উচিৎ।

ঘটনাটি প্রসঙ্গে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ওই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন স্থানীয় বীল মুক্তিযোদ্ধারা। কিন্তু দুপুরের অনুষ্ঠান বিকেল গড়িয়ে গেলেও তা শুরু না হওয়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধারা ক্ষো’ভ প্রকাশ করেন এবং অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন।

এভাবে অতিথিদের সবাই একে একে চলে যান। তারা চলে যাওয়ার পর বঙ্গবন্ধুর ছবিযুক্ত ব্যানারসম্বলিত ওই মঞ্চেই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়। এমন দিবসে উ’চ্ছৃঙ্খল নাচ-গান পরিবেশনায় মাতেন কয়েকজন যুবক। তাদের সঙ্গে কয়েকজন পুলিশ সদস্যও যোগ দেন।

এ ব্যাপারে রাণীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাহিদ ইকবাল বলেন, ৭ মার্চ উপলক্ষে থানায় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। অনুষ্ঠানের শেষ দিকে স্থানীয় ছেলেরা মঞ্চে একটু নাচানাচি করেছে আর কি।

এমন একটা অনুষ্ঠানে পুলিশ সদস্যদের নাচের বিষয়টি কীভাবে দেখছেন- এমন প্রশ্নের উত্তর দেননি এই পুলিশ কর্মকর্তা।

শেয়ার করুন !
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!