বিশেষ প্রতিবেদন:
বিএনপিকে দুর্বল করতে এবং দলটিকে ভাঙতে কেন্দ্রীয় অনেক নেতাই চক্রান্ত করছেন বলে দাবি করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে দীর্ঘদিন সিনিয়র নেতারা ঐক্যবদ্ধ থাকলেও নেতৃত্ব এবং সংস্কার নিয়ে তাদের মধ্যে স্পষ্টতই ফাটল বাড়ছে।
মনোবল ভেঙে পড়া তৃণমূল নেতাদের মধ্যে এ নিয়ে ইতোমধ্যে দু’শ্চিন্তা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে নেতৃত্বের দ্ব’ন্দ্বে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুর সাথে প্রকাশ্যে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দ্বৈরথ ভাঙনের নির্দেশনা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দিচ্ছে।
৩ মার্চ এক আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু মির্জা ফখরুলের কারণে দলে ভাঙন দেখা দিয়েছে বলে মন্তব্য করে সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন।
দলীয় সূত্র বলছে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্য নেতৃত্বে পরিবর্তন চান। বিগত বছরগুলোতে অনুষ্ঠিত সকল নির্বাচনে ভরাডুবির পর রাজনীতিতে ফিরে আসতে দলীয় মহাসচিব পদে পরিবর্তনের কথাও আলোচনা চলছে। আর সেটা হতে পারে কাউন্সিলের মাধ্যমে।
তবে অধিকাংশ নীতিনির্ধারকরা খালেদা জিয়াকে মুক্ত না করে কাউন্সিল আয়োজনে অনিচ্ছুক। তাদের মতে, এই মুহূর্তে দলের প্রধান কাজ হলো খালেদা জিয়াকে কীভাবে জেল থেকে মুক্ত করা যায় সেই পথ খুঁজে বের করা। পাশাপাশি তৃণমূল পর্যায়ের নেতাদের কীভাবে পুনরায় সংগঠিত করা যায় সেদিকেও নজর দেওয়া।
এদিকে ড. কামাল হোসেন নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে থাকা এবং ২০ দলীয় জোটে জামায়াতকে রাখা নিয়েও বিএনপির সিনিয়র নেতাদের মধ্যে বিভাজন তৈরি হয়েছে।
এ অবস্থায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুর মতে, খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের অনুপস্থিতিতে সিনিয়র নেতাদের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝি দূর করতে এবং মনোবল ভেঙে পড়া নেতা-কর্মীদের জাগিয়ে তুলতে জোবাইদা রহমানের দলের দায়িত্ব নেওয়া উচিত। আর বেইমান মহাসচিবের নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ানো উচিত। তার জন্যই বিএনপির মতো দলে আজ ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে, যা মেনে নেয়া যায় না।
বিএনপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রতি ৩ বছর পর পর জাতীয় কাউন্সিল আয়োজনের কথা। কিন্তু অতীতে কাউন্সিল আয়োজনে বার বার দলটি নিয়ম ভেঙেছে। সর্বশেষ কাউন্সিল ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে খালেদা জিয়া দলের চেয়ারপারসন, তারেক রহমান সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এবং মির্জা ফখরুল মহাসচিব নির্বাচিত হন। আর মির্জা ফখরুলকে পদ থেকে সরাতে হলে অবশ্যই জাতীয় কাউন্সিল আয়োজন করতে হবে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও মওদুদ আহমেদসহ কয়েকজন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। কাউন্সিলের মাধ্যমে তারা মহাসচিবসহ অন্য কয়েকটি পদে পরিবর্তন চান। নিউজব্যাংক।